ঢাকা, বুধবার ০৯ জুলাই ২০২৫
২৫ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ০৯ জুলাই ২০২৫
২৫ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ মহররম ১৪৪৭
যেভাবে গল্প পড়ি ৫

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প ‘জলসত্র’

  • আহমাদ মোস্তফা কামাল
notdefined
notdefined
শেয়ার
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প ‘জলসত্র’

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোন গল্পটি নিয়ে কথা বলব সেই সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে মধুর এক সমস্যায় পড়া গেল। কত যে বিচিত্র বিষয় নিয়ে লিখেছেন তিনি; তাঁর বিখ্যাত ও আলোচিত গল্পের সংখ্যাও কম নয়, অথচ আমাকে বেছে নিতে হবে মাত্র একটি। অনেক ভেবে মনে হলো, তাঁর ততটা বিখ্যাত নয় ‘জলসত্র’ গল্পটি নিয়ে আলাপ করা যাক।

বিভূতিভূষণের পাঠকরা নিশ্চয়ই জানেন যে তাঁর গল্পের সবচেয়ে বড় গুণ এর সরলতা বা সহজতা।

কোনো আড়াল নেই, ভণিতা নেই, ভাষার মারপ্যাঁচ নেই, বাকচাতুর্য নেই, এমনকি চরিত্রগুলোও নিতান্তই আটপৌরে-চেনা-সাধারণ। তাঁর সব গল্পেই একটা আখ্যান থাকে, সেটি বলতে বলতেই খুব সহজভাবে জীবনের কোনো এক গূঢ় সত্যকে আবিষ্কার করে দেখান। ‘জলসত্র’ও তেমনই এক গল্প, যার শুরুটা এ রকম : ‘বৃদ্ধ মাধব শিরোমণি মশায় শিষ্য-বাড়ি যাচ্ছিলেন।’ ব্রাহ্মণ মাধব শিরোমণিকে শিষ্য-বাড়ি যেতে হয় জীবনের প্রয়োজনেই, ক্ষুণ্নিবৃত্তির ভিন্ন কোনো উপায় তার জানা নেই বলে।
অথচ যাওয়ার পথটি সহজ নয়, লেখক এক দুঃসহ পথযাত্রার বিবরণ দিয়েছেন বিস্তারিতভাবে : ‘বেলা তখন একটার কম নয়।... জ্যৈষ্ঠ মাসের খররৌদ্রে বালি গরম, একেবারে আগুন, মাঠের চারিধারে কোনোদিকে কোনো সবুজ গাছপালার চিহ্ন চোখে পড়ে না।... ব্রাহ্মণের কাপড়-চোপড় গরম হাওয়ায় আগুন হয়ে উঠলো, আর গায়ে রাখা যায় না। এক-একটা আগুনের ঝলকের মতো দমকা হাওয়ায় গরম বালি এসে তাঁর চোখে-মুখে তীক্ষ হয়ে বিঁধছিল।
... ব্রাহ্মণের ভয়ানক তৃষ্ণা পেল, গরম বাতাসে শরীরের জল যেন সব শুকিয়ে গেল, জিব জড়িয়ে আসতে লাগলো। তৃষ্ণা এত বেশি যে, সামনে ডোবার পাতাপচা কালো জল পেলেও তা তিনি আগ্রহের সঙ্গে পান করেন।... ব্রাহ্মণ ক্রমেই ঘেমে নেয়ে উঠতে লাগলেন। তাঁর কান দিয়ে, নাক দিয়ে নিঃশ্বাসে যেন আগুনের ঝলক বেরুতে লাগলো। জিব জোর করে চুষলেও তা থেকে যেন রস পাওয়া যায় না, ধুলোর মতো শুকনো।
চারিদিকে ধু ধু মাঠ খররৌদ্রে যেন নাচছে... চকচকে বালিরাশি রোদ ফিরিয়ে দিচ্ছে... অসহ্য পিপাসায় তিনি চোখে ধোঁয়া-ধোঁয়া দেখতে লাগলেন। মনে হতে লাগলো—একটু ঘন সবুজ মতো কোনো পাতাও যদি পাই তাহলে চুষি...’

এই বিবরণ থেকেই বোঝা যাচ্ছে—এ কোনো আনন্দভ্রমণ নয়; শখ করে নয়, ভালোবেসেও নয়, নিতান্তই প্রয়োজনে তাকে যেতে হচ্ছে। নবাবগঞ্জ থেকে রতনপুর পর্যন্ত সাড়ে চার ক্রোশ (প্রায় ৯ মাইল বা ১৫ কিলোমিটার) পথ তাঁকে যেতে হবে, যে পথ বৃক্ষছায়াহীন, জলহীন, জনমানবহীন। প্রচণ্ড গরমে আর তৃষ্ণায় অস্থির হয়ে তিনি শুধু জলের কথাই ভাবতে লাগলেন। কে না জানে, একবার যদি তৃষ্ণা পায় এবং তা মেটাবার মতো জল যদি না থাকে, তাহলে তৃষ্ণা শুধু বেড়েই চলে। তার তৃষ্ণাও বেড়ে চলল; কিন্তু ফিরে যাওয়ারও উপায় নেই, অনেকটা পথ যে চলে এসেছেন! ক্লান্ত-শ্রান্ত-বিধ্বস্ত অবস্থায় শুধু মনের জোরে পথ চলতে চলতে অনেক দূরে একটা বটগাছ দেখে তাঁর মনে একটা পুকুর থাকার সম্ভাবনা নিদেনপক্ষে গাছের ছায়াটুকুর আশ্রয় কাম্য হয়ে উঠল। একসময় তিনি বটগাছের কাছে পৌঁছে দেখলেন, সেখানে একটা জলসত্র—‘চার-পাঁচটা নূতন জালায় জল, এক পাশে একরাশি কচি ডাব! এক ধামা ভিজে ছোলা, একটা বড় জায়গায় অনেকটা নতুন আখের গুড়, একটা ছোট ধামায় আধধামা বাতাসা!’ রৌদ্রদগ্ধ ধু ধু প্রান্তরে এ রকম চমৎকার ব্যবস্থা থাকবে কেন ভেবে হয়তো অবাক হবেন এ-কালের পাঠকরা; কিন্তু তখনকার দিনে পথচারীদের সেবায় কোনো কোনো মহত্প্রাণ সচ্ছল ব্যক্তি এ রকম আয়োজন করে রাখতেন। তো, জলসত্রের স্বেচ্ছাসেবীরা ব্রাহ্মণকে যথেষ্ট খাতির করল, জানাল—‘ভালো সন্দেশ আছে ব্রাহ্মণদের জন্যে আনা, সেবা করে একটু জল খান, এই রোদে এখন আর যাবেন না—বেলা পড়ুক।’ কিন্তু তিনি যে ব্রাহ্মণ, যেখানে-সেখানে তো খেতে পারেন না! জাতপাতের একটা ব্যাপার তো আছে! তৃষ্ণাকাতর হয়েও তিনি জিজ্ঞেস করে জেনে নিলেন—এ জলসত্র যাঁরা প্রতিষ্ঠা করেছেন তাঁরা বংশে ‘বিশ্বেস’ আর জাতে ‘কলু’। ব্রাহ্মণ দমে গেলেন—‘সর্বনাশ! নতুন মাটির জালাভর্তি জল ও কচি ডাবের রাশি দেখে পিপাসার্ত শিরোমণি মশায় যে আনন্দ অনুভব করেছিলেন, তা তাঁর একমুহূর্তে কর্পূরের মতো উবে গেল। কলুর দেওয়া জলসত্রে তিনি কি করে জল খাবেন? তিনি নিজে এবং তাঁর বংশে চিরদিন অশূদ্রে প্রতিগ্রাহী; আজ কি তিনি—ওঃ!’

পিপাসায় একটু আগেই যিনি মরতে বসেছিলেন তাঁর জন্য এই চিন্তা কি স্বাভাবিক? আমাদের ‘আধুনিক’ চোখে স্বাভাবিক মনে না হলেও তখনকার দিনে স্বাভাবিকই ছিল। জাতপাতের ভেদাভেদ, ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ, এমনকি ছোঁয়াছুঁয়ির ঝামেলায় এ অঞ্চলে অনেক রক্তপাতও হয়েছে, সে কথা ভুলে গেলে চলবে না। আর কথাসাহিত্যের একটা বড় কাজ—গল্প বলার ছলে সমকালীন বাস্তবতা আর সামাজিক ইতিহাসকে ধরে রাখা। এখানেও সেটিই ঘটেছে। তো, ব্রাহ্মণ জলপান থেকে বিরত থেকে জলসত্র প্রতিষ্ঠার গল্প শুনতে লাগলেন। তারাচাঁদ বিশ্বাস যখন ছোট তখন তার বাপ মারা যায়, একটা ছোট বোন ছাড়া তার কেউ ছিল না। বাজারে এটা-ওটা বিক্রি করে তাদের সংসার চলত। এক ‘বোশেখ মাসের মাঝামাঝি তারাচাঁদ ছোট বোনকে নিয়ে নবাবগঞ্জের বাজারে তালশাঁস বিক্রি করতে গিয়েছিল।’ ফেরার সময় সে আর বোন সেই অবস্থায় পড়েছিল, একটু আগে ব্রাহ্মণ যে অবস্থা পেরিয়ে এসেছেন। ছোট্ট বোনটি তৃষ্ণায় কাতর হয়ে এলিয়ে পড়েছিল, এই বটগাছের তলায় তখন কোনো জলসত্র ছিল না, বোনকে তবু এখানে রেখে আধক্রোশ দূরে কৈবর্তপাড়া থেকে এক ঘটি জল এনে দেখে, বোনটা মরে পড়ে আছে, তার মুখে একটা কচুর ডগা! তেষ্টায় যন্ত্রণায় মেয়েটা বুনো কচুর ডগা মুখে করে তার রস চুষেছিল।

তারাচাঁদ বিশ্বাস পরে অবস্থাপন্ন হয়েছিল আর তার বোন স্বপ্নে দেখা দিয়ে এই বটগাছতলায় জলসত্র প্রতিষ্ঠা করতে বলেছিল। স্বেচ্ছাসেবীরা বলতে থাকে : ... এমনও শুনেছি যে মাঠের মধ্যে জলতেষ্টায় বেঘোরে পড়ে ঘুরপাক খাচ্ছে, এমন লোক নাকি কেউ কেউ দেখেছে একটা ছোট মেয়ে মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে বলছে, ‘ওগো আমি জল দেব, তুমি আমার সঙ্গে এসো।’

গল্প শুনতে শুনতে ব্রাহ্মণ দেখতে লাগলেন, ধর্ম-বর্ণ-বয়স-পেশা-নির্বিশেষে কত লোক এই জলসত্রে এসে জল খাচ্ছে, ডাব খাচ্ছে, ছোলা-গুড়-বাতাসা খাচ্ছে! যেন এক অদৃশ্য স্নেহময়ী তার মমতা আঁচল বিছিয়ে দিয়েছে এখানে, রৌদ্রদগ্ধ মানুষের শান্তির জন্য। তাঁর মন দ্রবীভূত হয়ে গেল। মনে হলো : ‘বিশ বছর আগে, তাঁর আট বছরের পাগলি মেয়ে উমার মতোই ছোট একটি মেয়ে এই বটতলায় অসহ্য পিপাসায় জল অভাবে বুনো কচুর ডাঁটার কচু রস চুষেছিল, আজ তারই স্নেহ করুণা এই বিরাট বটগাছটার নিবিড় ডালপালায় বেড়ে উঠে এই জলকষ্টপীড়িত পল্লী-প্রান্তরের একধারে পিপাসার্ত পথিকদের আশ্রয় তৈরি করেছে। এরই তলায় আজ বিশ বছর ধরে সে মঙ্গলরূপিণী জগদ্ধাত্রীর মতো দশ হাত বাড়িয়ে প্রতি নিদাঘ-মধ্যাহ্নে কত পিপাসাতুর পল্লী-পথিককে জল জোগাচ্ছে।... তার পৃথিবীর বালিকাজীবনের ইতিহাস সে ভোলেনি।’

নিজের কন্যার কথা মনে পড়ায় বাৎসল্যরস-স্নেহ-মমতা-ভালোবাসায় ছেয়ে গেল ব্রাহ্মণের মন; অতঃপর, যে-লোকটা জল দিচ্ছিল, শিরোমণি মশায় তাকে বললেন, ‘ওহে বাপু, তোমার ওই বড়ো ঘটিটা বেশ করে মেজে এক ঘটি জল আমায় দাও, আর ইয়ে, ব্রাহ্মণের জন্য আনা সন্দেশ আছে বললে না?’

গল্পের এই শেষাংশে এসে মনে হয়, জলসত্র আসলে আর কিছু নয়, এ এমন এক গভীর ভালোবাসার আহ্বান, যে ভালোবাসায় ধুয়ে-মুছে যায় সমস্ত সংস্কার, অন্ধ বিশ্বাস, ধর্ম-বর্ণ-জাতপাত-শ্রেণি-পেশার ভেদজ্ঞান আর আত্মগর্ব-অহংকার।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

পিয়াস মজিদ

খুচরা আষাঢ়

শেয়ার
খুচরা আষাঢ়

আসকাল আজ

মেঘের মনের গায়ে

কেউ কাক

চুপচাপ।

ভিজে যেতে চেয়ে আমি

বহুকালের শুকনো সরোদ;

বাজনারা ঝরে গিয়ে

পাহাড়ের চুল চুইয়ে।

আকাশ বাজারের ব্যাগ হাতে ফিরবে ঘরে।

কেনাবেচার রিমঝিম শব্দে বধির মাটিতে

থেকে থেকে ঠিক তোমার মতো

প্রয়াত জ্বরেদের স্মৃতি মনে আসে!

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
নাসির আহমেদ

পাঁচটি আঙুল

শেয়ার
পাঁচটি আঙুল

কিছুই বলোনি, শুধু রুপালি আঙুল, নখ-ছবি

পাঠিয়ে দিয়েছ এই লেখার সম্মানে। মুগ্ধ কবি!

অনামিকা থেকে কনিষ্ঠায় দ্যুতিময় রাঙা হাত

হঠাৎ জানাল যেন প্রথম দিনের সুপ্রভাত!

 

তীব্র, তীক্ষ এই মুগ্ধ মৌন অনুভব

কতটা প্রকাশযোগ্য! ভাষায় কতটা তাকে ধারণ সম্ভব!

 

বর্ষার বৃষ্টির মতো রুপালি সৌন্দর্যে রিমঝিম

সবুজ পাতায় জ্বলে পাঁচটি আঙুল। ব্যাখ্যাও সম্ভব নয় কবিতার থিম।

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
দিলারা মেসবাহ

পাথরে ফুটুক ফুল

শেয়ার
পাথরে ফুটুক ফুল

তুমি সেই প্রত্নপাথর!

মরমি সান্নিধ্যের সাধন ভজন

‘সুপ্রভাত’ বলার সাধুবাদ, শেখোনি কস্মিন।

তুমি এক অচিন পাথর

দেখো আজ অনামিকায় ওপাল ঝলক

খোঁপায় তারার ফুল!

তুমি সেই অন্ধ পাথর।

দেখো আজ জোড়া চোখ বিহ্বল বিজন

অপার মায়ার বশে বেদনাবিধুর।

তুমি সেই নির্বোধ পাথর,

শুনলে না কলকণ্ঠ পাখির গোপন।

তুমি এক পাইথন শীতনিদ্রা স্বভাব

তুমি সেই প্রত্নপাথর।

খোলস খসাও—

দেখাও ফণার সার্কাস!

চেয়ে দেখো হাত দুটো বিজন ব্যাকুল

জেগে ওঠো, পাথরে ফোটাও ফুল।

 

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
প্রদর্শনী

গ্যালারি কায়ায় মাস্টার শিল্পীদের কাজ

    মোহাম্মদ আসাদ
শেয়ার
গ্যালারি কায়ায় মাস্টার শিল্পীদের কাজ
শিরোনামহীন ২। শিল্পী : কামরুল হাসান

গ্যালারি কায়া মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে ২১ বছর ধরে। প্রতিনিয়ত উপহার দিচ্ছে বৈচিত্র্যময় শিল্পকলা প্রদর্শনীর। প্রায় আট দশকের দেশের শিল্পকলার সংগ্রহ নিয়ে এবারের প্রদর্শনী। দেশের চারুকলা শিক্ষার শুরুটা হয় ১৯৪৮ সালে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের হাত ধরে।

শিল্পাচার্য ও তাঁর সঙ্গে যাঁরা যোগ দিয়েছিলেন এই প্রতিষ্ঠানে, তাঁদের ধরে নেওয়া হয় প্রথম প্রজন্মের শিল্পী। প্রথম প্রজন্মের শিল্পী কামরুল হাসানের কাজ রয়েছে এই প্রদর্শনীতে। রয়েছে দ্বিতীয় প্রজন্মের শিল্পী মোহাম্মদ কিবরিয়া, মুর্তজা বশীর, কাইয়ুম চৌধুরী, দেবদাস চক্রবর্তী, কাজী আব্দুল বাসেতের কাজ। এই শিল্পীরাই দেশের শিল্পকলাকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছেন।

গ্যালারি কায়ায় মাস্টার শিল্পীদের কাজ

ঈদমেলা থেকে বাড়ি ফেরা।   শিল্পী : মুর্তজা বশীর

আরো আছে সমরজিৎ রায়চৌধুরী, হাশেম খান, রফিকুন নবী, হামিদুজ্জামান খান, আবদুস শাকুর শাহ, মাহমুদুল হক, আবুল বারক আলভী, মোহাম্মদ ইউনুস, জামাল আহমেদ, চন্দ্র শেখর দে, মোস্তাফিজুল হক, রণজিৎ দাস, রতন মজুমদার, ফরিদা জামান, কনক চাঁপা চাকমা, শেখ আফজাল, আহমেদ শামসুদ্দোহা, শিশির ভট্টাচার্য্য, মোহাম্মদ ইকবাল, গৌতম চক্রবর্তীর মতো গুরুত্বপূর্ণ শিল্পীদের কাজ। প্রদর্শনীতে রয়েছে প্রতিশ্রতিশীল শিল্পীদের কাজও। গৌতম চক্রবর্তী গ্যালারিটির প্রতিষ্ঠাতা।

দ্বিতীয় প্রজন্মের শিল্পী দেবদাস চক্রবর্তীর সুযোগ্য সন্তান তিনি। দেবদাস চক্রবর্তী এই দেশের শিল্পীদের কাছের মানুষ ছিলেন।

প্রদর্শনীতে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ মুর্তজা বশীরের ‘ঈদমেলা থেকে বাড়ি ফেরা’। ১৯৫৬ সালে তিনি এই ছবিটি এঁকেছেন ছাত্রজীবনে। রাজধানীর চকবাজারের ঈদমেলার ঐতিহ্য আছে।

পুতুল-ঘোড়া কিনে আনা শিশুদের মধ্যে সম্ভ্রান্তর একটা ছাপ আছে। তাঁর আরেকটি ছবি ‘রক্তাক্ত একুশ’। এই লিনোকাট প্রিন্টটি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের প্রথম ছবি।

কামরুল হাসানের প্রিন্ট দুটি দেখে ভালো লাগবে। কাইয়ুম চৌধুরীর একটি মিছিলের ছবি। ব্যানারে লেখা ‘নিপাত যাক’। কাজী আবদুল বাসেতের দুই বৃদ্ধার গল্প বলা। এই প্রদর্শনীতে একটি কাজ আছে মাহমুদুল হকের। মাহমুদুল হক গুরুত্বপূর্ণ শিল্পী। তিনি জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০২২ সালে তিনি নীরবে চলে যান আমাদের ছেড়ে।

২১ বছরের গ্যালারি কায়া দেখাচ্ছে প্রায় আট দশকের শিল্পকলা ইতিহাস। এই গুরুত্বপূর্ণ প্রদর্শনীতে শিল্পাচার্যের একটি কাজ থাকলে ষোলো কলা পূর্ণ হতো। আবার যা আছে তা-ও কম কিসের। প্রদর্শনী চলবে ১২ জুলাই পর্যন্ত।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ