প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিল্পীদের কাজ শিল্পপ্রেমীদের নজরে আসে। বিগত শতাব্দীতে এই গুরুদায়িত্ব শিল্পকলা একাডেমি পালন করত। ছিল কয়েকটি গ্যালারি। সেখানে বিশেষ কিছু শিল্পীই প্রদর্শনীর সুযোগ পেতেন।
অবশ্য সেই সময়ে শিল্পীর সংখ্যাও ছিল কম। এই শতাব্দীর শুরু থেকেই শিল্পকর্ম প্রদর্শনের ব্যাপকতা দেখা যায়। নানা রকম গ্যালারি ও সেন্টারে অনেকে নিজ দায়িত্বে একক প্রদর্শনী করছেন। হাজারো বৈচিত্র্যময় কাজ দেখতে পারছেন শিল্পকলাপ্রেমীরা। প্রদর্শনীর ব্যয়বাহুল্যের কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিল্পীর গুরুত্বপূর্ণ সৃষ্টি দৃষ্টির আড়ালে থেকে যায়। সম্প্রতি হয়ে যাওয়া আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ লা গ্যালারিতে ‘এস্থিক’ বা নান্দনিকতা শিরোনামে ভিন্ন এক প্রদর্শনীর কথা বলছি। ২৮ জন শিল্পীর ৩৩টি কাজ নিয়ে এই আয়োজন। শিল্পীরা সবাই প্রায় এই সময়ের শ্রেষ্ঠ কাজ উপহার দিয়ে চলেছেন। বৈচিত্র্যপূর্ণ কাজের বিশাল সমাহারে প্রদর্শনীটি আলোকিত হয়ে উঠেছিল।
এই প্রদর্শনীর শিল্পীরা হলেন আবদুল্লাহ আল বশির, আব্দুস সাত্তার তৌফিক, আল-আখির সরকার, আনজুম সুলায়মান, অনুকূল চন্দ্র মজুমদার, আশফাক বাপ্পী, বিপ্লব চক্রবর্তী, বিশ্বজিৎ গোস্বামী, কে জামান শিমুল, কামাল উদ্দিন, কামরুজ্জোহা, কাজী শহীদ, লুত্ফা মাহমুদা, মো. জিয়াউর রহমান, মনজুর রশিদ, মুনতাসির মঈন, নাঈম জামান, নাজিয়া আহমেদ, প্রদ্যুৎ কুমার দাস, রত্নেশ্বর সূত্রধর, রেজাউর রহমান, রুহুল আমিন তারেক, এস এম সাহা, আনিসুজ্জামান ফারুক, সৌরভ চৌধুরী, সুমন ওয়াহেদ, সৈয়দ গোলাম দস্তগীর, ত্রিবেদী গোপাল চন্দ্র গুপ্ত।
বিশাল এই প্রদর্শনীর কোনো আয়োজক প্রতিষ্ঠান নেই। নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে প্রদর্শনীটির শুরু। তার পরও একজন তো দায়িত্বভার বহন করেছেন।
তিনি হলেন মনজুর রশিদ। তিনি বলেন, ‘একাকিত্বের গানে নির্মল আনন্দ আছে, কিন্তু কখনো কখনো তা একা করে ফেলতেও পারে শ্রোতাকে! দিনশেষে মানুষ মানুষের সাহচর্যই চায় সম্ভবত! একসঙ্গে অনেকে মিলে চলাটা আনন্দের, ঘটে প্রাণের সঞ্চালন! জীবনকে আমরা সহজ সুন্দর করেই উদযাপন করতে চাই। এই ২৮ জন শিল্পীকে একটি স্রোতে এনে দারুণ কিছু করার প্রয়াস মাত্র। ভবিষ্যতেও এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে আশা করি।’
কোনো বাণিজ্যিক চিন্তা ছাড়া এমন সুন্দর আয়োজনে শিল্পীরা যেমন উৎসাহিত হবেন, শিল্পকলাপ্রেমীরাও একই সঙ্গে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ দেখতে পারবেন।