ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১০ জুলাই ২০২৫
২৬ আষাঢ় ১৪৩২, ১৪ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১০ জুলাই ২০২৫
২৬ আষাঢ় ১৪৩২, ১৪ মহররম ১৪৪৭

বিশ্বসাহিত্য

রিয়াজ মিলটন
রিয়াজ মিলটন
শেয়ার
বিশ্বসাহিত্য
পুরস্কারের চেক হাতে মুরাত ইসিক (এএফপি)

ডাচ্ সাহিত্যের পুরস্কার মুরাত ইসিকের

লিবরিস প্রাইজ নেদারল্যান্ডসের মর্যাদাপূর্ণ সাহিত্য পুরস্কার। ম্যান বুকার পুরস্কারের ছাঁচে ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ পুরস্কার ১৯৯৪ সাল থেকে উপন্যাসের ওপর দেওয়া হচ্ছে। দেশটির বুকসেলারদের অ্যাসোসিয়েশন এর আয়োজক। ৫০ হাজার ইউরো অর্থমূল্যের পুরস্কারটি এ বছর পেয়েছেন ৪০ বছর বয়সী তুর্কি বংশোদ্ভূত লেখক মুরাত ইসিক।

তাঁর পুরস্কারজয়ী উপন্যাসটির নাম উয়িস ওনজিচত্বার (বি ইনভিজিবল)। আশির দশকে আমস্টারডামের কাছে ব্যায়েলমারমিয়ারে এক তুর্কি বালকের বেড়ে ওঠার কাহিনি এ উপন্যাস। উপন্যাসে মূলত নিজের কথাই বলেছেন মুরাত। কারণ তাঁর ছেলেবেলা কেটেছে ওই শহরটিতে।
পুরস্কারপ্রাপ্তির প্রতিক্রিয়ায় মুরাত বলেন, ‘এ পুরস্কার আমি ব্যায়েলমারমিয়ারকে উৎসর্গ করলাম, উৎসর্গ করলাম আমার ছেলেবেলার প্রতিবেশীদের। জায়গাটি কখনো আনন্দময় ও প্রাণবন্ত, কখনো ধূসর ও নিষ্প্রাণ; কিন্তু এটাই আমার উপন্যাসের একটি প্রধান চরিত্র। আমার স্বপ্নের জায়গা, যা কখনোই আমি ত্যাগ করিনি।’ মুরাতের প্রথম উপন্যাস ভারলোরেন গ্রন্ড (লস্ট গ্রাউন্ড) প্রকাশিত হয় ২০১২ সালে।
এতে তিনি তুরস্কের পূর্বাঞ্চলে বসবাসকারী তাঁর দাদা-দাদির মা-বাবার দৃষ্টিকোণ থেকে পারিবারিক ইতিহাস ও তুরস্কের সমাজব্যবস্থার চিত্র তুলে ধরেছেন। বিচারকরা বলেন, ‘এ গল্পে লেখক আমাদের সাম্প্রতিক ইতিহাসে একটি পরিবারের দাঁড়ানোর মতো মাটি খুঁজে পাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ও গম্ভীর গল্প লিখেছেন।’ গত বছর লিবরিস প্রাইজ পান আলফ্রেড বারনি ‘দি ইন্টারপ্রেটর অব জাভা’ উপন্যাসের জন্য।

 

ভাহনি কাপিলদেও

ফরোয়ার্ড প্রাইজের সংক্ষিপ্ত তালিকা

ব্রিটেনের ফরোয়ার্ড প্রাইজের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সম্প্রতি। বেস্ট কালেকশন, বেস্ট ফার্স্ট কালেকশন ও বেস্ট সিঙ্গল পোয়েম—এই তিন ক্যাটাগরিতে প্রতিবছর ফরোয়ার্ড প্রাইজ দেওয়া হয়।

১০ হাজার পাউন্ড অর্থমূল্যের বেস্ট কালেকশন ক্যাটাগরির জন্য মনোনীত সংক্ষিপ্ত তালিকার বইগুলো হচ্ছে—ভাহনি কাপিলদেওর ‘ভেনাস অ্যাজ আ বিয়ার’, জে ও মরগানের ‘অ্যাসিউর্যানসেস’, টবি মার্টিনেজ ডি লাস রিভাসের ‘ব্ল্যাক সান’, ড্যানেজ স্মিথের “ডোন’ট কল আস ডেথ” এবং ট্রেসি কে স্মিথের ‘ওয়েড ইন দ্য ওয়াটার’। পাঁচ হাজার পাউন্ড অর্থমূল্যের বেস্ট ফার্স্ট কালেকশন ক্যাটাগরির ফেলিক্স ডেনিস প্রাইজের জন্য মনোনীত সংক্ষিপ্ত তালিকার বইগুলো হচ্ছে—কাভেহ আকবরের ‘কলিং আ উলফ আ উলফ’, অ্যাবিগেইল প্যারির ‘জিংকস’, ফিবি পাওয়ারের ‘শ্রাইনস অব আপার অস্ট্রিয়া’, শিবানি রামলোচনের ‘এভরিওয়ান নোজ আই অ্যাম আ হোনটিং’ এবং রিচার্ড স্কটের ‘সোহো’। আর এক হাজার পাউন্ড অর্থমূল্যের বেস্ট সিঙ্গল পোয়েম ক্যাটাগরির জন্য মনোনীত কবিতাগুলো হচ্ছে—ফিওনা বেনসনের ‘রুইনস’, লিজ বেরির ‘দ্য রিপাবলিক অব মাদারহুড’, সুমিত্রা চক্রবর্তীর ‘অ্যান ডেথ ডিমান্ডস আ লেবার’, জোরি গ্রাহামের ‘ট্রি’ এবং উইল হ্যারিসের ‘সেই’। ১৯৯২ সালে প্রবর্তিত কবিতার এ পুরস্কার জয়ের তালিকায় ডন প্যাটারসন, শ্যন ও’ব্রিয়েনের মতো লেখকরা রয়েছে। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর লন্ডনের সাউথব্যাংক সেন্টারে রয়াল ফেস্টিভাল সেন্টারে অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

 

ওনদােজ পুরস্কার পেলেন প্যাসকেল

প্যারিসে জন্ম নেওয়া ব্রিটিশ কবি প্যাসকেল পেটিট জিতে নিয়েছেন এ বছরের ওনদােজ পুরস্কার। তাঁর পুরস্কারজয়ী বইটির নাম ‘মামা অ্যামাজনিকা’। যুক্তরাজ্যের মর্যাদাপূর্ণ এ পুরস্কার প্রতিবছর দিয়ে থাকে রয়াল সোসাইটি অব লিটারেচার। এর অর্থমূল্য ১০ হাজার পাউন্ড। কোনো স্থানের প্রাণবন্ত চিত্র উঠে আসা নন-ফিকশন, ফিকশন ও কবিতার বই এ পুরস্কারের জন্য প্রযোজ্য। বিচারকদের মতে, এ বইয়ের কবিতায় প্যাসকেল হাসপাতালে অসুস্থ মায়ের সাইকিয়াট্রিক ওয়ার্ডের সঙ্গে আমাজন রেইন ফরেস্টের চমৎকার মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। এ পর্যন্ত প্যাসকেলের সাতটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। পেয়েছেন বেশ কয়েকটি পুরস্কার। চারটি বই মর্যাদাপূর্ণ টিএস এলিয়ট পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা করে নেয়। এ বছর ওনদােজ পুরস্কারের জন্য মনোনীত সংক্ষিপ্ত তালিকার বইগুলো ছিল—কুশানাভা চৌধুরীর ‘দি এপিক সিটি : দ্য ওয়ার্ল্ড অন দ্য স্ট্রিটস অব ক্যালকাটা’, লুসি হিউজ-হ্যালেটের ‘পিকিউলিয়ার গ্রাউন্ড’, কাপকা কাসাবোভার ‘বর্ডার’, ফিওনা মোজলের উপন্যাস ‘এলমেট’, শিয়াওলু গুয়োর স্মৃতিকথা ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন দি ইস্ট’। এর মধ্যে ফিওনার বইটি বুকার পুরস্কারের জন্য মনোনীত বইয়ের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছে। এর আগে ওনদােজ পুরস্কার পেয়েছেন রাশিয়ার প্রেক্ষাপটে লেখা উপন্যাস “দ্য পিপল’স অ্যাক্ট অব লাভ”-এর জন্য জেমস মিক, স্মৃতিকথা ‘দ্য হেয়ার উইথ অ্যাম্বার আইজ’-এর জন্য এডমুন্ড ডি ওয়াল প্রমুখ।

 

 

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

পিয়াস মজিদ

খুচরা আষাঢ়

শেয়ার
খুচরা আষাঢ়

আসকাল আজ

মেঘের মনের গায়ে

কেউ কাক

চুপচাপ।

ভিজে যেতে চেয়ে আমি

বহুকালের শুকনো সরোদ;

বাজনারা ঝরে গিয়ে

পাহাড়ের চুল চুইয়ে।

আকাশ বাজারের ব্যাগ হাতে ফিরবে ঘরে।

কেনাবেচার রিমঝিম শব্দে বধির মাটিতে

থেকে থেকে ঠিক তোমার মতো

প্রয়াত জ্বরেদের স্মৃতি মনে আসে!

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
নাসির আহমেদ

পাঁচটি আঙুল

শেয়ার
পাঁচটি আঙুল

কিছুই বলোনি, শুধু রুপালি আঙুল, নখ-ছবি

পাঠিয়ে দিয়েছ এই লেখার সম্মানে। মুগ্ধ কবি!

অনামিকা থেকে কনিষ্ঠায় দ্যুতিময় রাঙা হাত

হঠাৎ জানাল যেন প্রথম দিনের সুপ্রভাত!

 

তীব্র, তীক্ষ এই মুগ্ধ মৌন অনুভব

কতটা প্রকাশযোগ্য! ভাষায় কতটা তাকে ধারণ সম্ভব!

 

বর্ষার বৃষ্টির মতো রুপালি সৌন্দর্যে রিমঝিম

সবুজ পাতায় জ্বলে পাঁচটি আঙুল। ব্যাখ্যাও সম্ভব নয় কবিতার থিম।

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
দিলারা মেসবাহ

পাথরে ফুটুক ফুল

শেয়ার
পাথরে ফুটুক ফুল

তুমি সেই প্রত্নপাথর!

মরমি সান্নিধ্যের সাধন ভজন

‘সুপ্রভাত’ বলার সাধুবাদ, শেখোনি কস্মিন।

তুমি এক অচিন পাথর

দেখো আজ অনামিকায় ওপাল ঝলক

খোঁপায় তারার ফুল!

তুমি সেই অন্ধ পাথর।

দেখো আজ জোড়া চোখ বিহ্বল বিজন

অপার মায়ার বশে বেদনাবিধুর।

তুমি সেই নির্বোধ পাথর,

শুনলে না কলকণ্ঠ পাখির গোপন।

তুমি এক পাইথন শীতনিদ্রা স্বভাব

তুমি সেই প্রত্নপাথর।

খোলস খসাও—

দেখাও ফণার সার্কাস!

চেয়ে দেখো হাত দুটো বিজন ব্যাকুল

জেগে ওঠো, পাথরে ফোটাও ফুল।

 

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
প্রদর্শনী

গ্যালারি কায়ায় মাস্টার শিল্পীদের কাজ

    মোহাম্মদ আসাদ
শেয়ার
গ্যালারি কায়ায় মাস্টার শিল্পীদের কাজ
শিরোনামহীন ২। শিল্পী : কামরুল হাসান

গ্যালারি কায়া মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে ২১ বছর ধরে। প্রতিনিয়ত উপহার দিচ্ছে বৈচিত্র্যময় শিল্পকলা প্রদর্শনীর। প্রায় আট দশকের দেশের শিল্পকলার সংগ্রহ নিয়ে এবারের প্রদর্শনী। দেশের চারুকলা শিক্ষার শুরুটা হয় ১৯৪৮ সালে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের হাত ধরে।

শিল্পাচার্য ও তাঁর সঙ্গে যাঁরা যোগ দিয়েছিলেন এই প্রতিষ্ঠানে, তাঁদের ধরে নেওয়া হয় প্রথম প্রজন্মের শিল্পী। প্রথম প্রজন্মের শিল্পী কামরুল হাসানের কাজ রয়েছে এই প্রদর্শনীতে। রয়েছে দ্বিতীয় প্রজন্মের শিল্পী মোহাম্মদ কিবরিয়া, মুর্তজা বশীর, কাইয়ুম চৌধুরী, দেবদাস চক্রবর্তী, কাজী আব্দুল বাসেতের কাজ। এই শিল্পীরাই দেশের শিল্পকলাকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছেন।

গ্যালারি কায়ায় মাস্টার শিল্পীদের কাজ

ঈদমেলা থেকে বাড়ি ফেরা।   শিল্পী : মুর্তজা বশীর

আরো আছে সমরজিৎ রায়চৌধুরী, হাশেম খান, রফিকুন নবী, হামিদুজ্জামান খান, আবদুস শাকুর শাহ, মাহমুদুল হক, আবুল বারক আলভী, মোহাম্মদ ইউনুস, জামাল আহমেদ, চন্দ্র শেখর দে, মোস্তাফিজুল হক, রণজিৎ দাস, রতন মজুমদার, ফরিদা জামান, কনক চাঁপা চাকমা, শেখ আফজাল, আহমেদ শামসুদ্দোহা, শিশির ভট্টাচার্য্য, মোহাম্মদ ইকবাল, গৌতম চক্রবর্তীর মতো গুরুত্বপূর্ণ শিল্পীদের কাজ। প্রদর্শনীতে রয়েছে প্রতিশ্রতিশীল শিল্পীদের কাজও। গৌতম চক্রবর্তী গ্যালারিটির প্রতিষ্ঠাতা।

দ্বিতীয় প্রজন্মের শিল্পী দেবদাস চক্রবর্তীর সুযোগ্য সন্তান তিনি। দেবদাস চক্রবর্তী এই দেশের শিল্পীদের কাছের মানুষ ছিলেন।

প্রদর্শনীতে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ মুর্তজা বশীরের ‘ঈদমেলা থেকে বাড়ি ফেরা’। ১৯৫৬ সালে তিনি এই ছবিটি এঁকেছেন ছাত্রজীবনে। রাজধানীর চকবাজারের ঈদমেলার ঐতিহ্য আছে।

পুতুল-ঘোড়া কিনে আনা শিশুদের মধ্যে সম্ভ্রান্তর একটা ছাপ আছে। তাঁর আরেকটি ছবি ‘রক্তাক্ত একুশ’। এই লিনোকাট প্রিন্টটি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের প্রথম ছবি।

কামরুল হাসানের প্রিন্ট দুটি দেখে ভালো লাগবে। কাইয়ুম চৌধুরীর একটি মিছিলের ছবি। ব্যানারে লেখা ‘নিপাত যাক’। কাজী আবদুল বাসেতের দুই বৃদ্ধার গল্প বলা। এই প্রদর্শনীতে একটি কাজ আছে মাহমুদুল হকের। মাহমুদুল হক গুরুত্বপূর্ণ শিল্পী। তিনি জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০২২ সালে তিনি নীরবে চলে যান আমাদের ছেড়ে।

২১ বছরের গ্যালারি কায়া দেখাচ্ছে প্রায় আট দশকের শিল্পকলা ইতিহাস। এই গুরুত্বপূর্ণ প্রদর্শনীতে শিল্পাচার্যের একটি কাজ থাকলে ষোলো কলা পূর্ণ হতো। আবার যা আছে তা-ও কম কিসের। প্রদর্শনী চলবে ১২ জুলাই পর্যন্ত।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ