ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
২ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
২ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭
ব্রহ্মপুত্রবেষ্টিত উলিপুরের প্রত্যন্ত চর জলাঙ্কারকুঠি

কুড়িগ্রামে চর আলোকিত করছে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল

  • ♦ স্কুল থে‌কে আমা‌দের বই, খাতা, কল‌মের পাশাপা‌শি নতুন জামা, জুতা, ব‌্যাগ দেওয়া হ‌য়ে‌ছে। আমরা পড়ালেখা করে অনেক শিক্ষিত হতে চাই। ভালো মানুষ হতে চাই ♦ স্কুলের স্যার-আপারা আমাদের অনেক সুন্দর করে পড়ালেখা বুঝিয়ে দেন। আমরা সহজে বুঝতে পারি। শুভসংঘ স্কুলে পড়ালেখা করতে পেরে আমরা আনন্দিত
রোকনুজ্জামান মানু
রোকনুজ্জামান মানু
শেয়ার
কুড়িগ্রামে চর আলোকিত করছে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল
কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তার চর জলাঙ্কারকুঠি গ্রামের বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের শিক্ষার্থীরা।

আমা‌দের স্কুলটা অ‌নেক সুন্দর। আগে সারা ‌দিন খেলাধুলা ক‌রে দিন কাটাইতাম। এখন নিয়‌মিত স্কু‌লে আসি। স্কু‌লে পড়া‌লেখার পাশাপা‌শি অ‌নেক কিছু শিখতে‌ছি।

খুবই ভালো লা‌গে। আমা‌দের স্কু‌লে নতুন জামা, জুতা, ব্যাগ পে‌য়ে‌ছি। স‌ঙ্গে বই, খাতা, কলম, পেন‌সিলও পেয়েছি। স‌্যার-আপা আমাদের ভা‌লোভা‌বে পড়া‌লেখা করান।
আমরা অনেক খু‌শি

চার‌দি‌ক ঘি‌রে ব্রহ্মপুত্র নদ, মাঝখা‌নে ছোট্ট দ্বীপচর জলাঙ্কারকু‌ঠি। দেশের সবচেয়ে দা‌রিদ্র্যপী‌ড়িত জেলা কুড়িগ্রামের উলিপুর উপ‌জেলায় অবস্থিত এই চর। একটি স্কুলের অভাবে এত দিন এই চ‌রের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া কর‌তে পা‌রে‌নি। শিক্ষার আলো থে‌কে ব‌ঞ্চিত ছিল দরিদ্র পরিবারের শিশুরা।

এই শিশুদের কথা চিন্তা করে বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে বছরের শুরুতে সেখা‌নে চালু করা হয় ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল’। বর্তমানে ৪০ জন শিশু পড়া‌লেখা কর‌ছে এই স্কুলে। আগে সন্তানদের পড়া‌লেখা করা‌তে না পারার হতাশা থাক‌লেও এখন স্কুল পেয়ে নতুন স্বপ্ন করে দেখছেন চরের অভিভাবকরা। বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কু‌লে ত‌াঁ‌দের সন্তানরা লেখাপড়া করছে। সন্তানদের নিয়ে আশার আলো দেখ‌ছেন অভিভাবকরা।

চরের বা‌সিন্দা হায়দার আলী পেশায় মু‌দি দোকা‌নি। চ‌রে লেখাপড়ার ব‌্যবস্থা না থাকায় তাঁর দুই সন্তানকে তাদের নানাবাড়িতে পাঠিয়েছিলেন। তাঁর আশা ছিল পড়ালেখা করে উচ্চশিক্ষিত হবে সন্তানরা, কিন্তু তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। অল্প বয়সেই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। হায়দার আলী বলেন, ‘সন্ত‌া‌নদের লেখাপড়ার জন্য অ‌নেক চেষ্টা ক‌রে‌ছি। এই চ‌রে কো‌নো স্কুল না থাকায় দূ‌রের স্কুলে যে‌তে হ‌তো। সে‌টি মো‌টেও নিরাপদ ছিল না। প‌রে ছেলে ও মে‌য়ে‌কে তাদের নানাবাড়িতে রেখে পড়াতে হয়েছে। এখন এই চ‌রে স্কুল হ‌য়ে‌ছে। আমরা চরবাসী অ‌নেক খুশি। আমা‌দের সন্তানরা এখা‌ন থে‌কে পড়া‌লেখা শি‌খে উচ্চ‌শি‌ক্ষিত হবে। বসুন্ধরা গ্রুপ এত ভালো একটি কাজ করেছে, বলে বোঝাতে পারব না।’

কুড়িগ্রামে চর আলোকিত করছে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল

বিউটি আক্তার, শিক্ষার্থী, বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল, উলিপুর, কুড়িগ্রাম

স্থানীয় কয়েকজন প্রবীণের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুড়িগ্রামের বৃহত্তম উপজেলা উলিপুর। এর পূর্ব দিকে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা, পশ্চিমে তিস্তা নদী। উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে চর জলাঙ্কারকুঠি। দুই যুগ আগে জেগে ওঠা চরে ধীরে ধীরে বসতি শুরু হলেও এখানে ছিল না শিক্ষাব‌্যবস্থা। বর্তমানে চ‌রে প্রায় ৪০০ পরিবারের বাস। তাদের একমাত্র পেশা কৃষি। দুই যুগ অতিবাহিত হলেও এখানে পৌঁছায়নি শিক্ষার আলো। শিক্ষার অভাবে অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছিল কোমলমতি শিশুদের জীবন। জলাঙ্কারকুঠি চরের উত্তরে বুড়াবুড়ি ও দক্ষিণে হাতিয়া ইউনিয়ন। দুই ইউনিয়নের মানুষের বাস হওয়ায় অনেকটা অবহেলিতও তারা। আশপাশে সরকারি কিংবা বেসরকারি স্কুল না থাকায় দূরের স্কুলে ঝুঁকি নিয়ে সন্তানদের পাঠাতে চাইতেন না অভিভাবকরা, যার ফলে এই চরে বেড়ে ওঠা শিশুদের বেশির ভাগই থেকে যেত নিরক্ষর। তাঁরা বলেন, এই বছরের শুরু থেকে বসুন্ধরা গ্রুপ আমাদের চরে একটি স্কুল চালু করছে। এটা আসলে স্কুল নয়, আমাদের স্বপ্ন দেখার শুরুটা করে দিয়েছে। অনেক দোয়া করি বসুন্ধরা গ্রুপের জন্য। এমন অবহেলিত চরে তারা যে মহান কাজটা করেছে, আল্লাহ তাদের ভালো করবেন।

শুভসংঘ স্কু‌লের শিক্ষার্থ‌ী মঞ্জু মিয়া (৮) বলে, ‘আমা‌দের চ‌রে স্কুল না থাকায় পড়া‌লেখা কর‌তে পা‌রি‌নি। এখন স্কুল হওয়া‌য় পড়া‌লেখা কর‌তে পা‌রছি। নিয়‌মিত স্কু‌লেও আসি। আশপা‌শের চ‌রের শিক্ষার্থীরাও এই স্কু‌লে আসে। খুব ভা‌লো লা‌গে।’

সা‌দিয়া না‌মের আরেক শিক্ষার্থী বলে, ‘স্কুল থে‌কে আমা‌দের বই, খাতা, কল‌মের পাশাপা‌শি নতুন জামা, জুতা, ব‌্যাগ দেওয়া হ‌য়ে‌ছে। আমরা পড়ালেখা করে অনেক শিক্ষিত হতে চাই। ভালো মানুষ হতে চাই।’ মরিয়ম খাতুন নামের আরেক শিক্ষার্থী বলে, ‘স্কুলের স্যার-আপারা আমাদের অনেক সুন্দর করে পড়ালেখা বুঝিয়ে দেন। আমরা সহজে বুঝতে পারি। শুভসংঘ স্কুলে পড়ালেখা করতে পেরে আমরা আনন্দিত।’

পা‌র্শ্ববর্তী বাবুর চ‌রের বা‌সিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, ‘জলাঙ্কারকু‌ঠি‌তে বসুন্ধরা গ্রুপ একটি স্কুল করে দি‌য়ে‌ছে। আমরা খুবই উপকৃত হয়ে‌ছি। ওই স্কু‌লে আমার ভা‌তিজাও প‌ড়ে। আগে স্কুল না থাকায় পড়া‌লেখা করা‌তে পারি‌নি। এই স্কুল পাস করলে ভাতিজাকে শহ‌রের স্কু‌লে পড়াব।’ বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের শিক্ষক আবু সাঈদ ও সাহানাজ বেগম জানান, এখানকার অভিভাবকরা বাচ্চাদের পড়াতে অনেক আগ্রহী। তাঁরা নিয়মিত বাচ্চাদের স্কুলে পাঠান। প্রতিদিনই শতভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। শিশুরা আনন্দের সঙ্গে পড়াশোনা করে।

উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘জলাঙ্কারকুঠি একটি দুর্গম চর। ওই চরের আশপাশে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় দেশের বৃহত্তম শিল্প পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপ একটি স্কুল করে দিয়েছে। বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল তৈরি করে সেখানকার কোমলমতি শিশুদের পড়াশোনার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এই স্কুলের মাধ্যমে ওই চরে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে। সব সময় ভালো কাজের মধ্য দিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ দেশ ও মানুষের কল্যাণ করছে। আমি বসুন্ধরা গ্রুপের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করছি।’

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

হার না মানা সুস্মিতা এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ

বসুন্ধরা শুভসংঘ ডেস্ক
বসুন্ধরা শুভসংঘ ডেস্ক
শেয়ার
হার না মানা সুস্মিতা এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ

বাবা সমর চক্রবর্তী ছিলেন ব্যবসায়ী। তাঁর আয়েই চলত সংসার ও তিন সন্তানের লেখাপড়া। আকস্মিকভাবে তাঁর মৃত্যুতে স্ত্রী লক্ষ্মীরাণী চক্রবর্তী দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে বিপাকে পড়েন। দোকান চালানোর মতো আর কেউ না থাকায় বন্ধ হয়ে যায়।

সেই দোকান ভাড়া দিয়ে সামান্য যে টাকা পাওয়া যেত, তা দিয়ে কোনো রকমে চলার চেষ্টা করে পরিবারটি। অনটনের কারণে একসময় পড়ালেখা ছাড়িয়ে বড় মেয়েকে অনেক কষ্টে বিয়ে দেন। কিন্তু হাল ছাড়েননি মেজো মেয়ে সুস্মিতা চক্রবর্তী। বাবা যখন মারা যান, তখন তিনি পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার বৈরাতী গ্রামে। শত অভাব-অনটনের মধ্যেও লেখাপড়া চালিয়ে যান তিনি। দশম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় সুস্মিতা প্রাইভেট পড়িয়ে কিছু আয় করার চেষ্টা শুরু করেন। সেটি আজও চালিয়ে যাচ্ছেন।
এখন স্থানীয় একটি কলেজে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী সুস্মিতা। নিজের লেখাপড়া আর প্রাইভেট পড়ানোর মধ্যেই থেমে থাকেননি তিনি। কয়েক বছর থেকে বিভিন্ন পণ্য নিজে বানিয়ে অনলাইনে বিক্রির চেষ্টা করছেন। এসব পণ্যের অনেকগুলো আবার সেলাইসংক্রান্ত। কাজের পাশাপাশি ছোট ভাইকেও লেখাপড়া করাচ্ছেন।
ভাইটি এবার এইচএসসি দিচ্ছে। সুস্মিতার ভাষ্য, বাবার মৃত্যুতে অনেকটাই ভেঙে পড়েছিলাম। আমার প্রবল চেষ্টা ও আগ্রহ ছিল। তাই আমি কখনো হতাশ হয়ে পড়িনি। কষ্ট করে হলেও নিজের লেখাপড়া চালিয়ে নিচ্ছি, ছোট ভাইটিকে পড়াচ্ছি, মায়ের সংসারেও সাহায্য করার চেষ্টা করছি। একটি সেলাই মেশিনের অভাব দীর্ঘদিন ধরে অনুভব করছিলেন তিনি। সুস্মিতা বলেন, আমি অনলাইনে বিক্রির জন্য যেসব কাজ করি, সেগুলো অনেকটাই সেলাই রিলেটেড। এই মেশিনের মাধ্যমে আমি এখন থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এটি দিয়ে আমি আমার আয় আরো অনেক বাড়াতে পারব, যা দিয়ে ছোট ভাইসহ নিজের লেখাপড়া চলবে। পরিবারকেও এগিয়ে নিতে পারব। বসুন্ধরা গ্রুপ ও শুভসংঘের প্রতি আমি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।

 

মন্তব্য

রাশিদার সন্তানদের লেখাপড়াও চলবে নিশ্চিন্তে

বসুন্ধরা শুভসংঘ ডেস্ক
বসুন্ধরা শুভসংঘ ডেস্ক
শেয়ার
রাশিদার সন্তানদের লেখাপড়াও চলবে নিশ্চিন্তে

স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। না পারছি তাদের ঠিকভাবে খাওয়াতে, না পারছি লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করতে। এই বিষয়ে কাউকে কিছু না পারছি বলতে, পারছি না সহ্য করতে। তিন মাসের প্রশিক্ষণ শেষে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে সেলাই মেশিন পেয়ে এভাবেই অনুভূতি জানাচ্ছিলেন রাশিদা বেগম।

তাঁর দুচোখ দিয়ে ততক্ষণে গড়িয়ে পড়ছে পানি। লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার প্রয়াত এন্তাজ আলীর স্ত্রী রাশিদা। তাঁর ছেলে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। মেয়ে পড়েন অনার্সে।
স্বামী বেঁচে থাকতেই বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। কালীগঞ্জ বাজারে ছোট্ট একটি চায়ের দোকান করতেন তাঁর স্বামী। দুই বছর আগে তিনি মারা গেলে পরিবারটি বিপাকে পড়ে। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হয়।
বাধ্য হয়ে ছোট ছেলেটি পড়ালেখার পাশাপাশি বাবার বন্ধ হয়ে যাওয়া দোকানের হাল ধরে। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত দোকান চালিয়ে যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চালায়। ছেলের এসএসসি পরীক্ষার কারণে প্রায় পাঁচ মাস দোকান বন্ধ রেখেছিলেন রাশিদা। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। একটি বিকল্প আয়ের পথ খুঁজছিলেন।
তাঁকে সেই পথ দেখাল বসুন্ধরা শুভসংঘ। বিনামূল্যে তিন মাসের সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে তিনি পেয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের উপহার। এটি শুধুই একটি মেশিন নয়, তাঁর কাছে যেন বাঁচার অবলম্বন। বিধবা এই নারী বলেন, সেলাইয়ের কাজ জানতাম না, ছিল না মেশিনও। এখন দুটিই দিল বসুন্ধরা। এই মেশিন চালিয়ে আয় করার সব চেষ্টা করব, যাতে সন্তানদের খাওয়াতে পারি, লেখাপড়া করাতে পারি। যারা আমাকে এই পথ দেখিয়েছে, তাদের জন্য মন থেকে দোয়া করব।

মন্তব্য

দারিদ্র্য দূর করতে বসুন্ধরা গ্রুপের অনন্য উদ্যোগ

    ফারহান উদ্দিন আহমেদ পাশা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, বিএনপি কালীগঞ্জ, লালমনিরহাট
শেয়ার
দারিদ্র্য দূর করতে বসুন্ধরা গ্রুপের অনন্য উদ্যোগ

গ্রামীণ দরিদ্র নারীদের পাশে দাঁড়ানোর এই মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। বসুন্ধরা গ্রুপ যে চিন্তা থেকে বাংলাদেশের একেবারে শেষ প্রান্তের জেলা লালমনিরহাটের কালীগঞ্জকে বেছে নিয়েছে, তাদের প্রতি অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। পিছিয়ে পড়া এই উপজেলায় অসচ্ছল মানুষ যেমন আছে, তেমনি নদীভাঙন-বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যাও কম নয়। এসব পরিবারের অনেক ছেলেমেয়ে অভাবের কারণে লেখাপড়া করতে পারছে না, নানাভাবে সমাজে লাঞ্ছিত হচ্ছে।

সেই দিক চিন্তা করে দেশের প্রতিষ্ঠিত শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ তাদের সামাজিক সংগঠন শুভসংঘের মাধ্যমে এখানকার যে উপকারভোগীদের বাছাই করেছে, এরপর তিন মাস ধরে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়েছেএটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। সমাজের পিছিয়ে পড়া অসচ্ছল এসব নারী এখন থেকে বাড়িতে বেকার সময় না কাটিয়ে রোজগার করে দুবেলা ঠিকভাবে খেতে পারবেন। উন্নতি করতে পারবেন সংসারের। লেখাপড়া করিয়ে মানুষের মতো মানুষ করতে পারবেন সন্তানদের।
ফলে এই পরিবারগুলোর এগিয়ে যাওয়ার সুফল পাবে আমাদের সমাজ, আমাদের দেশ। একসময় স্বাবলম্বী এসব নারীকে দেখে পিছিয়ে পড়া অন্য নারীরাও আশাবাদী হবেন, সন্ধান পাবেন নতুন পথের। সেলাই মেশিন হাতে পাওয়া এই নারীদের হাত ধরে একদিন আরো অনেকে স্বাবলম্বী হবেন। সচ্ছলতা ফিরবে তাঁদের পরিবারে।
মেশিনপ্রাপ্ত কোনো শিক্ষার্থী যেমন নিজের লেখাপড়ার খরচ নিজেই এখন থেকে জোগাতে পারবেন, তেমনি কোনো নারী হয়তো সংসারের নানা কাজের পাশাপাশি ঘরে বসে আয়ের মাধ্যমে স্বামীকে সাহায্য করতে পারবেন। স্থায়ীভাবে সমাজ থেকে দারিদ্র্য দূর করতে বসুন্ধরার এটি একটি অনন্য উদ্যোগ।

 

 

মন্তব্য

এই নারীরা একদিন সমাজের মডেল হবেন

    মাওলানা রুহুল আমিন, আমির, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কালীগঞ্জ, লালমনিরহাট
শেয়ার
এই নারীরা একদিন সমাজের মডেল হবেন

আমাদের দেশের শিল্পপতিরা প্রতিদিন নাশতা খেতে বা সামান্য কাজে যত টাকা ব্যয় করেন, তা দিয়ে যদি সাধারণ মানুষের ভালো করার কথা চিন্তা করেন, তাহলে সমাজের জন্য তাঁরা অনেক কিছু করতে পারেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ প্রান্তিক মানুষের জন্য কাজ করেন। তাঁদেরই একজন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। বসুন্ধরা গ্রুপ বা বসুন্ধরা শুভসংঘ ইচ্ছা করলে অসচ্ছল নারীদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ শেষে সেলাই মেশিন বিতরণ না করে এই টাকা অন্য কাজে ব্যবহার করতে পারত।

কিন্তু তারা সেটি না করে প্রান্তিক-দরিদ্র নারীদের কথা চিন্তা করে এই মহতী আয়োজন করেছেন। এ জন্য তাদের সাধুবাদ জানাই। ইসলামে নারীদের খাটো করে দেখা হয়নি। সমাজেও অর্ধেক নারী ও অর্ধেক পুরুষ।
ফলে তাঁদের বাদ দিয়ে সমাজের উন্নয়ন আশা করা যায় না। নারীদের বাদ দিয়ে কোনো উন্নয়নই আশা করা যায় না। আজকে যাঁরা মেশিন পেলেন, তাঁরা সংসারের কাজ শেষে যদি সেলাইয়ের কাজ করেন, তবে তাঁদের সংসারে অনেক উন্নতি হবে। আপনারা একদিন মডেল হবেন, আপনাদের দেখে সমাজের আর দশজন মা-বোন বেঁচে থাকার পথ পাবেন।
অসচ্ছল নারীদের পাশে দাঁড়িয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, সে জন্য তাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। তারা দেশের উন্নয়নের জন্য, দেশের মানুষের উন্নতির জন্য যে কাজগুলো করে যাচ্ছে, সেটি অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। আশা করি, বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তা নিয়ে বসুন্ধরা শুভসংঘ দেশজুড়ে নানা সামাজিক কাজ অব্যাহত রাখবে।

 

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ