ঢাকা, মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৯ মহররম ১৪৪৭

আর বলবেন না ‘জাগো বাহে কোনঠে সবায়...’

notdefined
notdefined
শেয়ার
আর বলবেন না ‘জাগো বাহে কোনঠে সবায়...’

নূরলদীনরূপী আলী যাকেরের কণ্ঠে মঞ্চে আর শোনা যাবে না উদাত্ত সেই বিপ্লবী আহ্বান, ‘জাগো বাহে কোনঠে সবায়...।’ কিংবদন্তি এই অভিনেতা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গতকাল চলে গেলেন না-ফেরার দেশে। তাঁর স্মরণে পূর্ণ পৃষ্ঠার এই আয়োজন

 

সহকর্মীদের কথা

মঞ্চনাটকের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল

ফেরদৌসী মজুমদার

দুই মাস আগে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। খুব খুশি হয়েছিলেন।

বলেছিলেন, আরো কিছু কাজ করে যেতে পারলে ভালো হতো। তাঁর সঙ্গে কাটানো স্মৃতির কথা মনে উঠলে প্রথমে আসে ‘ম্যাকবেথ’-এর কথা। আমরা দুজন দুই দলের হলেও এই নাটকে একসঙ্গে কাজ করেছিলাম। তিনি খুব ব্যস্ত জীবন কাটিয়েছেন।
নিজের বিজ্ঞাপনী সংস্থা সামলে আবার নিয়মিত মঞ্চে কাজ করতেন। গোছালো মানুষ না হলে এটা অসম্ভব। তাঁর মৃত্যুতে নাটকের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল।

 

শেষ দেখাটাও দেখতে পারছি না

আবুল হায়াত

ওর সঙ্গে প্রথম দেখা সেই ১৯৭২ সালে।

একসঙ্গে মঞ্চে, টেলিভিশনে কত কাজ করেছি! ও আমার নির্দেশনায় কাজ করেছে, অন্য পরিচালকের নির্দেশনায় দুজন একসঙ্গে মঞ্চে, টিভিতে, রেডিওতে কাজ করেছি। আমাদের প্রথম কাজ মঞ্চে ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’। দুজনের একসঙ্গে সবচেয়ে বিখ্যাত নাটক ‘দেওয়ান গাজীর কিস্সা’। অভিনেতা হিসেবে আলী যাকের অসাধারণ, সে চরিত্রের গভীরে ঢুকে যেতে পারত। আমার প্রতিও ওর একই বিশ্বাস ছিল।
‘তোর সঙ্গে অভিনয় করে এত আনন্দ পাই’, এ কথা ও বহুবার বলেছে আমাকে। অভিনেতা ছাড়া ব্যক্তি হিসেবেও অসাধারণ। পারিবারিক মানুষ হিসেবে সে উদাহরণ, ভীষণ বন্ধুবৎসল। কতজনকে যে কতভাবে সাহায্য করেছে! সহজে মানুষকে আপন করে নিত, দলে নতুন সদস্য যারা আসত, দেখতাম সবার সঙ্গে ভীষণ আন্তরিক।

সবশেষ মাসখানেক আগে টেলিফোনে ওর সঙ্গে কথা হয়। তখনো মানসিকভাবে ভীষণ শক্ত মনে হয়েছে। ও বরাবরই খুব শক্ত মনের। মার্চে ওর বাসায় গিয়েছিলাম। দেখি শুয়ে আছে। আমাকে দেখে কী খুশি; বলল, ‘আয়, আয় দোস্ত, কেমন আছিস?’ ফেরার সময় উঠে বসার চেষ্টা করল। আমি মাথাটা জড়িয়ে ধরে বললাম, ‘বুকে আয় দোস্ত, আবার আমরা একসঙ্গে অভিনয় করব।’ সেই শেষ দেখা। এখন এমন একটা সময় যে প্রিয়জনের মুখটা শেষবার দেখতেও পারছি না। আমার পরিবারের সদস্যরা আমাকে ঘরের বাইরে বেরোতেই দিল না।

 

আমার সব কিছুই তাঁর হাত ধরে

আসাদুজ্জামান নূর

কী বলব আর নতুন করে, কিছুই বলার নেই। প্রায় ৫০ বছর তাঁর সঙ্গে আছি, আমার ক্যারিয়ার, তারপর ব্যবসা—সব কিছুই তাঁর হাত ধরে। তাঁর সঙ্গে এত স্মৃতি! ৫০ বছরের স্মৃতি বলে শেষ করা যাবে না। সবাই জানে, আলী যাকের কত বড় মাপের অভিনেতা। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন, সেটা থেকেই বোঝা যায় দেশের জন্য তাঁর চিন্তা-ভাবনা কেমন ছিল।

 

আফসোস থেকেই যাবে

লাকী ইনাম

আমার প্রথম মঞ্চনাটক ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’তে তাঁর সঙ্গেই অভিনয় করেছিলাম। অভিনেতা হিসেবে ছোটলু ভাই যেমন অসাধারণ, মানুষ হিসেবেও ছিলেন অমায়িক। কিছুদিন আগে ইউটিউবে তাঁর একটা অনুষ্ঠান দেখছিলাম আমি আর ইনাম। ছোটলু ভাইয়ের কথাগুলো এত ভালো লেগেছিল, ইনাম সঙ্গে সঙ্গে ফোন দিল। সেদিন ছোটলু ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলার সময় বুঝলাম, কণ্ঠটা ভাঙা ভাঙা। কথা শেষ করে ইনামকে বললাম, চলো, একদিন ছোটলু ভাইকে দেখে আসি। সেটা আর হয়ে উঠল না। আফসোসটা থেকেই যাবে। 

 

এই ক্ষতি অপূরণীয়

সুবর্ণা মুস্তাফা 

আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। সারা ভাবি, ইরেশ, শ্রিয়া—সবাইকে আমার পরিবারের সদস্য ভেবেছি সব সময়। আমার বাবা মারা যাওয়ার পর কোনো একটি শব্দ নিয়ে আটকে গেলে, সঠিক মানে বুঝতে না পারলে ছোটলু ভাইকে ফোন দিয়েছি। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ব্যাখ্যা করে বলে দিয়েছেন। এই যে তাঁর শব্দভাণ্ডার, এটা অনেক অভিনেতারই নেই। ছোটলু ভাই যেখানেই কাজ করেছেন সফল হয়েছেন। কি মঞ্চে, কি টিভিতে, কি চলচ্চিত্রে—সব ক্ষেত্রেই। করোনার আগে সরাসরি শেষ দেখা হয়েছিল। তিনি সিঙ্গাপুরে যাবেন প্রথম কেমোথেরাপি নিতে। খবরটা শুনেই বাসায় যাই। আমাকে দেখে খুব খুশি হয়েছিলেন। এর মধ্যে প্রায়ই মেসেজে কথাবার্তা হয়েছে। তিনি এত দ্রুত আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন, ভাবতে পারিনি। সারা ভাবী, ইরেশ ও শ্রিয়ার মনের অবস্থা বুঝতে পারছি। তাঁদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। একজন আলী যাকেরকে হারিয়ে মঞ্চের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। এই ক্ষতি অপূরণীয়। ছোটলু ভাইয়ের আত্মার শান্তি কামনা করছি।

 

প্রথম দুই ছবিতেই তিনি আছেন

মোরশেদুল ইসলাম

চলচ্চিত্রে উনার প্রথম কাজ আমার ‘আগামী’তে। এক রাজাকারের [বদর মুন্সী] চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করেছিলেন। টেলিভিশনে আমার প্রথম নাটকেও অভিনয় করেছিলেন। উনাকে নিয়ে আমি আরেকটা সিনেমা করেছিলাম, ‘বৃষ্টি’। আমার এবং আমার স্ত্রীর [মুনিরা মোর্শেদ মুন্নি] সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। আলী যাকের ছবি তুলতেন, আমার স্ত্রীও ফটোগ্রাফার, সেই সূত্রে ওদের অনেক কথা হতো।

অভিনেতা হিসেবে তিনি অসাধারণ, চরিত্রের গভীরে গিয়ে অভিনয় করতে পারতেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের যে বিকল্পধারার আন্দোলন আমরা বলি, সেই আন্দোলনের প্রথম দুই ছবিতেই তিনি আছেন। আমার ‘আগামী’ করেছেন, তানভীর মোকাম্মেলের ‘হুলিয়া’তেও আছেন। সিনেমায় উনাকে কম পাওয়ার কারণ উনি তো সাধারণ সিনেমায় অভিনয় করতে চাননি এবং চরিত্র পছন্দ না হলে কাজ করতেন না। যে কারণে মূলধারার ছবিতে উনাকে সেভাবে দেখা যায়নি।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আরো খবর

শেয়ার
আরো খবর

ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সূর্য দীঘল বাড়িখ্যাত বরেণ্য চলচ্চিত্রকার মসিহউদ্দিন শাকের। শনিবার ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিতে তাঁকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। 

গানচিত্রের মডেল হয়েছেন শবনম বুবলী। তানিম রহমান অংশুর নির্মাণে এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে গানচিত্রটির শুটিং।

কলকাতার আকাশ সেনের সুরে গানটি কে গেয়েছেন, তা জানাননি সংশ্লিষ্টরা।

ক্যানসারে আক্রান্ত মেকানিক্স ব্যান্ডের সাবেক গিটারিস্ট ইমরান আহমেদ। ব্যান্ডটি থেকে অনেক আগেই তিনি সরে এসেছেন। তবে সে ব্যান্ডটি এগিয়ে এসেছে তাঁর চিকিৎসা সহায়তায়।

২৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে কনসার্ট ফর ইমরান। এতে মেকানিক্সের সঙ্গে পারফরম করবে সোনার বাংলা সার্কাস, হাইওয়ে, পাওয়ারসার্জসহ আটটি ব্যান্ড।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

এক মলাটে জুলাইয়ের ৬৩ গান

শেয়ার
এক মলাটে জুলাইয়ের ৬৩ গান

২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যেসব গান প্রেরণা জুগিয়েছিল, উদ্বুদ্ধ করেছিল, সেই গানগুলো এবার পাওয়া যাবে এক মলাটে। আলোকচিত্রী ও অ্যাকটিভিস্ট মনজুর হোসেনের উদ্যোগে জুলাইয়ের গান শিরোনামে বইটি শিগগির প্রকাশ করা হবে। মনজুর হোসেন বলেন, আগামী প্রজন্মের কাছে সময়ের দলিল হিসেবে ধরে রাখতে তিনি বইটি প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ঢাকার রাস্তায় কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজপথে নামে শিক্ষার্থীরা।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে তারা। ঠিক সেই সময়ে কথা ক শিরোনামে একটি গান প্রকাশ করেন বাংলাদেশি র‌্যাপার মোহাম্মদ সেজান। পাশাপাশি র‌্যাপার হান্নান করেন আওয়াজ উডা বাংলাদেশ। দ্রুত তরুণদের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে গানগুলো।
নতুন প্রতিবাদের প্রতীকে পরিণত হয়। এর বাইরে আরো বেশ কয়েকটি গান তখন মানুষকে সাহস জোগায়। ১৫ জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত যেসব গান প্রকাশিত হয়েছে, সেখান থেকে ৬৩টি গানের সংকলন এই জুলাইয়ের গান

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
অন্তর্জাল

দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো

শেয়ার
দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো
‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো’ অনুষ্ঠানের দৃশ্য

দুই সিজনের সাফল্যের পর নেটফ্লিক্সে চলছে কমেডি অনুষ্ঠান দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শোর তৃতীয় সিজন। শনিবার এসেছে নতুন পর্ব। এতে অতিথি হয়েছেন ওটিটির চার তারকা অভিনেতাজয়দীপ আহলাওয়াত, বিজয় বর্মা, জিতেন্দ্র কুমার ও প্রতীক গান্ধী। তাঁদের সঙ্গে মজাদার আড্ডায় কপিল শর্মার সঙ্গে রয়েছেন সুনীল গ্রোভার, কিকু শারদা, ক্রুষ্ণা অভিষেক প্রমুখ।

এ ছাড়া বিশেষ চমক হিসেবে এসেছেন কে-পপ তারকা জ্যাকসন ওয়াং।

মন্তব্য
চলচ্চিত্র

কুলি

শেয়ার
কুলি
‘কুলি’ ছবিতে ওমর সানী

অভিনয়ে ওমর সানী, পপি, হুমায়ুন ফরীদি। পরিচালনা মনতাজুর রহমান আকবর। সকাল ১০টা ১০ মিনিট, আরটিভি।

গল্পসূত্র : কেরামত আলী ব্যাপারী খুবই লোভী ও অহংকারী মানুষ।

মেয়ে পপির বিয়ের জন্য ঘটক যত পাত্রের ছবি দেখায় কোনোটাই পছন্দ হয় না তার। কারো বয়স বেশি, কারো আয় কম। ঘটক রেগে গিয়ে বলে বসে, এত বাছবিছার করলে শেষ পর্যন্ত দেখা যাবে মেয়ের বিয়ে হবে কোনো কুলির সঙ্গে। ঘটনা তাই ঘটে।
রেল স্টেশনের কুলি রাজু প্রেমে পড়ে পপির। বড় ব্যবসায়ী সেজে পপিকে বিয়ে করে সে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ