<p>রাজশাহী বিভাগের আট জেলা মিলে গত সোমবার পর্যন্ত করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ছয়। গত ৭ সেপ্টেম্বর এ সংখ্যা ছিল ১৮ হাজার ৪২৩। সেই হিসাবে গত এক সপ্তাহে আক্রান্ত রোগী বেড়েছে মাত্র ৫৮৩ জন। অথচ গত মাসে প্রতিদিনই অন্তত ৫০০ জন করে আক্রান্ত হয়েছে। সেই হিসাবে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায়।</p> <p>তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রান্তের হার হয়তো এখনো কমেনি। মানুষের মধ্যে করোনা পরীক্ষা করানোর প্রবণতা কমে যাওয়ায় এমনটা হচ্ছে। যারা আক্রান্ত হওয়ার পরে খুব বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে, কেবল তারাই আসছে পরীক্ষা করাতে। আবার যেসব পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে বেশির ভাগই ফলোআপ পরীক্ষা। ফলে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন কম পাওয়া যাচ্ছে।</p> <p>এদিকে বিভাগের আট জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭.৩ শতাংশে নেমে এসেছে। গত মাসে সেটি বেড়ে গিয়ে হয়েছিল ১৬ শতাংশে। কমেছে মৃত্যুর হারও। গতকাল পর্যন্ত বিভাগের আট জেলায় মারা গেছে ২৮৫ জন, যা গত ৭ সেপ্টেম্বর ছিল ২৬৮ জনে। সেই হিসাবে গত এক সপ্তাহে মারা গেছে মাত্র ১৭ জন।</p> <p>রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দপ্তর থেকে দেওয়া তথ্য মতে, গত সোমবার পর্যন্ত এ বিভাগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৯ হাজার ছয়। এর মধ্যে রাজশাহীতে আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার ৭৬৫, বগুড়ায় সাত হাজার ১৯৫, সিরাজগঞ্জে দুই হাজার ২৮, পাবনায় এক হাজার ৬২, নওগাঁয় এক হাজার ২৩৮, জয়পুরহাটে এক হাজার ৪০, নাটোরে ৯৩১ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৭৪৭। সোমবার পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮৫।</p> <p>রাজশাহী বিভাগের করোনা চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গত ৮ মার্চ দেশে করোনা রোগী প্রথম শনাক্ত হলেও রাজশাহী বিভাগে ধরা পড়ে ১ এপ্রিল। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা। মাঝের তিন মাস সবচেয়ে মারাত্মক আকার ধারণ করে করোনা পরিস্থিতি। তবে আশার কথা, সর্বশেষ গত মাসে এসে করোনা অনেকটাই কমতে শুরু করেছে। এমনকি কমছে মৃত্যু হারও।</p> <p>বিষয়টি স্বীকার করে রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গোপেন আচার্য্য বলেন, ‘এই বিভাগে শেষ এক মাসে অনেকটাই কমতে শুরু করেছে আক্রান্তের হার। এমনকি কমেছে মৃত্যুর হারও।’</p> <p>তবে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সাবেরা গুলনেহার বলেন, ‘করোনার প্রকোপ কিছুটা কমেছে। এই ভাইরাসটি আগের চেয়ে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। তবে আক্রান্তের হার তেমন কমেছে বলে মনে হয় না। কারণ নতুন আক্রান্ত রোগী পরীক্ষা করাতে আসছে কম। মানুষ কিছুটা সচেতন হওয়ায় বাসায় প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েই অনেকে সুস্থ হয়ে যাচ্ছে। এখন যাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে, তাদের বেশির ভাগই ফলোআপ রোগী। এ কারণে পজিটিভ রোগীর সংখ্যা কম পাওয়া যাচ্ছে।’</p>