জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমকে হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তারের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হওয়া মামলায় আসামি থাকা শিক্ষকসহ আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
আওয়ামী লীগের আমলে নীল দলের পদে থাকা শিক্ষকরা আতঙ্কে রয়েছেন বলে জানা গেছে। কোনো কোনো শিক্ষক আবার নিজেকে চাপমুক্ত থাকতে গ্রামে চলে গিয়েছেন।
বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ক্যাম্পাসেও আসেন না তাঁরা। এমন একাধিক শিক্ষক জানান, বর্তমানে যে অবস্থা চলছে, শিক্ষকদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। কার বিরুদ্ধে কখন মামলা হয়, কে কখন কোন মামলায় গ্রেপ্তার হন, জানা যায় না।
নাম প্রকাশ না করে সাবেক একজন সহকারী প্রক্টর কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি সরকার পতনের পর কয়েক দিন ক্যাম্পাসে গিয়েছি।
চাপ থাকায় কয়েক দিন পরই বাড়িতে চলে আসি। ক্যাম্পাসের চাপ এ জন্য কম পাচ্ছি। কারণ নানা কথা, নানা সমালোচনা চলে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নীলদলের সাবেক একজন সাধারণ সম্পাদক কালের কণ্ঠকে বলেন, হ্যাঁ, অবশ্যই শিক্ষকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
এর কোনো সমাধান আছে কি না, কিভাবে শিক্ষকরা নিরাপত্তা পাবেন, এ ব্যাপারে শিক্ষক সমিতি ভালো বলতে পারবেন। শিক্ষক সমিতি কি শিক্ষকদের জন্য কাজ করবে কি না—এটাও তাঁরাই বলতে পারবেন।
জানা যায়, জবি শিক্ষার্থী অনীক কুমার দাস বাদী হয়ে জবির ৯ শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ছাড়া শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা বাদী হয়ে করা মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষকের নাম এসেছে।
তাঁরা হলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার গোস্বামী ও ড. আনোয়ারা বেগম, নীলদলের অধ্যাপক ড. জাকারিয়া মিয়া, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল (দুটি মামলা), সহকারী প্রক্টর নিউটন হাওলাদার (দুটি মামলা), বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মিল্টন বিশ্বাস (দুটি মামলা), ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কামাল হোসেন, আইইআর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারুক আহমেদ, অগাস্টিন পিউরিফিকেশন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু সালেহ সিকেন্দার, নীল দলের সাবেক সভাপতি এবং অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাকারিয়া মিয়া, শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাসফিক হাসান, সাবেক প্রক্টর মো. জাহাঙ্গীর আলম, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কামরুন নাহার লিপি এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল কবির।
তবে সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান এবং অ্যাকাউন্টিং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলামের সঙ্গে আপসনামা করে নিয়েছেন মামলার বাদী অনীক কুমার দাস।