জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিভিন্ন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছে, সেসব মামলার বিচার কার্যক্রম গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি বা রেকর্ডকৃত পদ্ধতিতে প্রচার করা যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের অনুমতি নিতে হবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (সংশোধন) অধ্যাদেশের এমন বিধান বাস্তবায়নে ট্রাইব্যুনালের কোর্টরুম ডিজিটাল প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ফেসবুকে এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
তিনি লিখেছেন, ‘জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য কোর্টরুম ডিজিটাল প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করা হয়েছে। ট্রায়ালের যেকোনো পর্ব আদালতের অনুমতিক্রমে সরাসরি কিংবা রেকর্ডকৃত পদ্ধতিতে গণমাধ্যমে কিংবা সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা যাবে।’
বিচারকাজ প্রচার বা সম্প্রচারের জন্য ট্রাইব্যুনালের এজলাশ (বিচার) কক্ষে যে প্রযুক্তি (ক্যামেরা, সাউন্ড সিস্টেম, কম্পিউটার, স্ক্রিন বা পর্দা) স্থাপন করা হয়েছে, সেগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ওই পোস্টে দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর। ছবিতে চিফ প্রসিকিউটরের সঙ্গে প্রসিকিউটর গাজী মনোয়ার হোসেন তামিমও আছেন।
১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে গত বছরের ২৪ নভেম্বর অধ্যাদেশ জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার, যার শিরোনাম ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪’। এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে আইনটির ৯ ধারায় ‘শুনানির রেকর্ডিং ও সম্প্রচার’ শিরোনাম দিয়ে ৯(ক) নামের একটি উপধারা যুক্ত করা হয়েছে। এই উপধারাটির আবার দুটি ভাগ। উপধারা ৯(ক)(১)-এ বলা হয়েছে, ‘ট্রাইব্যুনাল শুনানির বা তার কিছু অংশের অডিও-ভিজ্যুয়াল রেকর্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
’ ৯(ক)(২)-এ বলা হয়েছে, ‘অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা, গোপনীয়তা ও মর্যাদা রক্ষার জন্য ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক নির্ধারিত যেকোনো শর্ত অনুসারে ট্রাইব্যুনাল ইন্টারনেট বা অন্য কোনো মাধ্যমে শুনানির অডিও বা ভিডিও সম্প্রচার উপলব্ধি করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’
চিফ প্রসিকিউটরের ফেসবুক পোস্টের পর ট্রাইব্যুনালের খবর সংগ্রহকারী সাংবাদিকদের হোয়াটসঅ্যাপে এসংক্রান্ত ভিডিও বার্তা দেন প্রসিকিউটর গাজী মনোয়ার হোসেন তামিম। সেখানে তিনি ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ রেকর্ড ও সম্প্রচার সংক্রান্ত ৯(ক) ধারার বিধান তুলে ধরে বলেন, ‘আজকে ট্রাইব্যুনালের সেই সেটাপটা সম্পন্ন হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের কোর্টরুমের (এজলাশ বা বিচারকক্ষ) ভেতরে যে বিচারকাজ হবে, ট্রাইব্যুনালের অনুমতি সাপেক্ষে সেটিকে পাবলিকলি ব্রডকাস্ট করা যাবে বা সেটিকে ধারণ করে পরবর্তীকালে তা ট্রাইব্যুনালের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে।’
বিচারের স্বচ্ছতা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য এই ব্যবস্থা করা হয়েছে জানিয়ে প্রসিকিউটর তামিম বলেন, ‘সাধারণ মানুষ যারা ট্রাইব্যুনালে আসতে পারবেন না, তাঁরাও যেন যাঁর যাঁর অবস্থান থেকে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেখতে পারেন।
’