ঢাকা, মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০২৫
৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৬ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০২৫
৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৬ মহররম ১৪৪৭
স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন

বাস্তবায়নে নির্দিষ্ট রোডম্যাপ নেই

  • অনেক সুপারিশই বাস্তবসম্মত নয়
  • বাস্তবায়নে নেই সময়সীমার রূপরেখা
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বাস্তবায়নে নির্দিষ্ট রোডম্যাপ নেই

স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন কিভাবে বাস্তবায়ন করা হবেএ বিষয়ে প্রতিবেদনে কোনো রোডম্যাপ উল্লেখ করা হয়নি। এ ছাড়া বেশ কিছু সুপারিশ বাস্তবসম্মত নয়। প্রতিবেদনের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে, সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য সময়কাল নির্ধারণ না করা।

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে করণীয় শীর্ষক আলোচনাসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

আলোচনাসভার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট এবং অ্যালায়েন্স ফর হেলথ রিফর্মস বাংলাদেশ (এএইচআরবি)।

আলোচনাসভায় স্বাগত বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. শাফিনুর নাহিন শিমুল। পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ। তিনি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের মূল বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ ইকোনমিকস ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এবং সানেমের অনারারি পরিচালক ড. শাফিউন এন শিমুল বলেন, ৩২২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে ৩২টি সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। কোনটি মধ্য মেয়াদে, কোনটি দীর্ঘ মেয়াদে বাস্তবায়নযোগ্য তা বলা আছে, কিন্তু কোনটি আগে বাস্তবায়ন হবে সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই।

ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে দিয়েছে। এখন আর তাদের কোনো কাজ নেই।

এখন প্রশ্ন হলো, সুপারিশ বাস্তবায়ন কিভাবে হবে?

সংস্কার কমিশনের সদস্য ডা. আবু মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে যেসব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলোর পুরোপুরি পরিবর্তন করতে হবে। সেখানে একজন ডাক্তার, দুজন নার্স ও প্যারামেডিক থাকতে হবে। আমাদের রেফারেল সিস্টেমের মূল কেন্দ্র হবে উপজেলা হাসপাতাল। এ জন্য উপজেলা পর্যায়ে জনস্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।

শিক্ষাবিদ ও চিকিৎসাবিজ্ঞানী এবং সংস্কার কমিশনের সদস্য ডা. লিয়াকত আলী বলেন, আগে যেটি ছিল নীতিগত অধিকার, এখন তা সাংবিধানিক করা হচ্ছে।

এটি কিভাবে হবে সেটি নিয়ে কাজ করা দরকার। কারণ স্বাস্থ্য কেবল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একার কাজ নয়, এর সঙ্গে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ও জড়িত।

সবার আগে এখন প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার অর্ডিন্যান্স জারি করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কার কমিশনের ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে সরকারের উচিত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য অর্ডিন্যান্স জারি করা। একই সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের আন্ত মন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা। যারা সংস্কারের সুপারিশগুলো গুরুত্ব দিয়ে বাস্তবায়নের কাজ করবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. শারমিন মবিন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় শতাধিক অংশীজন অংশ নেন।

হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, মানুষের জন্য স্বাস্থ্য খাতকে কিভাবে সাজানো হচ্ছে তা জানার জন্যই মূলত এমন আলোচনাসভা। সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবটা মাঠে আছে। এখন সোশ্যাল ভেলিডেশনের (সামাজিক বৈধতা) জন্য এমন আলোচনাসভা কাজ করে। সংস্কারের সুপারিশগুলো মানুষ কিভাবে নিচ্ছে তা দেখা উচিত। এতে যাঁরা নীতি নির্ধারণীতে আছেন বা বাস্তবায়ন করছেন তাঁদের সুবিধা হবে।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মা বললেন ‘ও বাবা, আমার রায়েশা কই’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
মা বললেন ‘ও বাবা, আমার রায়েশা কই’

বিকেল ৩টা। চারদিকে হৈচৈ। একটির পর একটি অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকছে আর বের হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ছাড়া কাউকেই ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

ঠিক সে সময় সন্তানের খোঁজে এক মা দৌড়ে স্কুলের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। আর্মির ব্যারিকেডে তিনি আর সামনে আগাতে পারেননি। থেমে গিয়ে মা রাইমা হোসেন ওই সৈনিককে জিজ্ঞেস করেন, ও বাবা, আমার রায়েশা কই? গতকাল মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনার পর সরেজমিনে এই চিত্র দেখা যায়। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রায়েশা আলমকে খুঁজতে তার মা রাইমা হোসেন স্কুলের গেটের সামনে আসেন।
পরে শিক্ষার্থীরাই তাঁকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হয়।

 

মন্তব্য

দুর্ঘটনার খবর বিশ্ব গণমাধ্যমে

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
দুর্ঘটনার খবর বিশ্ব গণমাধ্যমে

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের এ খবর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বেশ গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের খবর জানিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এতে ফায়ার সার্ভিসের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছে। 

মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি ঢাকায় স্কুলে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১৬ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি স্কুল ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ১৯, আহত হয়েছে শতাধিক। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বহরে থাকা চীনের তৈরি একটি এফ-৭ যুদ্ধবিমান প্রশিক্ষণ মহড়া চলাকালে বিধ্বস্ত হয়েছে।

মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার বলেছে, বাংলাদেশে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। ঢাকার একটি কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইংরেজি দৈনিক গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উত্তরে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত ও আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

এ ছাড়া মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউজ উইক, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে এক্সপ্রেস, ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বাংলাদেশের এই বিমান বিধ্বস্তের খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

মন্তব্য
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর অভিমত

৭ শিশুর পরিচয় শনাক্তে লাগবে ডিএনএ পরীক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
৭ শিশুর পরিচয় শনাক্তে লাগবে ডিএনএ পরীক্ষা

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, যে ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছেন, তারা সবাই শিশু। এর মধ্যে সাতজনের লাশ শনাক্ত করা যায়নি। তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা লাগবে।

তবে সর্বশেষ তথ্যে জানানো হয়েছে মোট ২০ জন প্রাণ হারিয়েছে।

গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। সায়েদুর রহমান বলেন, তাঁদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৮৮ জন হাসপাতালে ভর্তি আছে। প্রাথমিক মূল্যায়নে ২৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এ সময় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেন, আজ তাদের রক্তের প্রয়োজন নেই। আগামীকাল (মঙ্গলবার) রক্তের প্রয়োজন হবে। তাই আজ আর কারো কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে না।

নাসির উদ্দীন বলেন, ইনফেকশন (সংক্রমণ) হলে মৃত্যুঝুঁকি বাড়তে পারে।

তাই হাসপাতালে বহিরাগতদের প্রবেশ না করার অনুরোধ জানান তিনি। সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টা এবং রাজনৈতিক দলের নেতারা এলেও রোগীদের কাছে যাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।

 

মন্তব্য
মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত

২০ জন শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়ে চিরবিদায় নিলেন শিক্ষিকা মেহরিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
২০ জন শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়ে চিরবিদায় নিলেন শিক্ষিকা মেহরিন
মেহরিন চৌধুরী

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষিকা মেহরিন চৌধুরীর বীরত্ব ও আত্মত্যাগ এখন দেশের মানুষের হৃদয়ে গভীর রেখাপাত করছে। প্রাণপণ চেষ্টা করে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীকে মৃত্যুর মুখ থেকে রক্ষা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর নিজের। তাঁর ভাই মানাফ এম চৌধুরী কালের কণ্ঠকে টেলিফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গতকাল সোমবার দুপুরে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত এবং শতাধিক শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

তাঁদের বেশির ভাগই ছুটে গেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।

৪৬ বছর বয়সী মেহরিন চৌধুরী শতভাগ দগ্ধ অবস্থায় ওই ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বার্ন ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি, তাঁর মৃত্যুর খবর সামাজিক মাধ্যমে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার পরপরই ক্লাসরুম থেকে শিক্ষার্থীদের দ্রুত সরিয়ে ফেলেন মেহরিন। তাদের নিরাপদে বের করে দিতে গিয়ে নিজে আর সময়মতো বের হতে পারেননি। উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া এক সেনা সদস্য বলেন, ম্যাডাম ভেতরে ঢুকে গিয়ে বাচ্চাগুলারে বের করে দিছেন, তারপর উনিই বের হতে পারেননি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষিকা মেহরিনের সাহসিকতায় অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীর প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।

মানবিকতা, সাহসিকতা ও দায়িত্বশীলতার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে রইলেন মেহরিন চৌধুরী। শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচিয়ে নিজে হারিয়ে গেলেন। একজন শিক্ষিকার এমন আত্মত্যাগ কোনোভাবেই ভোলার নয়।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ