চট্টগ্রামের সরকারি হাসপাতালগুলোতে জলাতঙ্ক রোগের ‘র্যাবিস’ পাওয়া যাচ্ছে না। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ৩৪ দিন ধরে টিকা নেই। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালেও গতকাল মঙ্গলবার থেকে টিকা পাচ্ছে না রোগীরা। এ ছাড়া জেলার ১৫ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও এখন জলাতঙ্ক রোগের টিকা মিলছে না।
চট্টগ্রামের সরকারি হাসপাতাল
জলাতঙ্কের টিকা সরবরাহ বন্ধ
- ‘রোগীদের টিকা কিনে আনার পরামর্শ’ জানিয়ে জরুরি বিভাগে নোটিশ
- ৩৪ দিন ধরে জেনারেল হাসপাতাল, গতকাল থেকে বিআইটিআইডিতে সরকারি টিকা সরবরাহ বন্ধ
নূপুর দেব, চট্টগ্রাম

বিনামূল্যের এই টিকা সংকটের কারণে প্রতিদিন গড়ে ৩৫০-৪০০ রোগী বাইরে থেকে কিনে টিকা দিচ্ছে। কবে নাগাদ সরকার থেকে হাসপাতালগুলোতে আবারও বিনামূল্যের এই টিকা পাওয়া যাবে তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছে না। এদিকে গত সোমবার দুপুর ২টার দিকে নগরের আন্দরকিল্লায় সরকারি চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, জলাতঙ্ক রোগের টিকা না পেয়ে পাশের হাজারীগলি থেকে রোগীর স্বজনরা জলাতঙ্ক রোগের টিকা কিনে আনছেন।
গিয়ে দেখা গেছে, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নোটিশ বোর্ডে দেওয়া হয়েছে র্যাবিস টিকা সরবরাহ না থাকার বিষয়টি। এতে উল্লেখ করা হয়, ‘জলাতঙ্ক রোগের ভ্যাকসিন/টিকা সরকারি সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ থাকায় আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
গত সোমবার দুপুরে এই হাসপাতালে র্যাবিস টিকা নিতে আসা নগরের হেমসেন লেনের তন্ময় বড়ুয়া নামের এক শিক্ষার্থী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাকে কুকুর কামড় দেওয়ার পর গত ৩ ও ৬ মার্চ দুটি র্যাবিস টিকা দিয়েছি। আজকে (সোমবার) এসেছি তৃতীয় ডোজের টিকা নেওয়ার জন্য। তিনটি টিকাই বাইরে থেকে কিনে এনেছি। এখানে না থাকায় আমরা চারজন মিলে (রোগী) বাইরের ফার্মেসি থেকে ৪৭০ টাকায় টিকা কিনে এনেছি।’
চট্টগ্রামের সবচেয়ে বেশি রোগী র্যাবিস টিকা নিতে আসে জেনারেল হাসপাতালে। জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল মন্নান বলেন, ‘সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (৯ মার্চ পর্যন্ত) ১৭৪ জন রোগী র্যাবিস টিকা নিয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ১৭৫-২০০ জন র্যাবিস টিকা নেয়। এর মধ্যে বেশির ভাগই বিড়াল আক্রান্ত হয়ে টিকা নিতে আসছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে আমাদের হাসপাতালে জলাতঙ্ক রোগের টিকা নেই। আশা করছি চলতি সপ্তাহে টিকা আসবে।’
চট্টগ্রাম জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে জলাতঙ্ক রোগের টিকা সরবরাহ আছে কি না জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, কোনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই এখন জলাতঙ্কের টিকা নেই।
এ ছাড়া সরকারিভাবে চট্টগ্রামে আরেকটি হাসপাতালে (বিআইটিআইডি) জলাতঙ্ক রোগের টিকা বিনামূল্যে দেওয়া হয়। সেই বিআইটিআইডিতে কিছুদিন পরপর টিকার সংকট দেখা দেয়। নাম প্রকাশ না করে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার সকালে চারজনকে জলাতঙ্ক রোগের টিকা দেওয়ার পর সরকারিভাবে আর সরবরাহ না থাকায় রোগীরা বাইরে থেকে কিনে এনে দিয়েছে। সরকারিভাবে সরবরাহ করা টিকা আর নেই।
সম্পর্কিত খবর

শাহজালালে প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে দুজন সঙ্গী প্রবেশের নির্দেশনা
নিজস্ব প্রতিবেদক

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগমন ও বহির্গমন প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে সর্বোচ্চ দুজন সঙ্গী প্রবেশ করতে পারবেন—এমন নির্দেশনা জারি করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
এই নির্দেশনা আগামী রবিবার (২৭ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে। বিমানবন্দর এলাকার ডিপারচার ড্রাইভওয়ে ও অ্যারাইভাল ক্যানোপিতে যাত্রীপ্রতি সর্বোচ্চ দুজন ব্যক্তি ভেতরে প্রবেশের অনুমতি পাবেন।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক রাখা, যানজট নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়, বিমানবন্দর এলাকায় আসা সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল ও কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
যানজট ও নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের পদক্ষেপকে জরুরি বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
বিমানবন্দর সূত্র বলছে, প্রয়োজনে এই নিয়ম আরো কড়াকড়ি করা হতে পারে। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণসহ পরিচয়পত্র রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনার মামাতো ভাই হিরা কারাগারে
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার আমির হোসেন হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামাতো ভাই শেখ ওয়ালিদুর রহমান হিরাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত এই আদেশ দেন।
এদিন হিরাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক মো. মাসুদ রানা তাঁকে কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

দেড় দশকে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসে’ নিহতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের ‘সন্ত্রাসী’ হামলা এবং তৎকালীন ‘সরকারের নির্দেশে’ রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাবা মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ এবং মামা মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই নির্দেশ দেন।
সাক্ষাতে আবরার ফাহাদের পরিবার দাবি জানায়, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের তালিকা তৈরি করে প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। একই সঙ্গে আবরার হত্যা মামলার বিচার দ্রুত শেষ করতে সরকারের উদ্যোগ চান তাঁরা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা পুরো জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। এ ঘটনার বিচার অবশ্যই শেষ হবে। গণ-অভ্যুত্থানের আগের ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ও তাদের সংগঠনের হাতে যারা প্রাণ হারিয়েছে, তাদের প্রতিটি ঘটনার সঠিক তদন্ত হবে। তৎকালীন সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে যে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছে, সেগুলোও তদন্তের আওতায় রয়েছে।
সাক্ষাৎকালে মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ বলেন, ‘দেশের স্বার্থে কথা বলার কারণেই আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অসম পানিবণ্টনের বিরুদ্ধেও সে কথা বলেছিল। আজও তার মা ছেলের জন্য কান্না করে।

হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজউকের প্লট
- রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান!
নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ১৫ চালককে প্লট দেওয়া হয়।
গত বুধবার কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে এই অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। গতকাল সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য জানান।
দুদক সূত্র জানায়, রাজউকের ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে নানা দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ঝিলমিল প্রকল্পের প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার ক্ষেত্রে চার শ্রেণিতে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বরাদ্দের ক্ষেত্রে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে চিঠি দিলে রাজউক তা বাস্তবায়ন করে। ওই প্রকল্পে ১৩/এ ধারার আওতায় বিভিন্ন সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২-এর গাড়িচালক, বিশেষ সহকারীর গাড়িচালক, সহকারী একান্ত সচিব-১-এর চালক, একান্ত সচিব-১ ও ২-এর চালক, প্রটোকল অফিসারের চালক, মুখ্য
সচিবের চালক, চিফ ফটোগ্রাফারের চালকসহ প্রায় ১৫ জন চালককে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়।
তবে এসআরও এবং রাজউক বিধিতে অসামান্য অবদানের কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া পাওয়া যায়নি। প্লট বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের কোন কোন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রয়েছে তার উল্লেখ পাওয়া যায়নি।