আওয়ামী লীগ সরকার যেসব নিবর্তনমূলক আইনের মাধ্যমে জনগণের ওপর শোষণ-নিপীড়নের ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করেছিল, সেসব আইন এখনো বলবৎ রয়েছে। এসব আইন বিলুপ্ত করতে হবে। গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিশিষ্টজনরা এসব কথা বলেন।
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য মারজিয়া প্রভা গণমাধ্যমে এই বিবৃতি পাঠিয়েছেন।
১১৯ জন নাগরিকের পক্ষে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনের হাতিয়ার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, যেটি ২০২৩ সালে বিলুপ্ত করে আগের নিপীড়নমূলক ধারাগুলো বলবৎ রেখে সাইবার সুরক্ষা নিরাপত্তা আইন নামের নতুন একটি আইন করা হয়; সম্প্রতি লেখক-সংগঠক রাখাল রাহা এবং নাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’-এর অভিযোগে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। কবি সোহেল হাসান গালিব একই আইনে গ্রেপ্তার হয়ে জেল খাটছেন। গোষ্ঠীবদ্ধ উষ্মা উৎপাদনের মধ্য দিয়ে তাঁদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবন ঝুঁকির মুখে ফেলা হচ্ছে। এটি কোনোভাবেই গণতান্ত্রিক সমাজে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
বিবৃতিতে রাখাল রাহা ও নাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে করা মামলা প্রত্যাহারের পাশাপাশি এই নিবর্তনমূলক আইনকে সম্পূর্ণ বিলোপের দাবি জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহিষ্ণুতার সংস্কৃতিকে জলাঞ্জলি দিয়ে কোনোভাবেই দেশে স্থিতিশীল রাজনৈতিক বন্দোবস্ত কায়েম হতে পারে না। আর রাষ্ট্রও এমন কোনো আইন জারি রাখতে পারে না, যা ভিন্নমত দমনে ব্যবহৃত হয়, অসহিষ্ণুতাকে উৎসাহিত করে।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সংগীতশিল্পী কফিল আহমেদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত কাইয়ুম, আইনজীবী সারা হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুমন সাজ্জাদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল মামুন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আর রাজী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত প্রমুখ।