জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন ক্যাডার কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থা, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীর সংখ্যা কমবেশি ৬৮ হাজার। শুধু ক্যাডার কর্মকর্তার সংখ্যাই ছয় হাজার ৫৩৯। এর মধ্যে পাঁচ হাজারের বেশি কর্মকর্তা সরকারি নির্দেশনা মেনে তাঁদের সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দিয়েছেন মন্ত্রণালয়ে। বিভাগীয় ও ডিসি অফিসের কর্মকর্তারা সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছেন নিজ নিজ কর্মস্থলে।
বেশির ভাগ সরকারি কর্মকর্তাই সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছেন
- যাঁরা দেননি, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তির প্রস্তুতি
- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাড়ে ৬ হাজার কর্মকর্তার মধ্যে সম্পদের হিসাব দিয়েছেন ৫ হাজারের বেশি
- মন্ত্রণালয়ের মোট কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ৬৭ হাজার ৯৩১
উবায়দুল্লাহ বাদল

অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পরই সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, মন্ত্রণালয়টির অধীনে কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা অন্তত ৬৭ হাজার ৯৩১। এর মধ্যে ক্যাডার কর্মকর্তার সংখ্যা ছয় হাজার ৫৩৯।
উল্লিখিত বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান।
ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী গতকাল সোমবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিভাগীয় কমিশনার অফিসের স্টাফ ও বিভিন্ন জেলা কার্যালয়ের কর্মচারীদের বেশির ভাগই তাঁদের সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দিয়েছেন। আমরা তা সংরক্ষণ করছি। তবে এখন পর্যন্ত এর পরিমাণ কত তা বলতে পারব না। এই পরিসংখ্যান পেতে হয়তো আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।’
প্রায় অভিন্ন কথা বলেছেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার। তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্যাডার কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব আমরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। নন-ক্যাডার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নথি আমাদের কাছেই রয়েছে। এগুলোর পরিমাণও অনেক বেশি। এখনো সেগুলোর হিসাব-নিকাশ করা হয়নি। মনে হচ্ছে, সবাই হিসাব দিয়েছেন।’
বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়গুলোর মতো জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অবস্থাও। বেশির ভাগ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জানিয়েছেন, তাঁদের কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রায় সবাই সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দিয়েছেন। কারা জমা দেননি তাঁদের বিষয়েও এখন খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে।
জানতে চাইলে পঞ্চগড়ের ডিসি মো. সাবেত আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের কার্যালয়ের প্রায় সব কর্মচারী তাঁদের সম্পদের হিসাব সরকারের নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দিয়েছেন। আমরা সেগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। তার পরও যদি কেউ না দিয়ে থাকেন তাহলে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনব এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
শেরপুরের ডিসি অফিসের বেশির ভাগ সরকারি কর্মচারী সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন ডিসি তরফদার মাহমুদুর রহমান। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের বেশির ভাগ স্টাফই সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছেন। আমরা এখনো তা হিসাব করে দেখার সময় পাইনি। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কেউ সম্পদের হিসাব না দিলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সম্পর্কিত খবর

শাহজালালে প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে দুজন সঙ্গী প্রবেশের নির্দেশনা
নিজস্ব প্রতিবেদক

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগমন ও বহির্গমন প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে সর্বোচ্চ দুজন সঙ্গী প্রবেশ করতে পারবেন—এমন নির্দেশনা জারি করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
এই নির্দেশনা আগামী রবিবার (২৭ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে। বিমানবন্দর এলাকার ডিপারচার ড্রাইভওয়ে ও অ্যারাইভাল ক্যানোপিতে যাত্রীপ্রতি সর্বোচ্চ দুজন ব্যক্তি ভেতরে প্রবেশের অনুমতি পাবেন।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক রাখা, যানজট নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়, বিমানবন্দর এলাকায় আসা সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল ও কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
যানজট ও নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের পদক্ষেপকে জরুরি বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
বিমানবন্দর সূত্র বলছে, প্রয়োজনে এই নিয়ম আরো কড়াকড়ি করা হতে পারে। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণসহ পরিচয়পত্র রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনার মামাতো ভাই হিরা কারাগারে
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার আমির হোসেন হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামাতো ভাই শেখ ওয়ালিদুর রহমান হিরাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত এই আদেশ দেন।
এদিন হিরাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক মো. মাসুদ রানা তাঁকে কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

দেড় দশকে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসে’ নিহতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের ‘সন্ত্রাসী’ হামলা এবং তৎকালীন ‘সরকারের নির্দেশে’ রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাবা মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ এবং মামা মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই নির্দেশ দেন।
সাক্ষাতে আবরার ফাহাদের পরিবার দাবি জানায়, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের তালিকা তৈরি করে প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। একই সঙ্গে আবরার হত্যা মামলার বিচার দ্রুত শেষ করতে সরকারের উদ্যোগ চান তাঁরা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা পুরো জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। এ ঘটনার বিচার অবশ্যই শেষ হবে। গণ-অভ্যুত্থানের আগের ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ও তাদের সংগঠনের হাতে যারা প্রাণ হারিয়েছে, তাদের প্রতিটি ঘটনার সঠিক তদন্ত হবে। তৎকালীন সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে যে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছে, সেগুলোও তদন্তের আওতায় রয়েছে।
সাক্ষাৎকালে মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ বলেন, ‘দেশের স্বার্থে কথা বলার কারণেই আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অসম পানিবণ্টনের বিরুদ্ধেও সে কথা বলেছিল। আজও তার মা ছেলের জন্য কান্না করে।

হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজউকের প্লট
- রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান!
নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ১৫ চালককে প্লট দেওয়া হয়।
গত বুধবার কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে এই অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। গতকাল সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য জানান।
দুদক সূত্র জানায়, রাজউকের ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে নানা দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ঝিলমিল প্রকল্পের প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার ক্ষেত্রে চার শ্রেণিতে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বরাদ্দের ক্ষেত্রে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে চিঠি দিলে রাজউক তা বাস্তবায়ন করে। ওই প্রকল্পে ১৩/এ ধারার আওতায় বিভিন্ন সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২-এর গাড়িচালক, বিশেষ সহকারীর গাড়িচালক, সহকারী একান্ত সচিব-১-এর চালক, একান্ত সচিব-১ ও ২-এর চালক, প্রটোকল অফিসারের চালক, মুখ্য
সচিবের চালক, চিফ ফটোগ্রাফারের চালকসহ প্রায় ১৫ জন চালককে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়।
তবে এসআরও এবং রাজউক বিধিতে অসামান্য অবদানের কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া পাওয়া যায়নি। প্লট বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের কোন কোন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রয়েছে তার উল্লেখ পাওয়া যায়নি।