দেশ ডিজিটাল হলেও দেশের কৃষকরা এখনো পিছিয়েই রয়েছেন। দেশে নতুন নতুন প্রযুক্তি ও উন্নত বীজের সংস্থান থাকলেও কৃষকরা ফসল ফলান সেই কম উৎপাদনশীল বীজ দিয়েই। পুরনো প্রযুক্তিতেই করেন চাষাবাদ। যার ফলে কৃষকরা রাত-দিন পরিশ্রম করে ফসল ফলিয়েও আশানুরূপ ফল পাচ্ছেন না।
ধান, গম ও আলু উৎপাদন ৪০-১০০% বাড়ানো সম্ভব
- টাস্কফোর্স কমিটির প্রতিবেদন
এম আর মাসফি

টেকসই অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সম্পদ আহরণে গঠিত টাস্কফোর্স কমিটির প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন প্রযুক্তি ও উন্নত বীজের ব্যবহারে ফসলের উৎপাদন ৪০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব।
প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়, দেশে বর্তমানে প্রতি হেক্টরে ৪.৫ টন ধান উৎপাদন হয়, যা হেক্টরে ৪৫.৮ শতাংশ বাড়িয়ে ছয়-সাত টনে উন্নীত করা সম্ভব। একইভাবে গমের উৎপাদন হেক্টরে ৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে তিন টন থেকে পাঁচ টনে, ভুট্টার উৎপাদন হেক্টরে ৩৪.৮ শতাংশ বাড়িয়ে ৮.৯ থেকে ১২ টনে, পাটের উৎপাদন হেক্টরে ৪২.৯ শতাংশ বাড়িয়ে ২.১ থেকে ৩ টনে এবং আলুর উৎপাদন হেক্টরে ১০০ শতাংশ বাড়িয়ে ২০ থেকে ২৫ টন থেকে ৪০ থেকে ৫০ টনে উন্নীত করা সম্ভব।
এ বিষয়ে টাস্কফোর্স কমিটির প্রধান কে এ এস মুরশিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘উন্নত বীজ ও সঠিক প্রযুক্তি ব্যবহার না করার ফলে আমাদের দেশে ফসল উৎপাদন কম হচ্ছে। কৃষকরা এখনো ২০ থেকে ৩০ বছর আগের প্রযুক্তিই ব্যবহার করছেন। দেশে উন্নত জাতের বীজ থাকলেও তাঁরা সঠিক বীজ পাচ্ছেন না। তাঁদের কাছে সঠিক তথ্য যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে সরকারের তৎপরতা বাড়ানো দরকার।
টাস্কফোর্স দেশের কৃষিক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জ খুঁজে পেয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে জমির অভাব এবং জমির আকার কমে যাওয়া, শ্রমশক্তি হ্রাস এবং ৭০ শতাংশেরও বেশি কৃষকের জন্য সীমিত বাজার প্রবেশাধিকার। অনেক কৃষক ঋণের সুযোগ নিয়ে লড়াই করছেন এবং আধুনিক কৃষি পদ্ধতিতে বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনের অভাব রয়েছে। চাষাবাদে মূল সীমাবদ্ধতার মধ্যে রয়েছে নিম্ন-অনুকূল কৃষি পদ্ধতি, উন্নত বীজের সরবরাহ অপর্যাপ্ত, অপর্যাপ্ত সেচ এবং বন্যা ও খরার মতো জলবায়ুর চাপ।
কৃষি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় টাস্কফোর্স কমিটি বেশ কয়েকটি সুপারিশ প্রস্তাব করেছে, যার মধ্যে রয়েছে দক্ষতা উন্নত করার জন্য অ্যাক্সিয়াল ফ্লো পাম্প, দুই চাকার যান্ত্রিক রিপার এবং বিকল্প ভেটিং অ্যান্ড ড্রাইং সেচ গ্রহণ। সৌরশক্তিচালিত স্প্রিংকলার সেচের ব্যবহার সম্প্রসারণ জল ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে পারে, অন্যদিকে দেশীয় সার কারখানা আপগ্রেড এবং কৌশলগত সার মজুদ স্থাপনে বিনিয়োগ আমদানি নির্ভরতা হ্রাস করতে পারে। উচ্চ ফলনশীল ফসলের জাত চাষের প্রচার সামগ্রিক কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
সম্পর্কিত খবর

শাহজালালে প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে দুজন সঙ্গী প্রবেশের নির্দেশনা
নিজস্ব প্রতিবেদক

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগমন ও বহির্গমন প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে সর্বোচ্চ দুজন সঙ্গী প্রবেশ করতে পারবেন—এমন নির্দেশনা জারি করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
এই নির্দেশনা আগামী রবিবার (২৭ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে। বিমানবন্দর এলাকার ডিপারচার ড্রাইভওয়ে ও অ্যারাইভাল ক্যানোপিতে যাত্রীপ্রতি সর্বোচ্চ দুজন ব্যক্তি ভেতরে প্রবেশের অনুমতি পাবেন।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক রাখা, যানজট নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়, বিমানবন্দর এলাকায় আসা সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল ও কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
যানজট ও নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের পদক্ষেপকে জরুরি বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
বিমানবন্দর সূত্র বলছে, প্রয়োজনে এই নিয়ম আরো কড়াকড়ি করা হতে পারে। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণসহ পরিচয়পত্র রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনার মামাতো ভাই হিরা কারাগারে
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার আমির হোসেন হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামাতো ভাই শেখ ওয়ালিদুর রহমান হিরাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত এই আদেশ দেন।
এদিন হিরাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক মো. মাসুদ রানা তাঁকে কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

দেড় দশকে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসে’ নিহতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের ‘সন্ত্রাসী’ হামলা এবং তৎকালীন ‘সরকারের নির্দেশে’ রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাবা মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ এবং মামা মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই নির্দেশ দেন।
সাক্ষাতে আবরার ফাহাদের পরিবার দাবি জানায়, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের তালিকা তৈরি করে প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। একই সঙ্গে আবরার হত্যা মামলার বিচার দ্রুত শেষ করতে সরকারের উদ্যোগ চান তাঁরা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা পুরো জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। এ ঘটনার বিচার অবশ্যই শেষ হবে। গণ-অভ্যুত্থানের আগের ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ও তাদের সংগঠনের হাতে যারা প্রাণ হারিয়েছে, তাদের প্রতিটি ঘটনার সঠিক তদন্ত হবে। তৎকালীন সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে যে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছে, সেগুলোও তদন্তের আওতায় রয়েছে।
সাক্ষাৎকালে মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ বলেন, ‘দেশের স্বার্থে কথা বলার কারণেই আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অসম পানিবণ্টনের বিরুদ্ধেও সে কথা বলেছিল। আজও তার মা ছেলের জন্য কান্না করে।

হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজউকের প্লট
- রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান!
নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ১৫ চালককে প্লট দেওয়া হয়।
গত বুধবার কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে এই অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। গতকাল সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য জানান।
দুদক সূত্র জানায়, রাজউকের ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে নানা দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ঝিলমিল প্রকল্পের প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার ক্ষেত্রে চার শ্রেণিতে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বরাদ্দের ক্ষেত্রে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে চিঠি দিলে রাজউক তা বাস্তবায়ন করে। ওই প্রকল্পে ১৩/এ ধারার আওতায় বিভিন্ন সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২-এর গাড়িচালক, বিশেষ সহকারীর গাড়িচালক, সহকারী একান্ত সচিব-১-এর চালক, একান্ত সচিব-১ ও ২-এর চালক, প্রটোকল অফিসারের চালক, মুখ্য
সচিবের চালক, চিফ ফটোগ্রাফারের চালকসহ প্রায় ১৫ জন চালককে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়।
তবে এসআরও এবং রাজউক বিধিতে অসামান্য অবদানের কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া পাওয়া যায়নি। প্লট বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের কোন কোন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রয়েছে তার উল্লেখ পাওয়া যায়নি।