ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭
অনন্যর সেমিনার

নজরুলকে বাঁচিয়ে রাখা দরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
নজরুলকে বাঁচিয়ে রাখা দরকার

কাজী নজরুল ইসলাম মানুষের প্রতি অঙ্গীকার নিয়ে কবিতা লিখেছেন। সেই সময়ে শিল্প-সাহিত্যের পক্ষে যে ভূমিকা রাখার কথা ছিল তিনি ঠিক সেই ভূমিকায়ই আবির্ভূত হয়েছিলেন। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক যে পরিস্থিতি রয়েছে তাতে নজরুলের সৃষ্টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

অবিভক্ত বাংলার বৈরী সময়ে তিনি বলেছিলেন, “‘মোরা এক বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান

নজরুলকে তাই আমাদের বাঁচিয়ে রাখা দরকার।

গতকাল শুক্রবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে এই মন্তব্য করেছেন ইংরেজি দৈনিক নিউ এজের সম্পাদক নুরুল কবির। দ্রোহীর বিচার উত্তর-আধুনিক পরিপ্রেক্ষিত শীর্ষক সেমিনারে তিনি এই মন্তব্য করেন। ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে সেমিনারটির আয়োজন করে ছোটকাগজ অনন্য।

এতে প্রবন্ধ পাঠ করেছেন অনন্যর সম্পাদক ড. মাহবুব হাসান। আলোচক ছিলেন নুরুল কবির, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম, কবি ও কথাশিল্পী মজিদ মাহমুদ। কবি জাহাঙ্গীর ফিরোজের সভাপতিত্বে এ আয়োজন উপস্থাপনায় ছিলেন কবি জাকির আবু জাফর।

সেমিনারে নুরুল কবির বলেন, বরাবর উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে ছিলেন নজরুল।

তাঁকে পূর্ব বাংলার মানুষ যত ভালোবাসে পশ্চিম বাংলার মানুষ তত পছন্দ করে না। এটা সম্প্রদায়গত কারণে নয়। ব্রিটিশকাল থেকে ঐতিহাসিকভাবে পশ্চিম বাংলা নানাভাবে ক্ষমতার সুবিধাভোগী। তারা ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির সুবিধা ভোগ করেছে। অন্যদিকে পূর্ব বাংলার কৃষকরা আক্ষরিক অর্থে রক্তাক্ত হয়েছেন, লড়াই করেছেন।
তাই দ্রোহী সত্তার কারণে নজরুল পূর্ব বাংলার মানুষের ভালোবাসা বেশি পেয়েছেন।

নুরুল কবির আরো বলেন, নজরুলের কাব্যপ্রতিভা নিপীড়িত মানুষের পক্ষে ব্যবহার হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গে নিজের বসবাস হলেও পূর্ববাংলার মানুষের আকাঙ্ক্ষা তাঁর মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। যে ইতিহাসের পথ দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ এসেছে, সে পথে তিনিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

মোহাম্মদ আজম বলেন, নজরুল যখন সাহিত্যচর্চা করছেন তখন উত্তাল সময় ছিল। রাজনৈতিকতাই ছিল তাঁর প্রধান তৎপরতা। আমাদের অভ্যুত্থানে নজরুলই এককভাবে ব্যবহৃত কবি। তাঁর লেখাপত্রই সবচেয়ে বেশি উদ্বুদ্ধ করেছে। দেয়ালে তাঁর পঙক্তি দিয়ে চিকামারা হয়েছে। নানা কারণে তিনি বাংলাদেশের প্রধান কবি।

উত্তরাধুনিকতা আজ থেকে অর্ধশত বছর আগে ইউরোপে আবির্ভাব হয়েছে। নজরুলকে উত্তরাধুনিক ধরনে পাঠ করার অনেক সুযোগ আছে মন্তব্য করে মোহাম্মদ আজম বলেন, নজরুলকে বুঝতে ভিন্ন নন্দনতাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন হয়।

এ কারণে বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাসের বইগুলোতে নজরুলপাঠের জন্য খুব অল্প কয়েক পৃষ্ঠাই বরাদ্দ করা হয়েছে। নীতি ও সমাজ পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষায়ও

নজরুল ছিলেন দ্রোহী। এ কারণে তাঁর কবিতায় শান্ত, সৌম্যতার পরিবর্তে বীভৎস ও বিদ্রোহ রস বেশি। আধুনিকতায় কবিতায় চিত্রকর্মের প্রাধান্য। নজরুলের কবিতা উচ্চকণ্ঠে পড়তে

হয় এবং অনেক কবিতা বহুজনে মিলে পড়ত হয়।

নজরুল গবেষক ও কবি মজিদ মাহমুদ বলেন, নজরুলের বিদ্রোহী সত্তা যত দিন বাঙালি লালন করবে তত দিন আমরা সবাই বাঙালি। তিনি বাঙালির আকাঙ্ক্ষার ধন। তাঁর মাঝেই রয়েছে কাঙ্ক্ষিত বাংলা। আমাদের সংঘাত, বিরোধ, বণ্টন সব ক্ষেত্রে নজরুল দার্শনিক পথ দেখাতে পারেন। নজরুল ছাড়া আমাদের মুক্তি নেই। তাঁকেই আমাদের রাজনৈতিক দার্শনিক হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে কবি জাহাঙ্গীর ফিরোজ বলেন, যত দিন যুদ্ধ, সংঘাত, নিপীড়ন থাকবে, তত দিন নজরুল প্রাসঙ্গিক থাকবেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শাহজালালে প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে দুজন সঙ্গী প্রবেশের নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শাহজালালে প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে দুজন সঙ্গী প্রবেশের নির্দেশনা

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগমন ও বহির্গমন প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে সর্বোচ্চ দুজন সঙ্গী প্রবেশ করতে পারবেন—এমন নির্দেশনা জারি করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

এই নির্দেশনা আগামী রবিবার (২৭ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে। বিমানবন্দর এলাকার ডিপারচার ড্রাইভওয়ে ও অ্যারাইভাল ক্যানোপিতে যাত্রীপ্রতি সর্বোচ্চ দুজন ব্যক্তি ভেতরে প্রবেশের অনুমতি পাবেন।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক রাখা, যানজট নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় আরো বলা হয়, বিমানবন্দর এলাকায় আসা সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল ও কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

যানজট ও নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের পদক্ষেপকে জরুরি বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

বিমানবন্দর সূত্র বলছে, প্রয়োজনে এই নিয়ম আরো কড়াকড়ি করা হতে পারে। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণসহ পরিচয়পত্র রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য

শেখ হাসিনার মামাতো ভাই হিরা কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনার মামাতো ভাই হিরা কারাগারে

রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার আমির হোসেন হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামাতো ভাই শেখ ওয়ালিদুর রহমান হিরাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত এই আদেশ দেন।

এদিন হিরাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক মো. মাসুদ রানা তাঁকে কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। গত বুধবার ভাটারা এলাকা থেকে শেখ ওয়াহিদুর রহমান হিরাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মন্তব্য

দেড় দশকে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসে’ নিহতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দেড় দশকে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসে’ নিহতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

দেশে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের ‘সন্ত্রাসী’ হামলা এবং তৎকালীন ‘সরকারের নির্দেশে’ রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাবা মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ এবং মামা মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই নির্দেশ দেন।

সাক্ষাতে আবরার ফাহাদের পরিবার দাবি জানায়, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের তালিকা তৈরি করে প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। একই সঙ্গে আবরার হত্যা মামলার বিচার দ্রুত শেষ করতে সরকারের উদ্যোগ চান তাঁরা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা পুরো জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। এ ঘটনার বিচার অবশ্যই শেষ হবে। গণ-অভ্যুত্থানের আগের ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ও তাদের সংগঠনের হাতে যারা প্রাণ হারিয়েছে, তাদের প্রতিটি ঘটনার সঠিক তদন্ত হবে। তৎকালীন সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে যে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছে, সেগুলোও তদন্তের আওতায় রয়েছে।

সরকার এরই মধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।

সাক্ষাৎকালে মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ বলেন, ‘দেশের স্বার্থে কথা বলার কারণেই আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অসম পানিবণ্টনের বিরুদ্ধেও সে কথা বলেছিল। আজও তার মা ছেলের জন্য কান্না করে।

 

মন্তব্য

হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজউকের প্লট

    রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান!
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজউকের প্লট

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ১৫ চালককে প্লট দেওয়া হয়।

গত বুধবার কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে এই অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। গতকাল সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য জানান।

দুদক সূত্র জানায়, রাজউকের ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে নানা দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ঝিলমিল প্রকল্পের প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার ক্ষেত্রে চার শ্রেণিতে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বরাদ্দের ক্ষেত্রে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে চিঠি দিলে রাজউক তা বাস্তবায়ন করে। ওই প্রকল্পে ১৩/এ ধারার আওতায় বিভিন্ন সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২-এর গাড়িচালক, বিশেষ সহকারীর গাড়িচালক, সহকারী একান্ত সচিব-১-এর চালক, একান্ত সচিব-১ ও ২-এর চালক, প্রটোকল অফিসারের চালক, মুখ্য
সচিবের চালক, চিফ ফটোগ্রাফারের চালকসহ প্রায় ১৫ জন চালককে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়।

তবে এসআরও এবং রাজউক বিধিতে অসামান্য অবদানের কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া পাওয়া যায়নি। প্লট বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের কোন কোন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রয়েছে তার উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ