সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে দুর্বৃত্তরা রাজধানীর রামপুরা, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী, বনানী, মিরপুর, উত্তরাসহ যেসব এলাকায় বেশি নাশকতা চালিয়েছে, সেসব এলাকার বাসিন্দাসহ পুরো ঢাকাবাসীর মধ্যেই সশস্ত্র বাহিনী নামার পর স্বস্তি ফিরেছে। তবে দুর্বিষহ গত কয়েক দিনের দৃশ্য মনে করলে এখনো অনেকে আঁতকে ওঠেন বলে জানিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন উত্তরার বাসিন্দা বজলুর রশিদ।
তিনি বলেন, ‘১৭ থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত দুর্বৃত্তদের যে অরাজকতা দেখেছি, তাতে খুবই ভয়ে ছিলাম।
দুই দিন পুরো সময় ঘরবন্দি ছিলাম। কিন্তু সেনাবাহিনী নামার পর দেখলাম পরিস্থিতি ধীরে ধীরে শান্ত-স্বাভাবিক হতে থাকে। এখন মনে হচ্ছে পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক। অফিস করছি, বাজারে যাওয়াসহ ঘোরাফেরা সব কিছুই করছি।’ শুধু বজলুর রশিদ নন, রাজধানীর মিরপুর, রামপুরা, যাত্রাবাড়ী, বাড্ডাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এবং বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপকালে তারাও বজলুর রশিদের মতোই কথা বলেছে। তারা জানায়, সশস্ত্র বাহিনী মাঠে নামার পর দ্রুতই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে। এখন সড়কে চলাচল ও নিত্যদিনের কাজে স্বস্তি এসেছে তাদের মধ্যে। এ জন্য সেনাবাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও আনসার ভিডিপির সদস্যরা তৎপর থাকায় সার্বিক পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক বলে মনে করে তারা।
দিনের গুরুত্বপূর্ণ সময় কারফিউ শিথিল হওয়ায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে শিল্প-কারখানা, সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, শপিংমল, রেস্তোরাঁ, ফুটপাতের সব ধরনের দোকান খুলেছে। এ ছাড়া চিড়িয়াখানাসহ সোমবার থেকে রাজধানী ঢাকার কয়েকটি সিনেমা হলও চালু করা হয়েছে।
রাজধানীর নতুন বাজার এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী জুনায়েদ শাহ বলেন, ‘নাশকতার ঘটনায় সেনাবাহিনী মাঠে নামার পর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। কারফিউ শিথিলে বর্তমানে আমাদের কার্যক্রম পুরোদমে চলছে।’ কারফিউ চলাকালে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সেনাবাহিনী তল্লাশিচৌকি (চেকপোস্ট) কার্যকর রেখেছে।
প্রয়োজন অনুসারে টহল এবং ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, জনগণের স্বার্থে ও রাষ্ট্রের যেকোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে।