সারা দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে পোশাক শ্রমিক, দিনমজুর, ছাত্রসহ শতাধিক মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি। একই সঙ্গে কিশোর হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজের (১৭) রিমান্ড, কোটা সংস্কার আন্দোলনের পাঁচজন সমন্বয়ককে ডিবির হেফাজতে নেওয়া এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অমানবিক নির্যাতনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল রবিবার বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার ও সহসভাপ্রধান অঞ্জন দাস যৌথ বিবৃতিতে এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
নেতারা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে সারা দেশে যেভাবে হত্যাকাণ্ড চলেছে, তা থেকে পোশাক শ্রমিক ও দিনমজুররাও রেহাই পাননি।
প্রাণ হারিয়েছে ছাত্র এবং চার থেকে ১০ বছরের শিশুরাও। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ রকম হত্যাকাণ্ডের নজির নেই।
বাড্ডার পোশাক শ্রমিক ইয়ামিন চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জের শ্রমিক মো. রাসেল, ময়মনসিংহের পোশাক শ্রমিক মো. জামান মিয়া, সাভারের পোশাক শ্রমিক শুভ শীল, গাজীপুরের কাপাসিয়ার পোশাক কারখানার উৎপাদন ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন গুলিতে নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চারজন ১৯ জুলাই এবং শুভ শীল ২০ জুলাই গুলিবিদ্ধ হন।
পরে চারজন ঢাকা মেডিক্যালে এবং শুভ শীল সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
পোশাক শ্রমিক, শ্রমজীবী মানুষ, ছাত্র ও শিশুদের নির্মমভাবে গুলি করে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি। সংগঠনটির ভাষ্য, সরকারকে এই হত্যাকাণ্ডের দায় নিয়ে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সব তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ছাত্র, পোশাক শ্রমিক ও শ্রমজীবী মানুষের মৃত্যুর খবর শ্রমিকদের মনে গভীর ক্ষত ও শঙ্কা সৃষ্টি করেছে। সংগঠনটির নেতারা নিহত শ্রমিক, শ্রমজীবী মানুষ, ছাত্র ও শিশুদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। তাঁরা অবিলম্বে দেশের অর্থনীতির প্রাণ পোশাক শ্রমিক ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দাবি করেন।
ঢাকা কলেজের ছাত্র হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজের রিমান্ড এবং আন্দোলনকারী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, জিজ্ঞাসাবাদ ও রিমান্ডের নামে নির্মম নির্যাতন অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। তারা আরো বলেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন এখন শুধু কোটায় সীমাবদ্ধ নেই; এটি সারা দেশে গণতন্ত্রহীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাহীনতার প্রশ্ন সামনে এনেছে।