নওগাঁর মান্দা ও পত্নীতলা উপজেলায় বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে আরো দুজন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ ও ভোলাহাটে মারা গেছে শিশুসহ তিনজন। এ ছাড়া নাটোরের নলডাঙ্গা, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ এবং চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে একজন করে মোট তিনজন মারা গেছে।
বজ্রপাতে শিশুসহ ৯ জনের মৃত্যু
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

নওগাঁ : মান্দা ও পত্নীতলা উপজেলায় গতকাল বিকেলে বজ্রপাতে তিনজন মারা গেছে। পত্নীতলা থানার ওসি মোজাফফর হোসেন জানান, উপজেলার নাগর গোলা গ্রামে খাদেমুল (৫০) এবং গাহন গ্রামে মনিকা (৩৫) নামের দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মান্দা থানার ওসি মোজ্জামেল হক জানান, উপজেলার ভোলাম গ্রামে ধান শুকানোর কাজ করছিলেন শামসুল আলম (৩৪)। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ : শিবগঞ্জ পৌরসভার আলীডাঙ্গা পদ্মা কবরস্থানসংলগ্ন এলাকার সুভাস ভকতের স্ত্রী ববি ভকত (৩২) এবং উপজেলার পাকা ইউনিয়নের দক্ষিণপাকা নিশিপাড়ার এরশাদ আলীর মেয়ে কবিতা খাতুন (৮) বজ্রপাতে মারা যায়। এদিকে একই জেলার ভোলাহাট উপজেলায় ঝড়বৃষ্টির সময় আম কুড়াতে গিয়ে একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
নাটোর : নলডাঙ্গায় বারনই নদীতে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে মো. কামরুল হোসেন (৩৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় মো. মজনু (৪০) নামের অন্য একজন আহত হয়েছেন। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার কোমরপুর এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া কামরুল হোসেন উপজেলার কোমরপুর গ্রামের মো. লুৎফর রহমানের ছেলে।
পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) : পীরগঞ্জে বজ্রপাতে লিপি আকতার নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুরে উপজেলার রনশিয়া গ্রামে এই দুর্ঘটনা ঘটে। লিপি ওই গ্রামের ফিরোজ্জামানের স্ত্রী।
সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম) : সন্দ্বীপে বজ্রপাতে রাফি (১৪) নামের এক মাদরাসাছাত্র মারা গেছে। রাফি গাছুয়া গ্রামের হাদিয়ারগো বাড়ির জামালের ছেলে। জানা গেছে, গতকাল সকালে রাফি গাছুয়া হক সাহেবের বাজার গোপাটে চর এলাকায় ফুটবল খেলতে যায়। অন্য ছেলেদের সঙ্গে খেলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে রাফি ঘটনাস্থলে মারা যায়।
সম্পর্কিত খবর

মা বললেন ‘ও বাবা, আমার রায়েশা কই’
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিকেল ৩টা। চারদিকে হৈচৈ। একটির পর একটি অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকছে আর বের হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ছাড়া কাউকেই ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

দুর্ঘটনার খবর বিশ্ব গণমাধ্যমে
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের এ খবর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বেশ গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের খবর জানিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি ‘ঢাকায় স্কুলে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১৬’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি স্কুল ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ১৯, আহত হয়েছে শতাধিক। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বহরে থাকা চীনের তৈরি একটি এফ-৭ যুদ্ধবিমান প্রশিক্ষণ মহড়া চলাকালে বিধ্বস্ত হয়েছে।
মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার বলেছে, বাংলাদেশে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। ঢাকার একটি কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইংরেজি দৈনিক গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উত্তরে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত ও আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
এ ছাড়া মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউজ উইক, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে এক্সপ্রেস, ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বাংলাদেশের এই বিমান বিধ্বস্তের খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর অভিমত
৭ শিশুর পরিচয় শনাক্তে লাগবে ডিএনএ পরীক্ষা
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, যে ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছেন, তারা সবাই শিশু। এর মধ্যে সাতজনের লাশ শনাক্ত করা যায়নি। তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা লাগবে।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। সায়েদুর রহমান বলেন, তাঁদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৮৮ জন হাসপাতালে ভর্তি আছে। প্রাথমিক মূল্যায়নে ২৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ সময় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেন, আজ তাদের রক্তের প্রয়োজন নেই। আগামীকাল (মঙ্গলবার) রক্তের প্রয়োজন হবে। তাই আজ আর কারো কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে না।
নাসির উদ্দীন বলেন, ইনফেকশন (সংক্রমণ) হলে মৃত্যুঝুঁকি বাড়তে পারে।

মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত
২০ জন শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়ে চিরবিদায় নিলেন শিক্ষিকা মেহরিন
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষিকা মেহরিন চৌধুরীর বীরত্ব ও আত্মত্যাগ এখন দেশের মানুষের হৃদয়ে গভীর রেখাপাত করছে। প্রাণপণ চেষ্টা করে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীকে মৃত্যুর মুখ থেকে রক্ষা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর নিজের। তাঁর ভাই মানাফ এম চৌধুরী কালের কণ্ঠকে টেলিফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গতকাল সোমবার দুপুরে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত এবং শতাধিক শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
৪৬ বছর বয়সী মেহরিন চৌধুরী শতভাগ দগ্ধ অবস্থায় ওই ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বার্ন ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি, তাঁর মৃত্যুর খবর সামাজিক মাধ্যমে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার পরপরই ক্লাসরুম থেকে শিক্ষার্থীদের দ্রুত সরিয়ে ফেলেন মেহরিন। তাদের নিরাপদে বের করে দিতে গিয়ে নিজে আর সময়মতো বের হতে পারেননি। উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া এক সেনা সদস্য বলেন, ‘ম্যাডাম ভেতরে ঢুকে গিয়ে বাচ্চাগুলারে বের করে দিছেন, তারপর উনিই বের হতে পারেননি।’ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষিকা মেহরিনের সাহসিকতায় অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীর প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।