ঢাকার ধামরাইয়ে বাসায় গ্যাস লিকেজ থেকে আগুনে দগ্ধ এক পরিবারের চারজনের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গত রবিবার রাত থেকে গতকাল সোমবার সকাল পর্যন্ত ১২ ঘণ্টার মধ্যে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁদের মৃত্যু হয়। দগ্ধ অন্যজন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক স্বাস্থ্য সহকারী মো. নুরুল ইসলাম নান্নু (৬২), তাঁর স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৪৫) ও তাঁদের ছেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী আল হাদী সোহাগ (১৯)।
রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নুরুল ইসলাম, গতকাল ভোর পৌনে ৪টার দিকে সুফিয়া বেগম ও দুপুর পৌনে ১২টায় সোহাগ মারা যান। এ ঘটনায় নুরুল-সুফিয়ার মেয়ে নিশরাত জাহান সাথী (২২) ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থার উন্নতি হলেও আশঙ্কা কাটেনি। তিনি গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
পরিবারটি ধামরাই পৌর এলাকার মোকামটোলা মহল্লার ইতালিপ্রবাসী ইব্রাহিম হোসেনের চারতলা ভবনের নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম এ তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, সুফিয়া বেগমের শরীরের ৮০ শতাংশ, নুরুল ইসলামের ৪৮ শতাংশ ও ছেলে সোহাগের শরীরের ৩৮ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। বেঁচে থাকা পরিবারটির একমাত্র সদস্য সাথীর শরীরের ১৬ শতাংশ পুড়েছে।
‘আমার অনেক বয়স অইছে। আমারই যাওয়ার সময় অয়্যা গেছে। আমার পুলা, পুলার বউ ও নাতি রাইখ্যা আল্লাহ তুমি আমারে নিয়ে যাইত্যা। আমার কইলজ্যার টুকর্যাগো তুমি আগুনে পুইড়্যা মারলা।’ গতকাল বিকেলে খাটে শুয়ে এভাবেই বিলাপ করছিলেন মৃত নুরুল ইসলামের মা জামেলা খাতুন (১১৭)।
সুফিয়া বেগমের ভাই আজিজুর রহমান জানান, গতকাল তিনজনের মরদেহ ধামরাইয়ের বাইশাকান্দা ইউনিয়নের বাঘাইর গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ মার্চ দিবাগত রাতে এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডার লিকেজ হয়ে ফ্ল্যাটটিতে গ্যাস জমে ছিল। সুফিয়া বেগম সাহরির সময় রান্নাঘরের চুলায় রান্নার জন্য আগুন জ্বালাতেই তা পুরো ফ্ল্যাটে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পরিবারের চার সদস্যই দগ্ধ হন। এরপর তাঁদের উদ্ধার করে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
টঙ্গীতে কারখানার এসি বিস্ফোরণে দগ্ধ ৪
গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি কারখানায় এসি মেরামতের সময় বিস্ফোরণে চারজন দগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত তিনজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) পাঠানো হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে টঙ্গীর পাগাড় মিরাশপাড়া এলাকার নীহারিকা নামের একটি কারখানায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।