<p>ইজি বাইকে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে মহাসড়কে বাসের চাপায় আহত হয় সব যাত্রী। এ ঘটনায় দুজন মারা গেলেও বেঁচে যায় ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মুশল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী রুবিনা আক্তার। তাকে বাচাতে সহায়সম্বল বিক্রি করেন দিনমজুর বাবা। কিন্তু এতেই শেষ নয়, পঙ্গু হওয়া ছাড়াও দুই চোখ অন্ধ হয়ে যায় রুবিনার। ঢাকায় আট মাস ধরে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে এলেও মন ছটফট করে স্কুলে যাওয়ার।</p> <p>গত বৃহস্পতিবার বাবার সঙ্গে স্কুল আঙিনায় গেলে ফটকের সামনে একটি প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে রুবিনা। এ সময় সহপাঠীরা ঘিরে ধরলেও রুবিনা কাউকে দেখতে পায়নি। দুর্ঘটনায় মাথা ছাড়াও চোখ ও মুখমণ্ডলে আঘাতের কারণে দেবে গেছে দুই চোখ। এমন এক অবস্থায় চিরচেনা মুখ দেখে সহপাঠী অনেকেই আঁতকে ওঠে। তারা কাছে গিয়ে কথা বলে রুবিনার সঙ্গে। রুবিনা দেখতে না পেলেও সহপাঠীদের কণ্ঠ শুনেই বলে দিচ্ছে কে তার সঙ্গে কথা বলছে, খোঁজখবর নিচ্ছে। এমনকি সহপাঠীকে ধরে বুকে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছে। এমন দৃশ্য দেখে উপস্থিত অনেকেই কেঁদে ফেলে।</p> <p>এ সময় রুবিনা বলে, ‘আমি তরারে কি আর দেখতারতাম না? আমি কি পড়ালেহা করতাম না? কই তরা তো কিছু কছ না, আমার লাইগ্যা একটা ব্যবস্থা কর। আমার বাবার পক্ষে তো সম্ভব না। কইত্যে টেহা দিব? আমি পড়তাম চাই, ইস্কুলে আইতাম চাই। এই বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে।’ রুবিনার দরিদ্র বাবা রুবেল মিয়া জানান, যে বাস দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে সেই বাসের মালিক কোনো ব্যবস্থা করেননি। স্থানীয় যুবসমাজের উদ্যোগে প্রায় দেড় লাখ টাকার ব্যবস্থা করা হলেও এখন হাতে কানাকড়িও নেই। চিকিৎসক বলেছেন রুবিনা আবার দেখতে পারবে। তবে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানো প্রয়োজন।</p> <p>জানা যায়, রুবিনা নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের ধরগাঁও গ্রামের কৃষক রুবেল মিয়ার মেয়ে। ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট সকালে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে তাকে বহন করা ইজি বাইককে চাপা দেয় এমকে সুপার নামের বাস। এতে দুজন নিহত হয়। রুবিনা বেঁচে গেলেও তার ডান হাত, বাঁ পা ও নাক ভেঙে যায়। তা ছাড়া মাথায় আঘাত পাওয়ায় কপালে প্রায় ২০টি সেলাই লাগে। পরে তার দুই চোখই অন্ধ হয়ে যায়। রুবিনার চোখের চিকিৎসা করাতে আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন। সাহায্য পাঠানোর জন্য রুবিনার বাবার মোবাইল ফোন নম্বরে (বিকাশ) ০১৯৩১৬৪৮৭৫৬ যোগাযোগ করা যাবে।</p>