সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত গুমানী নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করে বাঁশের ঘের তৈরি করে অবৈধ সোঁতি জাল দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। এতে করে মৎস্য সম্পদ ধ্বংস ছাড়াও নৌচলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। চলনবিলের পানি এ নদী দিয়ে নিষ্কাশিত না হওয়ায় শত শত বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষেও সমস্যা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগ দিলেও প্রশাসন এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ
বাঁধ দিয়ে মাছ ধরায় জলাবদ্ধতা
- * চলনবিলের পানি নিষ্কাশনে বাধা * বোরো ধান চাষে প্রতিবন্ধকতা * ধ্বংস হচ্ছে মৎস্যসম্পদ * এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগেও ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন
সনাতন দাশ, তাড়াশ-রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ)

অভিযোগ সূত্রে প্রকাশ, আত্রাই নদীর শাখা নদী গুমানী। বৃহত্তর চলনবিল অঞ্চলের মানুষ এ নৌপথে তাড়াশ উপজেলার ধামাইচ হাট, গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় হাট, সিংড়া উপজেলার সিংড়ার হাট ও আত্রাই উপজেলার আত্রাই ও আহসানগঞ্জ হাট থেকে বিভিন্ন পণ্য আনা-নেওয়া করে থাকে। এ ছাড়া তাড়াশ ও গুরুদাসপুর উপজেলার চলনবিল অংশের বিভিন্ন মাঠ থেকে দ্রুতবেগে পানি নিষ্কাশিত হয় এ নদী দিয়েই।
সম্প্রতি নদীতে পানি কমে যাওয়ায় মাসখানেক আগে তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের নাদোসৈয়দপুর এলাকার আক্কেলের ঘাট অংশে স্থানীয় প্রভাবশালী বিন্নাবাড়ি গ্রামের কোবাদ আলীর ছেলে মো. বকুল ও বাদশা মিয়ার ছেলে খায়রুল ইসলাম বাঁশ, চাটাই, পলিথিন ও নাইলনের জালের সাহায্যে মাটি আটকে বাঁধ নির্মাণ করে সোঁতি জাল দিয়ে অবাধে মাছ ধরছেন।
তাড়াশ উপজেলার নাদোসৈয়দপুর গ্রামের ব্যবসায়ী আলী আক্কাস বলেন, ‘নদীতে বাঁধ দিয়ে সোঁতি জাল পাতায় নৌচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সোঁতি জালের কারণে ভাটিতে ঘূর্ণির সৃষ্টি হয়ে নদীর পার ভেঙে যাচ্ছে।
কুন্দইল গ্রামের বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, বিলের পানি নামে গুমানী নদী দিয়ে। কিন্তু সেখানে সোঁতি জাল দিয়ে মাছ ধরার কারণে বিল থেকে পানি নামছে ধীরগতিতে। এ কারণে বোরো আবাদ করতে তাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এদিকে বোরো চাষে দেরি হলে ধান বৃষ্টির পানিতে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। এ বিষয়ে তারা প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগে অভিযোগ দিলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
সরেজমিনে গুমানী নদীর আক্কেলের ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে সোঁতি জাল পাতা হয়েছে। এ সোঁতি জালে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে নদীর বিভিন্ন অংশে যেটুকু গভীরতা থাকে, তা থেকেই মা মাছ বংশবিস্তার করে থাকে। কিন্তু সোঁতি জালের কারণে মাছের বিভিন্ন প্রজাতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। নৌচলাচল করতে না পারায় পণ্য আনা-নেওয়া করতে হচ্ছে সড়কপথে। ফলে এ অঞ্চলে ব্যবসায়ীরা সড়কে বাড়তি খরচে মালামাল আনা-নেওয়া করছেন।
এ প্রসঙ্গে সোঁতি জালের মালিক বকুল ও খায়রুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি। পরে বকুলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন বন্ধ করে দেন।
তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মসগুল আজাদ জানান, এখন পর্যন্ত তিনি কোনো অভিযোগ পাননি। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে কথা বলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগপ্রাপ্তির কথা স্বীকার করে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাকে এ উপজেলা থেকে বদলি করা হয়েছে। পরবর্তীতে যিনি আসবেন তিনি আইনগতভাবে দেখবেন।’
সম্পর্কিত খবর

প্রাথমিক শিক্ষকদের মহাসমাবেশ
চার দফা দাবি না মানলে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে টানা অনশন
নিজস্ব প্রতিবেদক

বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, পদোন্নতিসহ চার দফা দাবিতে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। গতকাল শুক্রবার মহাসমাবেশ থেকে দাবি আদায়ে সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাসেম বলেন, ‘আগামী ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চার দফা দাবি পূরণ করা না হলে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা টানা অনশন কর্মসূচি পালন করবেন। কোথাও কোনো ক্লাস-পরীক্ষা হবে না।
গতকাল সকাল থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হতে শুরু করেন দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আসা প্রাথমিকের সহকারী ও প্রধান শিক্ষকরা। সকাল ১১টার দিকে এই মহাসমাবেশ শুরু হয়।
দুপুর ২টার দিকে মহাসমাবেশের সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সভাপতি মো. আবুল কাসেম বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সূত্রে জেনেছি, রিট করা ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের জন্য দশম গ্রেড বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তাহলে যাঁরা মামলা করেননি, তাঁদের জন্য কবে দশম গ্রেড বাস্তবায়ন হবে? আমরা চাই, দেশের সব প্রধান শিক্ষক যেন সমানভাবে দশম গ্রেড পান। সহকারী শিক্ষকদের জন্য কনসালটেশন কমিটি ১২তম গ্রেডের প্রস্তাব দিয়েছে, অথচ আমাদের দাবি হচ্ছে ১১তম গ্রেড।’
প্রাথমিক শিক্ষকদের চার দফা দাবি হচ্ছে সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতন-ভাতা প্রদান; ২০১৪ সালের ৯ মার্চ থেকে সব প্রধান শিক্ষকের দশম গ্রেডে পদোন্নতির সরকারি আদেশ (জিও) জারি; চলতি দায়িত্বে থাকা সিনিয়র শিক্ষকদের শতভাগ পদোন্নতি নিশ্চিতকরণ এবং চাকরির ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদান।

জুলাই শহীদ রিজভীর প্রতি শ্রদ্ধা
শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে গণতান্ত্রিক-বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে হবে : সিপিবি
নিজস্ব প্রতিবেদক

চব্বিশের গণ-আন্দোলনের সময় ১৮ জুলাই রাজধানীর উত্তরায় পুলিশের গুলিতে শহীদ মাহমুদুল হাসান রিজভীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। এ সময় সিপিবি নেতারা বলেন, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে হবে। অবিলম্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের উত্তরা থানা কমিটির সদস্য শহীদ রিজভী স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।

শহীদ মুগ্ধর বাবা
জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে মানুষ স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছিল
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাধীনতার স্বাদ মানুষ জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে পেয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ মীর মুগ্ধর বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে এ দেশের মানুষ স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছিল। কিন্তু তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর দিয়াবাড়ীতে অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (এডাস্ট) অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত এক স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সংক্ষিপ্ত
ঢাকায় জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে প্রতীকী ম্যারাথন
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই যোদ্ধাসহ আন্দোলনে আহত ও নিহত পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে এক প্রতীকী ম্যারাথন গতকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ওই ম্যারাথন আয়োজন করা হয়। এই বিশেষ কর্মসূচিতে বিভিন্ন বয়সের প্রতিযোগীদের সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এক হাজার প্রতিযোগী নিয়ে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই প্রতীকী ম্যারাথনটি বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র থেকে শুরু হয়ে গণভবন, সংসদ ভবন, খামারবাড়ি হয়ে আবারও চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এসে শেষ হয়।