দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া পৃথক স্বর্ণপদক প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছেন মো. নূরুল হুদা নামের এক আইনজীবী। তিনি সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন। এর আগে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে ভালো ফলের স্বীকৃতিস্বরূপ এসব স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন।
গতকাল শনিবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ জানিয়েছেন নূরুল হুদা।
এ সময় অনিয়মের প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদক প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে নূরুল হুদা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে আর্থিক লেনদেন ও স্বজনপ্রীতির কারণে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে স্বর্ণপদক প্রত্যাখ্যান করছি। যথাযথ উপায়ে পদক ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
’
অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে নূরুল হুদা বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে প্রথম স্থান অর্জন করায় আমাকে ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদক এবং ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক দেওয়া হয়েছে। এরপর একই বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি পেয়ে আবেদন করি। তবে নিয়োগ বোর্ড বসার আগে বোর্ডের অন্যতম সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ-উপাচার্য চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া আমার স্ত্রীকে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের প্রস্তাব দেন। তাঁর ভাগ্নে ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গাজী তৌহিদুর রহমান কৌশলে আমার কাছ থেকে বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা নেন।
নিয়োগ বোর্ডের আরেক সদস্য ও আইন বিভাগের তৎকালীন সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল হান্নান আমার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ধার নেন। বিষয়গুলো নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য আব্দুস সোবাহানকে জানানো হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। প্রশ্নবিদ্ধ ও সুবিধাভোগী সদস্যদের নিয়ে গঠিত নিয়োগ বোর্ডের সুপারিশে তিনজনকে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়, যাদের সবার ফলাফল আমার চেয়ে কম।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষক নিয়োগে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত প্রার্থীদেরও অর্থ লেনদেন করতে হয় বলে ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। যা প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণপদকের অবমাননার শামিল।
তবে ইউজিসি এমন প্রায় ১৪টি তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিলেও এ পর্যন্ত দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’