২০২০ থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত (তিন বছর ১১ মাস) দুই হাজার ১৫০ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে চলতি বছরের ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৪৪৯ শিশু হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ২০২১ সালে ৫৯৬ এবং ২০২২ সালে ৫১৬ শিশু হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়।
গতকাল বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আইন ও সালিস কেন্দ্রসহ (আসক) ১০টি বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের শিশু অধিকার পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক সংলাপে এক গবেষণা প্রতিবেদনের এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
সংলাপে বলা হয়, শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে সচেতনতার বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে জাতীয় কর্মপরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন, সঠিক খাতে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ প্রদান এবং বাজেট বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ ছাড়া মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিশু অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার সুপারিশ তুলে ধরা হয় সংলাপে।
আসকের নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সালের সভাপতিত্বে সংলাপে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন সংস্থাটির কো-অর্ডিনেটর তামান্না হক রীতি।
বক্তব্য দেন সেভ দ্য চিলড্রেনের চাইল্ড প্রটেকশন অ্যান্ড চাইল্ড রাইটস গভর্ন্যান্সের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন এবং জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি।
গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে তামান্না হক রীতি জানান, সারা দেশে ২০২০ সালে এক হাজার ৭১৮, ২০২১ সালে এক হাজার ৪২৬, ২০২২ সালে এক হাজার ৮৮ এবং ২০২৩ সালে ৯৭১ শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ২০২৩ সালের এ পর্যন্ত শিক্ষকের নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২৩৯ জন শিক্ষার্থী। শিক্ষকের কাছে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে ২৮ শিশু।
এ বছর ৮১ শিশু শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তাদের মধ্যে বখাটেরা উত্ত্যক্ত করে ৫৬ শিশুকে। ২০২০ সালে এক হাজার ১৮, ২০২১ সালে ৭৭৪, ২০২২ সালে ৫৬১ এবং ২০২৩ সালের ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ২৯২ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ২০২৩ সালে ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছে ১৯ জন। ধর্ষণের শিকার তিনজন আত্মহত্যা করেছে।
সংলাপে জানানো হয়, এশিয়ার মধ্যে এখনো বাল্যবিবাহের শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ, যা মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশুস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। দেশের ৫১ শতাংশ কিশোরী বাল্যবিবাহের শিকার হচ্ছে এবং তাদের মধ্যে ২৭ শতাংশের বিয়ে হচ্ছে ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই। শিশু আইন ৯ বছরেরও বেশি সময় আগে পাস হলেও আইনের বিধিমালা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।