এখন জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। দ্রুত ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে হবে। গতকাল শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ‘ডেঙ্গুর পরিবর্তনশীল ধরন ও উপসর্গ’ শীর্ষক সেমিনারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এই পরামর্শ দেন।
সেমিনারে বলা হয়, দেশে ২০০০ সালে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব শুরু হয়।
তখন থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সাধারণ উপসর্গ ছিল জ্বর, কাশি ও মাথা ব্যথা। কিন্তু ২০২১ সালের পর ডেঙ্গুর উপসর্গে পরিবর্তন আসে। তখন পেট ব্যথা ও পাতলা পায়খানা হতো। এখনো এমনই চলছে।
সেমিনারে আরো বলা হয়, ডেঙ্গু হলে পর্যাপ্ত পানিজাতীয় খাবার এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। অযাচিত অ্যান্টিবায়োটিক সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে। এ সময়ে অ্যাসপিরিনজাতীয় ও ব্যথানাশক ওষুধ বন্ধ রাখতে হবে। বমি, পাতলা পায়খানা, পেট ব্যথা, শাসকষ্ট, শরীরে কোথাও রক্তপাত হলে দ্রুত হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।
চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্লাটিলেট অথবা রক্ত দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে। মশারি ব্যবহার, বাচ্চাদের ফুলহাতা জামা পরানোসহ বাড়ির আশপাশে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করতে হবে। সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশের ডেঙ্গু চিকিৎসার জাতীয় নীতিমালার প্রধান সম্পাদক অধ্যাপক কাজী তারিকুল ইসলাম।
সেমিনার শেষে কেবিন ব্লকের সাধারণ জরুরি বিভাগে ডেঙ্গু কর্নারের উদ্বোধন করা হয়।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশররফ হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক মো. টিটো মিয়া প্রমুখ।
ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ডেঙ্গু প্রথমবার হলে মৃত্যুহার কম। কিন্তু দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার হলে মৃত্যুহার বেশি। যারা ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন ধরনের রোগে ভুগছে, তাদের আরো বেশি সতর্ক হতে হবে।
ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘জ্বর হলে প্রয়োজন ছাড়া যেন বাড়তি টেস্ট এবং বারবার টেস্ট না দেওয়া হয়। ডেঙ্গুর কারণে প্লাটিলেট কমে গেলেই রক্ত দিতে হবে, এই ধারণা ভুল। আবার রক্ত দেওয়া যাবে না, এটাও ঠিক নয়।’