র্যাব হেফাজতে নওগাঁর ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চ আদালত থেকে গঠিত তদন্তদল রাজশাহী হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের সাক্ষ্য নিয়েছে। এর পাশাপাশি জেসমিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার বাদী রাজশাহীর স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) এনামুল হকেরও সাক্ষ্য নিয়েছে তারা।
নওগাঁ ও রাজশাহীতে তদন্ত শেষে দলটি গত বুধবার ঢাকায় ফিরে যায়। তদন্তে কী পাওয়া গেছে তা নিয়ে কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি দলের কোনো সদস্য।
তবে রাজশাহীর রাজপাড়া থানার ওসি কাজল নন্দি জানান, তদন্তদল তাঁদের থানায় এসে মামলার নথিসহ সুরতহাল প্রতিবেদন দেখেছে। তারা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র বর্মণের সঙ্গেও কথা বলেছে।
ওসি কাজল নন্দি বলেন, মামলার প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো তদন্তকারী দলকে দেখানো হয়েছে। তবে যেহেতু মামলাটি আদালতে বিচারাধীন, সে কারণে কোনো ডকুমেন্ট তাদের দেওয়া যায়নি আইনগত বাধার কারণে।
প্রশাসনের গঠিত তদন্তদলে ছিলেন নওগাঁর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আবু শামীম আজাদ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইমতিয়াজুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল করিম, সিভিল সার্জন আবু হেনা মো. রায়হানুজ্জামান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান।
তদন্তদলের অন্যতম সদস্য নওগাঁর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইমতিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘রাজশাহীতে গিয়ে জেসমিনের চিকিৎসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব চিকিৎসক, নার্সসহ ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক এবং মামলার বাদী এনামুলের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মন্তব্যগুলো আমরা লিখিত আকারে নিয়েছি। এগুলো তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হবে।
’
এদিকে র্যাবের একটি সূত্র জানায়, জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় র্যাব সদর দপ্তর থেকে গঠিত তিন সদস্যের একটি দল কয়েক দিন আগে রাজশাহীতে আসে। তারা রাজশাহী র্যাব-৫ সদর দপ্তরে প্রত্যাহার করা জয়পুরহাট ক্যাম্পের ১১ সদস্যের সাক্ষ্য নিয়ে গত বুধবার ঢাকায় ফিরে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাব-৫ রাজশাহী সদর দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মিডিয়া উইং কর্মকর্তা এএসপি তৌফিক বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না। আমি ভারপ্রাপ্ত হিসেবে আছি। স্যার ছুটিতে আছেন।
উনি এলে তাঁকে জিজ্ঞেস করবেন।’
প্রসঙ্গত, র্যাব-৫-এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের একটি দল গত ২২ মার্চ সকালে জেসমিনকে আটক করে। স্থানীয় সরকারের রাজশাহী বিভাগের পরিচালক মো. এনামুল হকের মৌখিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে নিয়েই র্যাব এ অভিযান চালায়। আটকের পরদিন ২৪ মার্চ সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেসমিন মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এনামুল হকের করা একটি মামলার কথা জানা যায়, যেটি রেকর্ডের সময় ২৩ মার্চ বিকেল। জেসমিন ও তাঁর কথিত সহযোগী আল-আমিনকে এতে আসামি করা হয়। আল-আমিনকে ২৬ মার্চ ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তিনি একজন মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট।