পুরুষের ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সে যেসব ক্যান্সার হয়, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় অণ্ডকোষের ক্যান্সার বা টেস্টিকুলার ক্যান্সার। এই ক্যান্সার আগাম শনাক্ত করার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন
অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম
মেডিক্যাল কলেজ
আমরা সাধারণত ফুসফুস, জরায়ু, গলা, মুখ, স্তন ও কোলন ক্যান্সারের কথা শুনে থাকি। তবে বয়স ও লিঙ্গ ভেদে অনেক ক্যান্সারের কথা আমরা সচরাচর মনে রাখি না। আমাদের মনোযোগ এড়িয়ে যায়।
অথচ এগুলোর আগাম লক্ষণ জানলে নিরাময় করা অনেকাংশেই সম্ভব। সচরাচর দেখা যায় না এমন একটি ক্যান্সার হলো অণ্ডকোষ বা টেস্টিকুলার ক্যান্সার। ৫৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ২০ থেকে ৩৪ বছরের মধ্যে এই ক্যান্সার হয়। ২৫০ জন পুরুষের মধ্যে একজনের এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পুরুষের জননগ্রন্থির এই অণ্ডকোষ দুটো ছোট ডিম্বাকৃতি যন্ত্র, যার কাজ হলো শুক্র আর পুং-হরমোন টেস্টোস্টেরন তৈরি করা। এরা রয়েছে শিশ্নের পেছনে অণ্ডকোষের থলিতে।
লক্ষণ
* অণ্ডকোষের একটি বা দুটির আকৃতি বড় বা ভিন্ন মনে হলে
* অণ্ডকোষের থলিতে খুব ব্যথা
* অণ্ডকোষের ফোলা ভাব বা ভার ভার অনুভূতি
* অন্ডকোষের মধ্যে বা চারধারে ব্যথা বা অণ্ডকোষের থলিতে বা ঊরু বা কুচকিতে এমনকি তলপেটে ব্যথা
* অণ্ডকোষের গুটি বা স্ফীতি। ব্যথা নাও থাকতে পারে।
* অণ্ডকোষের থলিতে অকারণে পানি জমা
* স্তনের টিসু বৃদ্ধি বা কোমলতা
* অণ্ডকোষের একটিতে ব্যথা বা অস্বস্তি। কারণ ক্যান্সার শুধু একটিতে হয়।
পরীক্ষা করার পাঁচ ধাপ
এর আগাম উপসর্গ জেনে নিয়ে নিজে নিজে অণ্ডকোষ পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে। অস্বাভাবিক কিছু দেখলে চিকিৎসককে দেখাতে হবে।
* কোনো পরিবর্তন আছে কি না, বা স্ফীতি আছে কি না দেখতে হবে
* দুটো হাত দিয়ে একটি একটি করে কাপের মতো ধরতে হবে অণ্ডকোষ দুটি
* বুড়ো আঙুল আর অন্য আঙুলগুলো দিয়ে নরম করে অণ্ডকোষকে ম্যাসাজ করতে হবে আর ঘোরাতে হবে অণ্ডথলিকে।
মনে হবে এ যেন খোসা ছাড়ানো সিদ্ধ ডিম।
* অণ্ডকোষের পেছনে আছে নলাকার কিছু জিনিস। এদের বলে এপিডিমিস, এরা বীর্যবাহী আর স্পারমেটিক কর্ড পুং-প্রজননতন্ত্রের অংশ। বুড়ো আঙুল আর অন্য আঙুল দিয়ে এদের অনুভব করুন।
* অণ্ডথলিতে কোনো শক্ত গুটি পাওয়া গেলে তা ডাক্তারকে জানাতে হবে।
পরীক্ষা করে কোনো অস্বাভাবিক কিছু দেখলে বা অনুভব করলে ডাক্তারের নজরে আনতে হবে।
বয়ঃসন্ধি হলে প্রতিমাসে একবার স্নানঘরে গিয়ে কাপড় খুলে গরম পানিতে গোসল করে এরপর পরীক্ষা করতে হবে।
আগাম শনাক্ত হলে একে সারানো সহজ।