ময়মনসিংহ শহরের প্রায় ২০০ বছরের পুরনো বাড়ি ভেঙে শিশু একাডেমি ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অনেকে দাবি করেছেন, বাড়িটি প্রখ্যাত লেখক সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের।
বাড়িটি ভাঙার বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মাঠ কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন জানান, এ সম্পর্কে তথ্য চেয়ে তিনি জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। তিনি জানান, এটি রায় পরিবারের ঐতিহাসিক বাড়ি এবং সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের নিবাস ছিল বলে তিনি বইয়ে জেনেছেন।
যদিও এটি এখনো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে তালিকাভুক্ত নয়, তবে এ বছর নতুন জরিপে এটি তালিকাভুক্ত হতে পারে। তিনি আপাতত এই ভবন ভাঙার কাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন।
এদিকে গত রাতে জেলা প্রশাসক মো. মুফিদুল হক ঘটনাস্থলে বাড়িটির প্রকৃত মালিকের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে যান। এ সময় তিনি ময়মনসিংহের স্থানীয় একাধিক বিশিষ্টজনের সঙ্গে কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, আজ বুধবার বাড়িটির প্রকৃত মালিক সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য তিনি স্থানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে বসবেন। এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে—আমরা গভীর দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করছি যে বাংলাদেশের ময়মনসিংহে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়ের পিতামহ এবং বিশিষ্ট সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর পৈতৃক সম্পত্তি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের মালিকানাধীন সম্পত্তিটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলা সাংস্কৃতিক নবজাগরণের প্রতীক ওই ভবনের ঐতিহাসিক মর্যাদা বিবেচনা করে ভাঙার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা, ভাঙার বিকল্প হিসেবে সাহিত্যের জাদুঘর এবং বাংলাদেশ ও ভারতের অভিন্ন সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে এর মেরামত ও পুনর্নির্মাণের বিকল্পগুলো পরীক্ষা করা বাঞ্ছনীয় হবে। ভারত সরকার এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, পুরনো এই ভবন একসময় শিশু একাডেমিরই অফিস ছিল। প্রায় ১০/১৫ বছর আগে ভবনটির দুরবস্থার জন্য শিশু একাডেমির অফিস এখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর ভবনটি পুরোপুরি বিধ্বস্ত ছিল। সম্প্রতি ভবনটি ভেঙে এখানে নতুন ভবন নির্মাণের সিদ্বান্ত নেয় শিশু একাডেমি।
প্রায় ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে এখানে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে। ভবন নির্মাণে আগে পুরনো ভবনটি ভাঙার কাজ চলছিল। তখনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভবনটি ভাঙা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।