ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭

স্ত্রীসহ ১১ স্বজনকে চাকরি অধ্যক্ষের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
শেয়ার
স্ত্রীসহ ১১ স্বজনকে চাকরি অধ্যক্ষের

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার বনপাড়া আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ইমদাদুল হকের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিসহ নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা হাসান।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, অধ্যক্ষ ইমদাদুল হক দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে তাঁর ১১ জন স্বজনকে বনপাড়া আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন পদে চাকরি দিয়েছেন।

তাঁদের মধ্যে অধ্যক্ষের স্ত্রী ইসমতারা ও স্ত্রীর বড় ভাই মোস্তফা কামাল সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছেন। তা ছাড়া ছেলে ইমরুল কায়েস ল্যাব সহকারী, ছোট বোন আয়শা খাতুন সহকারী শিক্ষক (কৃষি শিক্ষা), বোন জামাই আজিজুল হক সহকারী শিক্ষক (বাংলা), দুই ভাগ্নির মধ্যে শেফালী বেগম ল্যাব সহকারী, ঝর্ণা আক্তার অফিস সহায়ক, ভাগ্নি জামাই তরিকুল ইসলাম নৈশ প্রহরী, দুই ভাগ্নের মধ্যে আবু নাঈম পরিচ্ছন্নতাকর্মী, আসাদুজ্জামান শান্ত অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ও চাচাতো ভাই কামরুল ইসলামকে প্রভাষক (ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং) পদে নিয়োগ দিয়েছেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, চাকরি পাওয়া বেশ কয়েকজনের রয়েছে জাল সনদ ও ভুয়া শিক্ষক নিবন্ধন সার্টিফিকেট। উচ্চ পর্যায়ে সঠিক তদন্ত করলে তা বেরিয়ে আসবে।

প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের বনপাড়া গ্রামে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রথমে প্রতিষ্ঠানটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে এমপিওভুক্ত হয়। ২০২২ সালের ১ জুলাই উচ্চ মাধ্যমিকের স্তরে প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।

অধ্যক্ষের প্রতারণার শিকার পাশের ফুলপুর উপজেলার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘ল্যাব সহকারী পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে আমার পরিবারের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ।

পরে অধ্যক্ষ ইমদাদুল হকের ছেলে ইমরুল কায়েসের সঙ্গে পারিবারিকভাবে আমার বিয়ে হয়। কলেজ শাখা এমপিওভুক্ত হওয়ার পর আমাকে কৌশলে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে একটি ভুয়া তালাকনামা আমাদের বাড়িতে পাঠায়। এ ঘটনায় ন্যায়বিচার চেয়ে গত বছরের আগস্টে অধ্যক্ষ ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে পৃথকভাবে আদালতে মামলা করি। বর্তমানে মামলা আদালতে চলমান।
আমার কাছে অধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত প্রতিষ্ঠানের নিয়োগপত্র ও যোগদানপত্র রয়েছে। আমি আমার স্বামী ও চাকরি ফেরত চাই। একই সঙ্গে ওই প্রতারক অধ্যক্ষের শাস্তি চাই।’

ভুক্তভোগী মোহাম্মদ শরিফুল আলম বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানের কলেজ শাখায় আমি নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের কথা বলে আমার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকাও হাতিয়ে নিয়েছেন অধ্যক্ষ। কিন্তু গত বছর কলেজ শাখা এমপিওভুক্ত হওয়ার পর আমি জানতে পারি, আমাকে প্রতিষ্ঠান থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমার স্থলে অন্য এক নারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমি চাকরি ফিরে পাওয়ার আশায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

অপর ভুক্তভোগী শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হওয়ার পর আমার অগোচরে অন্য এক ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আমি আদালতে মামলা করেছি। অধ্যক্ষ ওই প্রতিষ্ঠানকে তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি বানিয়ে নিয়েছেন।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ইমদাদুল হক বলেন, ‘নিয়োগ বিধি ও যোগ্যতা অনুযায়ী আমার আত্মীয়-স্বজনরা চাকরি পেয়েছেন। নিয়োগসংক্রান্ত ছেলের বউয়ের করা মামলার বিষয়টি এরই মধ্যে মীমাংসা করা হয়েছে। কারো কাছ থেকে কোনো প্রকার অর্থ নেওয়া হয়নি। অভিযোগের বিষয়টি একেবারেই ভিত্তিহীন।’

বনপাড়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মুজিবুর রহমান বলেন, ‘যখন নিয়োগ হয়েছে, তখন আমি সভাপতির দায়িত্বে ছিলাম না।’

ইউএনও মাহমুদা হাসান বলেন, ‘অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমি এখনো তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাইনি। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শাহজালালে প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে দুজন সঙ্গী প্রবেশের নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শাহজালালে প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে দুজন সঙ্গী প্রবেশের নির্দেশনা

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগমন ও বহির্গমন প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে সর্বোচ্চ দুজন সঙ্গী প্রবেশ করতে পারবেন—এমন নির্দেশনা জারি করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

এই নির্দেশনা আগামী রবিবার (২৭ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে। বিমানবন্দর এলাকার ডিপারচার ড্রাইভওয়ে ও অ্যারাইভাল ক্যানোপিতে যাত্রীপ্রতি সর্বোচ্চ দুজন ব্যক্তি ভেতরে প্রবেশের অনুমতি পাবেন।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক রাখা, যানজট নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় আরো বলা হয়, বিমানবন্দর এলাকায় আসা সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল ও কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

যানজট ও নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের পদক্ষেপকে জরুরি বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

বিমানবন্দর সূত্র বলছে, প্রয়োজনে এই নিয়ম আরো কড়াকড়ি করা হতে পারে। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণসহ পরিচয়পত্র রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য

শেখ হাসিনার মামাতো ভাই হিরা কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনার মামাতো ভাই হিরা কারাগারে

রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার আমির হোসেন হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামাতো ভাই শেখ ওয়ালিদুর রহমান হিরাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত এই আদেশ দেন।

এদিন হিরাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক মো. মাসুদ রানা তাঁকে কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। গত বুধবার ভাটারা এলাকা থেকে শেখ ওয়াহিদুর রহমান হিরাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মন্তব্য

দেড় দশকে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসে’ নিহতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দেড় দশকে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসে’ নিহতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

দেশে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের ‘সন্ত্রাসী’ হামলা এবং তৎকালীন ‘সরকারের নির্দেশে’ রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাবা মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ এবং মামা মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই নির্দেশ দেন।

সাক্ষাতে আবরার ফাহাদের পরিবার দাবি জানায়, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের তালিকা তৈরি করে প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। একই সঙ্গে আবরার হত্যা মামলার বিচার দ্রুত শেষ করতে সরকারের উদ্যোগ চান তাঁরা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা পুরো জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। এ ঘটনার বিচার অবশ্যই শেষ হবে। গণ-অভ্যুত্থানের আগের ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ও তাদের সংগঠনের হাতে যারা প্রাণ হারিয়েছে, তাদের প্রতিটি ঘটনার সঠিক তদন্ত হবে। তৎকালীন সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে যে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছে, সেগুলোও তদন্তের আওতায় রয়েছে।

সরকার এরই মধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।

সাক্ষাৎকালে মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ বলেন, ‘দেশের স্বার্থে কথা বলার কারণেই আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অসম পানিবণ্টনের বিরুদ্ধেও সে কথা বলেছিল। আজও তার মা ছেলের জন্য কান্না করে।

 

মন্তব্য

হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজউকের প্লট

    রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান!
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজউকের প্লট

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ১৫ চালককে প্লট দেওয়া হয়।

গত বুধবার কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে এই অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। গতকাল সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য জানান।

দুদক সূত্র জানায়, রাজউকের ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে নানা দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ঝিলমিল প্রকল্পের প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার ক্ষেত্রে চার শ্রেণিতে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বরাদ্দের ক্ষেত্রে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে চিঠি দিলে রাজউক তা বাস্তবায়ন করে। ওই প্রকল্পে ১৩/এ ধারার আওতায় বিভিন্ন সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২-এর গাড়িচালক, বিশেষ সহকারীর গাড়িচালক, সহকারী একান্ত সচিব-১-এর চালক, একান্ত সচিব-১ ও ২-এর চালক, প্রটোকল অফিসারের চালক, মুখ্য
সচিবের চালক, চিফ ফটোগ্রাফারের চালকসহ প্রায় ১৫ জন চালককে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়।

তবে এসআরও এবং রাজউক বিধিতে অসামান্য অবদানের কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া পাওয়া যায়নি। প্লট বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের কোন কোন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রয়েছে তার উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ