ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে যমজ ভাই-বোন সাদীদ ইসলাম সৃজন ও মুবাশ্বিরা নাজিরা নির্জন এবার এসএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়েছে। উপজেলার সলেমানপুর গ্রামের ক্ষুদ্র মুদি দোকানি সিরাজুল ইসলাম মনির ও শাহীতাজ কাকলীর যমজ সন্তান তারা। সৃজন কোটচাঁদপুর সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মুবাশ্বিরা কোটচাঁদপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেয়।
সাদীদ ইসলাম সৃজন পড়ালেখা শিখে একজন ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়।
আর মুবাশ্বিরা নাজিরা নির্জন হতে চায় কলেজ শিক্ষিকা।
তাদের মা শাহীতাজ কাকলী জানান, স্বামীর স্বল্প রোজগারে সংসার চালিয়ে ছেলেমেয়ের জন্য আলাদা ব্যয় করা কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না। তাই সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ মেটাতে এলাকায় প্রাইভেট পড়ান তিনি। অনেক কষ্ট করে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করাচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘সামনে ছেলেমেয়েকে কলেজে ভর্তি করতে হবে। কিন্তু ভর্তির টাকা, বই কেনার খরচ কিভাবে জোগাড় করব—তা ঝুঝে উঠতে পারছি না। আমার মেধাবী ছেলেমেয়ের দিকে তাকিয়ে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিত, তাহলে দুশ্চিন্তা অনেকটা দূর হতো।’
ময়মনসিংহের ভালুকায় শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে লিমন মিয়া ও লিজন মিয়া নামের দুই জমজ ভাই এসএসসি পাস করেছে।
উপজেলার গোয়ারী ভাওয়ালীয়া বাজার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৩ পেয়ে লিমন ও জিপিএ ৩.৫৬ পেয়ে লিজন উত্তীর্ণ হয়েছে। তারা দুজনই পড়াশোনার পাশাপাশি সংসার চালাতে বাবার সঙ্গে চালকলে কাজ করেছে।
লিমন জানায়, তাদের বাবা মজমত আলী ভালুকার গোয়ারী গ্রামের একজন চালকল শ্রমিক। আর মা রিনা আক্তার গৃহিণী। পরিবারের ভরণপোষণে বাবাকে সহায়তা করতে ছোটবেলা থেকেই চালকলে কাজ করে আসছে তারা দুই ভাই।
স্কুলের সময় বাদে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ধান ভাঙানো ও মসলা গুঁড়া করার কাজ করে আসছে তারা। পরীক্ষার আগের রাতেও তাদের ধান ভাঙানোর কাজ করতে হয়েছে। টাকার অভাবে সময়মতো বিদ্যালয়ের বেতন পরিশোধ করতে না পারার ঘটনাও রয়েছে তাদের।
লিজন জানায়, কাজের চাপে রাতে মাত্র দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা লেখাপড়া করার সুযোগ পেয়েছে তারা। তবে সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে উচ্চশিক্ষা নিয়ে বড় কিছু হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে তাদের।