এ দেশের নারীরা ঘরে-বাইরে সব সম্পর্কে সব বয়সে শ্রেণি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। নারীর প্রতি নৃশংসতা তাদের উন্নয়নের জন্য হুমকি, পাশাপাশি রাষ্ট্রের জন্যও হুমকি, যা বাংলাদেশের অগ্রসরমাণ ভাবমূর্তিকে ম্লান ও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলা হয়।
‘নিঃশঙ্ক জীবন চাই : নারী নির্যাতনমুক্ত সমাজের অঙ্গীকার চাই’—এই দাবি সামনে রেখে নারী নিরাপত্তা জোট ও আমরাই পারি জোট যৌথ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এ সময় জোটের পক্ষ থেকে ক্রমবর্ধমান হারে নারী নিপীড়ন, ধর্ষণ ও নারীবিরোধী কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির প্রতিবাদে অবস্থানপত্র পেশ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এ বছর জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৮৩০টি। নারীদের ওপর পারিবারিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ৪১১টি। নির্যাতনে হত্যা ২৫৩টি, নির্যাতনের ফলে আত্মহত্যা ৭৯টি এবং যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ১৪৮টি।
দেশের ৯টি পত্রিকার তথ্য বিশ্লেষণ করে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক বনশ্রী মিত্র নিয়োগী। সম্মেলনে আরো অংশ নেন বিভিন্ন নারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, নারী নিরাপত্তা জোটের সদস্য এবং দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্ব, যাঁরা নারী নির্যাতন বন্ধের দাবিতে সংহতি জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন নেত্রকোনায় ধর্ষণ ও হত্যার শিকার এক কিশোরীর মা।
তিনি বলেন, ‘প্রায় তিন বছর মেয়ের ধর্ষণ ও হত্যার বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছি, কিন্তু এখনো বিচার পাচ্ছি না। মৃত মেয়ের লাশ পর্যন্ত আমাকে দীর্ঘ সময় দেখতে দেওয়া হয়নি। থানা, পুলিশ, কোর্ট, উকিলের পেছনে ঘুরতে ঘুরতে আমি নাস্তানাবুদ, নিরাপত্তার ভয়ে আমি এলাকাছাড়া। আমি কি দরিদ্র বলে বিচার পাব না।’