ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭

নিমেষে শেষ পাঁচ হাজার লেবুগাছ

  • কক্সবাজারে বন বিভাগের ওই ‘পরিত্যক্ত’ ভূমিতে দরিদ্র চাষির বাগানের গাছগুলোতে অন্তত ১০ লাখ লেবু ছিল
বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার
বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার
শেয়ার
নিমেষে শেষ পাঁচ হাজার লেবুগাছ

কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের জোয়ারিয়ানালা বন রেঞ্জের প্রায় ২০ কানি (আট একর) বনভূমিজুড়ে পাঁচ হাজার গাছের একটি লেবুবাগান করেন দরিদ্র চাষি নজির আলম। প্রতিটি গাছে ২০০টি করে হলেও ১০ লাখ লেবু ধরেছিল। কয়েক বছরে তিলে তিলে গড়ে তোলা বাগানের পাঁচ হাজার গাছই গত বৃহস্পতিবার সকালে কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বনকর্মীদের বিরুদ্ধে।

ক্ষতিগ্রস্ত নজির আলমের (৪৩) বাড়ি কক্সবাজারের রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের পূর্বপাড়ায়।

তাঁর বাড়ি থেকে পাঁচ-ছয় কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের দুর্গম এলাকায় বাগানটি। তিনি জানান, ওই বনভূমি এমনিতেই পরিত্যক্ত। সেখানে বন বিভাগের কোনো গাছই নেই। স্থানীয় সোনাইছড়ি খালের তীরে ভিলেজারের (বন জায়গিরদার) উত্তরাধিকার সূত্রে বনকর্মীদের অনুমতি নিয়ে বনভূমিতে লেবুবাগানটি করেন তিনি।
এর আগে ওই বনভূমিতে ২০ বছর ধরে তিনি তরমজু, মরিচসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করে আসছিলেন। কিন্তু পরে সেখানে অপহরণকারী ও ডাকাতদলের উৎপাত বাড়লে তিনি আট বছর আগে লেবু চাষ শুরু করেন। জীবনের সব সঞ্চয় ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তিলে তিলে বাগানটি সৃজন করেন তিনি। এখন একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম বাগানটির সবকয়টি গাছ কেটে দেওয়ায় তিনি নিঃস্ব হয়ে গেছেন।

এদিকে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) তৌহিদুল ইসলাম গতকাল মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘লেবুবাগান কেটে বন বিভাগের জমি জবরদখলমুক্ত করেছি। বনভূমি রক্ষায় উচ্ছেদের সময় কি গাছগাছালি বা বন কাটা গেল সেটা মুখ্য নয়।’ বনভূমির ওই এলাকায় বন বিভাগের সৃজিত কোনো গাছ নেই, এমনকি আরো অনেকের লেবুবাগান থাকলেও শুধু নজির আলমের বাগানটি কেন কাটা হলো—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উচ্ছেদ মাত্র শুরু হয়েছে। এটা চলবে।’

বনভূমিতে বাগান করার বিনিময়সহ স্বল্প টাকার মজুরিতে বনকর্মীরা কৃষক নজির আলম ও তাঁর ছেলে আরিফকে সেগুনবাগান পাহারাসহ নানা কাজে লাগান।

৩০ মাস ধরে নজির ও তাঁর পুত্র বন বিভাগের স্থানীয় সেগুনবাগান পাহারার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। কিন্তু তাঁদের কোনো পারিশ্রমিক দেওয়া হয়নি। নজির বন রেঞ্জ কর্মকর্তার কাছে সেগুনবাগান পাহারার পাওনা দুই লাখ ২০ হাজার টাকা দাবি করায় উল্টো বনভূমিতে লেবুবাগানের জন্য তাঁর কাছে টাকা চাওয়া হয়। নজিরের অভিযোগ, টাকা না দেওয়ায় কয়েক দিন আগে বনকর্মীরা ধরে নিয়ে যান তাঁর ছেলে আরিফকে। বনকর্মীরা তাঁকে মারধর করে বনভূমিতে লেবুবাগান করার জন্য তিন লাখ টাকা দাবি করেন। এ ঘটনার পর থেকে নজিরের সঙ্গে বনকর্মীদের সম্পর্কে মারাত্মক দূরত্ব তৈরি হয়। প্রতিটি গাছে ১০০ থেকে ৫০০টি পর্যন্ত লেবু ধরেছে। নজিরের এই সফলতা দেখে বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তা-হেডম্যান (বন জায়গিরদার প্রধান) তাঁর কাছে তিন লাখ টাকা দাবি করতে থাকেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় গত বৃহস্পতিবার সকালে জোয়ারিয়ানালা রেঞ্জ কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ টিটুসহ একদল ভাড়াটে লোক লেবুবাগানটির ফলবান সব গাছ (পাঁচ হাজার) গাছ কেটে দেন। গত সোমবার স্থানীয় কয়েকজন সংবাদকর্মীও ঘটনাস্থলে গিয়ে লেবুবাগানটি কেটে ফেলার বিষয়টি দেখতে পেয়েছেন।

জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। তিলে তিলে গড়ে তোলা হাজার হাজার ফলবান গাছের একটি বাগান কেটে ফেলার মানে উচ্ছেদ হতে পারে না।’ তিনি বলেন, বনভূমির লেবুবাগানটিই তো বন বিভাগের মালিকানায় থাকতে পারত। একটি গাছ রোপণের পর বড় করা বেশ কষ্টসাধ্য, কিন্তু কেটে ফেলা সহজ। বনকর্মীরা সহজটিই করেছেন। কৃষক নজির সারা জীবনই বন বিভাগের কাজ করে যাচ্ছেন। বনকর্মীদের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণেই এমন সবুজ বাগানটি কেটে ফেলা হয়েছে।

পরিবেশবাদীরা বলছেন, হাজার হাজার একর শূন্য বনভূমিতে বনকর্মীরা কোনো বনায়ন করে যেখানে সবুজায়নও করতে পারছেন না, সেখানে স্থানীয়দের গড়ে তোলা বাগান কেটে ফেলার ঘটনাটি পরিবেশের জন্যও উদ্বেগজনক। তাঁরা বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দাবি জানিয়েছেন।

অভিযুক্ত জোয়ারিয়ানালা রেঞ্জ কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ টিটু বন বিভাগের পক্ষে তিন লাখ টাকা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, বন বিভাগের সংরক্ষিত বনে বাগানটি সৃজন করায় সেটি কেটে দেওয়া হয়েছে। আরো যাঁরা এভাবে বন দখল করে বাগান করেছেন সেগুলোও উচ্ছেদ করা হবে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টি বেশি থাকতে পারে কিছুদিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টি বেশি থাকতে পারে কিছুদিন

মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা কমায় দেশে বৃষ্টিপাতের ব্যাপ্তি কমেছে অনেকটাই। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী কিছুদিনও দেশে বৃষ্টি কম থাকতে পারে। তবে বর্ষাকাল হওয়ায় বৃষ্টি পুরোপুরি বন্ধ হবে না। কোনো না কোনো অঞ্চলে বৃষ্টি হবে প্রতিদিনই।

এ সময় দেশের উত্তরে বৃষ্টি তুলনামূলক বেশি থাকতে পারে। আগামী ২৪ জুলাই থেকে আবার সারা দেশে বৃষ্টি বাড়তে পারে।

এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বৃষ্টি কিছুদিন কম থাকবে। তবে দেশের উত্তরাঞ্চল বিশেষ করে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে বৃষ্টি তুলনামূলক বেশি থাকতে পারে।

২০ বা ২১ জুলাই দেশের এই তিন বিভাগে ভারি বর্ষণের সম্ভাবনাও রয়েছে। তবে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বৃষ্টি অপেক্ষাকৃত কম থাকতে পারে এ সময়।’

নাজমুল হক জানান, বৃষ্টি কম থাকার সম্ভাবনা থাকায় আগামী কিছুদিন সারা দেশে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। তবে তা খুব বেশি বাড়বে না।

বিক্ষিপ্তভাবে কোনো কোনো অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রিও উঠতে পারে। ২৪ জুলাই থেকে আবার সারা দেশে বৃষ্টি বাড়তে পারে। তখন দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি বেশি থাকতে পারে। ঢাকায় কিছুদিন রোদ-বৃষ্টির খেলা থাকবে বলে জানান এই আবহাওয়াবিদ।

এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

মন্তব্য

মতিঝিলে সেনা কল্যাণ ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
মতিঝিলে সেনা কল্যাণ ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে

রাজধানীর মতিঝিলে সেনা কল্যাণ ভবনের ২১ তলায় আগুনের ঘটনা ঘটে। এতে প্রতিষ্ঠানটির অনেক মালপত্র পুড়ে ছাই হয়। ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট রাত পৌনে ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে এ তথ্য দেন ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর ডিউটি অফিসার শাহজাহান হোসেন।

তিনি বলেন, রাত ১০টা ৪০ মিনিটে অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস। পরে ১০টা ৫১ মিনিট নাগাদ ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। এর ১১ মিনিটের পর অর্থাৎ ১০টা ৫১ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের পাঁচটি ইউনিট।

 

মন্তব্য

দুদকের মামলায় সম্রাটের বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দুদকের মামলায় সম্রাটের বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক মো. জাকারিয়া হোসেন এ অভিযোগ গঠন করেন। তবে জামিনে থাকা আসামি সম্রাট আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় তাঁর জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী ফকির জাহিদুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

এদিন অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে তাঁর আইনজীবী আফরোজা শাহানাজ পারভীন হীরা অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য সময় চেয়ে আবেদন করেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়, আসামি সম্রাট অসুস্থ।

এ জন্য তিনি আদালতে হাজির হতে পারেননি। তবে আদালত সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করেন। আদালত তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। একই সঙ্গে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১৭ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়।

সম্রাটের বিরুদ্ধে দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে মামলাটি করেন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

 

 

মন্তব্য

শিক্ষাঙ্গন

শেয়ার
শিক্ষাঙ্গন

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে ‘সপ্তম নেহরীন খান স্মৃতি বক্তৃতা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মঞ্জুর এলাহী’ অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে মূল বক্তা ছিলেন ২০২৫ সালে একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডক্টর নিয়াজ জামান। আরো বক্তব্য দেন ইউনিভার্সিটির প্রধান উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, উপাচার্য ড. শামস রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের  অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম (অব.) প্রমুখ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

 

 

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ