রিফাত শরীফ হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত কিশোর আসামি রাশিদুল হাসান রিশান। এলাকায় রিশান ফরাজী নামে পরিচিত। বরগুনার ইউটিডিসি মডেল বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ২০১২ সালে অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ পায়। জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায়ও সে মেধার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বরগুনা জিলা স্কুল থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।
কারা শেষ করল ওই কিশোরদের সম্ভাবনা
- রিফাত হত্যাকাণ্ড
রফিকুল ইসলাম, বরিশাল

২০১৯ সালের ২৬ জুন প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। যোগাযোগ মাধ্যমে খুনের ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়।
রিফাত হত্যা মামলার প্রধান নয়ন বন্ড কিশোরদের সমন্বয়ে বরগুনায় গড়ে তোলে কিশোর গ্যাং। নাম দেওয়া হয় ০০৭। গ্যাংয়ের প্রধান নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিবারের উদাসীনতা, সামাজিক অবক্ষয়, অপরাজনীতি আর সর্বনাশা মাদকের ছোবলে ওই মেধাবী কিশোররা অন্ধকার জগতে পা বাড়িয়েছিল। সঠিক পথে ধরে রাখতে পারলে তারা শুধু পরিবারের নয়, দেশের জন্য সম্পদ ছিল।
রিশানের মতোই রিফাত হত্যা মামলার আরো দুই দণ্ডপ্রাপ্ত কিশোর আসামি রাকিবুল হাসান রিফাত হাওলাদার ও মো. নাঈম মেধাবী ছিল। তারা দুজনই পিইসি, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছিল। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ ৫ পাচ্ছে।
এ ছাড়া রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বাক্প্রতিবন্ধী জয়চন্দ্র সরকার ওরফে চন্দন ও আবু আব্দুল্লাহ রায়হানও মেধাবী ছিল। কিন্তু পরিবারের অসচেতনতার কারণেই তারা খুনের মতো ঘৃণ্য অপরাধে জড়িয়ে এখন অন্ধকার পথযাত্রী।
মামলার আসামি হিসেবে ১৪ কিশোরই দাগি আসামিদের সঙ্গে জেলে ছিল। এদের মধ্যে তিনজন খালাস পেয়েছে। অপ্রাপ্তবয়স্ক সব আসামির মধ্যেই শুরুতে কারাজীবন নিয়ে এক ধরনের ভীতি থাকলেও পরে সে ভয় কেটে যায়। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই অভিজ্ঞতা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা ততটা সহজ নয়।
রিশান ফরাজীর মা রেশমা বেগম বলেন, ‘রিশান সব সময় বলত, আম্মু আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব। অথচ নষ্ট রাজনীতির কারণে আমার মেধাবী ছেলের জীবনটা এলোমেলো হয়ে গেল। রিশানের বড় ভাই রিফাত ফরাজীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয়েছে আগেই। আজ ছোট ছেলে রিশানকেও কারাদণ্ড দিলেন আদালত। দুই সন্তানকে নিয়ে আমাদের যে স্বপ্ন ছিল, তা শুরুতেই চুরমার হয়ে গেল।’ তিনি বলেন, ‘তার পরও আমরা আশাবাদী উচ্চ আদালত তাদের বেকসুর খালাস দিবেন। নয়তো, কিশোর সংশোধাগারে থেকে রিশান আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বরগুনার সাধারণ সম্পাদক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক মুশফিক আরিফ বলেন, রিফাত হত্যা মামলায় ১৪ জন কিশোর আসামির মধ্যে অনেকেই মেধাবী। কিন্তু পরিবারের অসচেতনতায় তারা সামাজিক অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিল। কিশোর বয়সেই তাদের বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে। ১১ কিশোরকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্তদের কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হবে। সেখানে থেকে তারা সংশোধিত হয়ে আগের অবস্থায় ফিরে আসবে এমনটা তাদের পরিবার আশা করছে।
সাংস্কৃতিক জোট বরগুনার সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. শাহজাহান বলেন, ‘সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের দায়িত্বের মাধ্যমে এ রকম মেধাবীদের আমরা গড়ে তুলতে পারছি না। পরিবারের যে দায়িত্ব পালন করার কথা, সামাজিকভাবে তারাও সে দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এর ফলে কিশোর মেধাবীরা বিপথগামী হচ্ছে। কিশোরদের বিপথগামীর দায় শুধু তাদের পরিবারের একার নয়, রাষ্ট্রেরও দায় আছে।’ তিনি বলেন, রিফার শরীফ হত্যা সামাজিক অবক্ষয়ের বড় উদাহরণ। আমরা এ রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না। কিশোরদের খেলাধুলা আর সাংস্কৃতিক সংগঠনের মধ্যে আবদ্ধ রাখতে পারলেই সমাজ থেকে, মাদকের মোহ থেকে তারা মুক্ত হবে।
সম্পর্কিত খবর

ভুয়া স্বাক্ষর ও প্রেস বিজ্ঞপ্তি নিয়ে রিজভীর সতর্কবার্তা
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী জানিয়েছেন, কুচক্রী ও স্বার্থান্বেষী মহল তাঁর স্বাক্ষর জাল করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এসব তথ্য জানিয়েছেন। বিজ্ঞপ্তিতে রিজভী বলেন, ‘আমি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী এই মর্মে দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, কোনো স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহল আমার স্বাক্ষর জাল করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি পোস্ট করেছে। কিন্তু ফেসবুকে পোস্ট করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা, বানোয়াট ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের স্থাপনা ভাঙায় দুঃখ প্রকাশ অর্থ উপদেষ্টার
নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯০ বছরের ঐহিত্যবাহী ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের পুরনো ভবন ভাঙায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, স্কুলের বিল্ডিং ভেঙে না ফেলে হেরিটেজ আকারে রাখা যেত। গতকাল শুক্রবার সকালে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের ১৯০তম বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ভেঙে ফেলা হয়েছে, এখন আর কিছু করার নেই।

সংক্ষিপ্ত
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বদরুদ্দীন উমরের শারীরিক উন্নতি
নিজেস্ব প্রতিবেদক

বিশিষ্ট মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী রাজনীতিক ও তাত্ত্বিক বদরুদ্দীন উমর ঢাকার গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বর্তমানে তাঁর শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে রয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম এ তথ্য জানান। ফয়জুল হাকিম বলেন, ‘গত ২২ জুলাই ভোর ৫টার দিকে শ্বাসকষ্ট ও নিম্ন রক্তচাপজনিত কারণে বদরুদ্দীন উমরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ন্যায্য মজুরি নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন

ন্যায্য মজুরি নিশ্চিতের দাবিতে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি। ছবি : কালের কণ্ঠ
।