<p>খুলনার রূপসা উপজেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী মোস্তফা কামাল ওরফে মিনা কামাল ওরফে ফাটাকেষ্ট (৫৫) র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছে খুলনা-মোংলা মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী ভেকুটিমারী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।</p> <p>মিনা কামাল নিহত হওয়ার খবরে এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। রূপসাবাসী বলছেন, কামাল হাসতে হাসতে মানুষকে নির্যাতন করতেন। তাঁর মৃত্যুতে তাঁরা ‘জালিম’-এর হাত থেকে মুক্তি পেয়েছেন। নৈহাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মিনা কামালের বিরুদ্ধে হত্যা, গুম, ডাকাতি, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, অবৈধ অস্ত্র রাখাসহ বিভিন্ন অভিযোগ ২৫টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। তাঁকে নিয়ে কালের কণ্ঠে দুই দফা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।</p> <p>মিনা কামালের নিহত হওয়ার খবরে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরলেও তাঁর সহযোগীদের ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলছেন না। স্থানীয়দের অভিমত, রূপসা উপজেলার ভয়ংকর খুনি, সন্ত্রাসী মিনা কামাল। তাঁর হিংস্রতা খুলনার কুখ্যাত খুনি এরশাদ শিকদারকেও হার মানিয়েছে। রূপসার আলোচিত সারজিল ইসলাম সংগ্রামসহ ৯টি হত্যা, ধর্ষণ, জমি দখল, নির্যাতনসহ ২৫টির বেশি মামলা ও শতাধিক জিডি রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বাগমারা গ্রামের নিজ বাড়িতে বিচারালয়ের নামে টর্চার সেল বসিয়েছিলেন। সেখানে সালিসের নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের জন্য চালানো হতো অবর্ণনীয় শারীরিক-মানসিক নির্যাতন। বিচারের নামে হাতুড়িপেটা করে অনেকের হাত-পা ও পাঁজরের হাড় ভেঙে দেওয়া হয়েছে। থেঁতলে দেওয়া হয়েছে স্পর্শকাতর স্থান। এসব অপকর্মে লিপ্ত ছিল তাঁর সহযোগীসহ অন্তত ২০ জনের সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী। তাদের হাতে গত ১০ বছরে দুই শতাধিক মানুষ নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ভয়ে সহায়-সম্বল রেখে অন্যত্র পালিয়ে গেছে কয়েক শ পরিবার। বাহিনীটির কাছে জিম্মি ছিল রূপসার অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ। দখল, চাঁদাবাজি, অস্ত্র ও মাদক বাণিজ্য করে গড়েছেন ইটভাটাসহ বিপুল অর্থ-সম্পদ। রূপসার হিমায়িত মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানার মালিক ও চিংড়ি ব্যবসায়ীরা ছিলেন তাঁর প্রধান টার্গেট। তাঁকে চাঁদা না দিয়ে রূপসায় ব্যবসা করা এবং টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরা ছিল অসম্ভব ব্যাপার। চুক্তিতে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।</p> <p>রূপসা থানার ওসি মোল্লা জাকির হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, মিনা কামালের বিরুদ্ধে খুলনা, বাগেরহাট জেলাসহ বিভিন্ন থানায় হত্যাসহ ১৫ থেকে ২০টি মামলা বিচারাধীন। তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় স্বস্তি এসেছে।</p>