সমস্যা : আমার বয়স ৪৫, উচ্চতা ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি, ওজন ৫০ কেজি। আমার সমস্যা হলো, প্রস্রাবে বেশ যন্ত্রণা হয়, ঘন ঘন অল্প পরিমাণে প্রস্রাব হয়। হাঁচি ও কাশির সময়, নিচে বসে কাজ করলে, মসলা বাটলে, ঘর মুছলে, বেশি হাঁটতে গেলে প্রস্রাব চলে আসে। নাভি ও নাভির চারদিকে ব্যথাও আছে।
আপনার প্রশ্ন ডাক্তারের পরামর্শ
- কালের কণ্ঠ’র স্বাস্থ্য সমস্যা বিষয়ক নিয়মিত আয়োজন আপনার প্রশ্ন, ডাক্তারের পরামর্শ। আপনাদের পাঠানো প্রশ্ন থেকে বাছাই করা
- কিছু প্রশ্নের পরামর্শ দিচ্ছেন
- অধ্যাপক ডা. মো. জুলহাস উদ্দিন
- এমবিবিএস (ডিএমসি) এফসিপিএস
- এফসিসিপি (ইউএসএ) এফআরসিপি (ইউকে)
- বিভাগীয় প্রধান, মেডিসিন বিভাগ
- মার্কস মেডিক্যাল কলেজ
অন্যান্য

শিউলি রানী সরকার, ই-মেইলে।
পরামর্শ : আপনার উপসর্গগুলো জেনে মনে হচ্ছে প্রস্রাবে ইনফেকশন আছে। তবে সমস্যাগুলো অনেক দিনের যেহেতু তাই এটাকে বারবার অর্থাৎ Recurrent UTI বলা হয়।
সমস্যা : আমার বয়স ৩২ বছর। দুই-তিন মাস থেকে লক্ষ করছি, আমার ঊরুর ত্বকে ছোট ছোট কালো দাগ ধীরে ধীরে বড় আকার ধারণ করছে। এতে কোনো চুলকানি কিংবা স্যাঁতসেঁতে ভাব নেই। এটা কেন হচ্ছে? এই দাগগুলো কিভাবে দূর করা যায়। আপনার মূল্যবান পরামর্শ কামনা করছি।
পারভেজ আহমেদ, ই-মেইলে।
পরামর্শ : ত্বকের দাগগুলো না দেখে আসলে রোগ নির্ণয় করা কঠিন। ছবি পাঠালেও কিছুটা ধারণা করা যেত। তবে মনে হচ্ছে অন্যান্য উপসর্গ যেহেতু নেই, সেহেতু চিন্তার তেমন কোনো কারণ নেই। ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে লক্ষ রাখুন।
সমস্যা : আমার বয়স ৫০, ওজন ৭৯ কেজি। আমার কভিড-১৯ পজিটিভ এসেছে। এমনিতে কোনো উপসর্গ বা সমস্যা নেই। তবে বুকটা মাঝেমধ্যে বেশ ভার ভার লাগে। কয়েক দিন আগে সামান্য শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। হাসপাতালে যাব এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অক্সিমিটারে মেপে দেখি অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯৪/৯৫। তখন আর হাসপাতালে যাইনি। আমার জন্য পরামর্শ কী?
ছোটন মিয়া, রূপনগর, মিরপুর, ঢাকা।
পরামর্শ : কভিড প্রধানত ফুসফুসেরই রোগ। যেহেতু আপনার কভিড পজিটিভ, বুক ভার ভার লাগে আর শ্বাসকষ্টের ইতিহাস আছে, তাই Chest x-ray, CBC, CRP এই তিনটি পরীক্ষা করাতে পারেন। তবে কাশি বেশি নেই এবং অক্সিজেন স্যাচুরেশনও যেহেতু ভালো সেহেতু চিন্তার কোনো কারণ নেই। তা ছাড়া উপসর্গ দেখা দেওয়া এবং কভিড টেস্টের পর থেকে যদি ১১-১২ দিন পার হয়ে যায় তবে আরো নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। এখন বিশ্রামে থাকুন, বেশি করে পানি খান। পরে কভিড-১৯ পরীক্ষাটা আবার করে নেবেন।
সমস্যা : আমার বয়স ৩৮, উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি, ওজন ৭০ কেজি। আমার কয়েক বছর ধরে উচ্চ রক্তচাপ। কিন্তু ওষুধ খাচ্ছিলাম না। ইদানীং বেশ অস্বস্তি বোধ করায় চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খাওয়া শুরু করেছি। এখন কথা হলো, আমারও রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকলেও কি উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খেয়ে যেতে হবে?
আতিকুর রহমান, ধামরাই, ঢাকা।
পরামর্শ : এটা সবার জানা থাকা দরকার যে, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ শুরু করলে নিজে নিজে বন্ধ করা যায় না। যখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ওষুধ দেওয়া হয়েছিল তখনই আপনাকে ভালো করে বুঝিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। কারণ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাজ হলো উচ্চ রক্তচাপ হিসেবে লেভেল করা এবং উপদেশ দেওয়া। রক্তচাপের ওষুধ তো ফার্মেসিওয়ালারাও দিতে পারে। যাই হোক, আপনি ওষুধ নিয়মিত চালিয়ে যাবেন এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ফলোআপে থাকবেন।
ঘোষণা
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কর্তৃক এ ধরনের পরামর্শ পেতে আপনার স্বাস্থ্যসংক্রান্ত
সমস্যা লিখে আমাদের জানান daktarachen@kalerkantho.com ই-মেইলে।
নাম, ঠিকানা, সমস্যা লেখার পাশাপাশি বয়স, উচ্চতা, ওজনও লিখে জানান।
সম্পর্কিত খবর

মা বললেন ‘ও বাবা, আমার রায়েশা কই’
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিকেল ৩টা। চারদিকে হৈচৈ। একটির পর একটি অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকছে আর বের হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ছাড়া কাউকেই ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

দুর্ঘটনার খবর বিশ্ব গণমাধ্যমে
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের এ খবর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বেশ গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের খবর জানিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি ‘ঢাকায় স্কুলে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১৬’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি স্কুল ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ১৯, আহত হয়েছে শতাধিক। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বহরে থাকা চীনের তৈরি একটি এফ-৭ যুদ্ধবিমান প্রশিক্ষণ মহড়া চলাকালে বিধ্বস্ত হয়েছে।
মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার বলেছে, বাংলাদেশে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। ঢাকার একটি কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইংরেজি দৈনিক গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উত্তরে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত ও আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
এ ছাড়া মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউজ উইক, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে এক্সপ্রেস, ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বাংলাদেশের এই বিমান বিধ্বস্তের খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর অভিমত
৭ শিশুর পরিচয় শনাক্তে লাগবে ডিএনএ পরীক্ষা
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, যে ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছেন, তারা সবাই শিশু। এর মধ্যে সাতজনের লাশ শনাক্ত করা যায়নি। তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা লাগবে।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। সায়েদুর রহমান বলেন, তাঁদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৮৮ জন হাসপাতালে ভর্তি আছে। প্রাথমিক মূল্যায়নে ২৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ সময় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেন, আজ তাদের রক্তের প্রয়োজন নেই। আগামীকাল (মঙ্গলবার) রক্তের প্রয়োজন হবে। তাই আজ আর কারো কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে না।
নাসির উদ্দীন বলেন, ইনফেকশন (সংক্রমণ) হলে মৃত্যুঝুঁকি বাড়তে পারে।

মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত
২০ জন শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়ে চিরবিদায় নিলেন শিক্ষিকা মেহরিন
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষিকা মেহরিন চৌধুরীর বীরত্ব ও আত্মত্যাগ এখন দেশের মানুষের হৃদয়ে গভীর রেখাপাত করছে। প্রাণপণ চেষ্টা করে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীকে মৃত্যুর মুখ থেকে রক্ষা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর নিজের। তাঁর ভাই মানাফ এম চৌধুরী কালের কণ্ঠকে টেলিফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গতকাল সোমবার দুপুরে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত এবং শতাধিক শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
৪৬ বছর বয়সী মেহরিন চৌধুরী শতভাগ দগ্ধ অবস্থায় ওই ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বার্ন ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি, তাঁর মৃত্যুর খবর সামাজিক মাধ্যমে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার পরপরই ক্লাসরুম থেকে শিক্ষার্থীদের দ্রুত সরিয়ে ফেলেন মেহরিন। তাদের নিরাপদে বের করে দিতে গিয়ে নিজে আর সময়মতো বের হতে পারেননি। উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া এক সেনা সদস্য বলেন, ‘ম্যাডাম ভেতরে ঢুকে গিয়ে বাচ্চাগুলারে বের করে দিছেন, তারপর উনিই বের হতে পারেননি।’ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষিকা মেহরিনের সাহসিকতায় অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীর প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।