করোনাভাইরাসের কারণে বাতিল হয়ে গেছে এবারের মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস। সে জন্য স্পেনের বার্সেলোনা শহরে যাওয়া হচ্ছে না প্রায় দেড় শ কর্মকর্তার। দেশের টেলিকম খাতের সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের এসব কর্মকর্তার বেশির ভাগই এরই মধ্যে স্পেনের ভিসাও সংগ্রহ করেছিলেন। বাকিদের ভিসাপ্রাপ্তির বিষয়টিও ছিল প্রক্রিয়াধীন।
স্পেন যাওয়া হচ্ছে না দেড় শ কর্মকর্তার
- করোনা শঙ্কায় মোবাইল কংগ্রেস বাতিল
কাজী হাফিজ

স্পেনের বার্সেলোনায় প্রতিবছরের নিয়মিত আয়োজনের অংশ হিসেবে আগামী ২৪ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অনুষ্ঠানের কথা ছিল। কিন্তু গত ১২ ফেব্রুয়ারি আয়োজক সংস্থা জিএসএমএ এই আয়োজন বাতিলের ঘোষণা দেয়। প্রায় সব আয়োজন সম্পন্ন হওয়ার পর এমন ঘোষণায় হতাশ সম্মেলনে অংশগ্রহণেচ্ছু বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, বিটিআরসি, বিটিসিএল এবং মোবাইল ফোন অপারেটরসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের জন্য বার্সেলোনায় হোটেল বুকিং, বিমানের টিকিট বুকিং সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের ঝুঁকির উল্লেখ করে জিএসএমএর আয়োজন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে সব কিছু ভেস্তে গেছে।
জিএসএমএর প্রধান নির্বাহী জন হফম্যানের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ২০০৬ সাল থেকে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয়ে আসা মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস এবারই বাতিল করতে হলো। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এবং বার্সেলোনার পরিবেশ নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত রাখার স্বার্থে এবার এই কংগ্রেস অনুষ্ঠান সম্ভব নয়।
বিশাল এই সম্মেলন প্রায় দুই যুগ ধরে বার্সেলোনা তথা স্পেন সরকারের জন্য আর্থিকভাবেও লাভজনক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।
মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস বাতিল বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এটি হচ্ছে মোবাইল ফোন শিল্পের বিশ্ব প্রদর্শনী। মোবাইল ফোন বিষয়ে বিশ্বের যত নতুন উদ্ভাবনী, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, গবেষণা—সব কিছু এই সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়। অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি এখানে একসঙ্গে দেখার সুযোগ ঘটে। এবার এটি বাতিল হওয়ায় এর নেতিবাচক প্রভাব সার্বিকভাবে বিশ্বের মোবাইল শিল্পের ওপর পড়বে।
সম্পর্কিত খবর

মা বললেন ‘ও বাবা, আমার রায়েশা কই’
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিকেল ৩টা। চারদিকে হৈচৈ। একটির পর একটি অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকছে আর বের হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ছাড়া কাউকেই ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

দুর্ঘটনার খবর বিশ্ব গণমাধ্যমে
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের এ খবর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বেশ গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের খবর জানিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি ‘ঢাকায় স্কুলে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১৬’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি স্কুল ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ১৯, আহত হয়েছে শতাধিক। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বহরে থাকা চীনের তৈরি একটি এফ-৭ যুদ্ধবিমান প্রশিক্ষণ মহড়া চলাকালে বিধ্বস্ত হয়েছে।
মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার বলেছে, বাংলাদেশে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। ঢাকার একটি কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইংরেজি দৈনিক গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উত্তরে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত ও আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
এ ছাড়া মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউজ উইক, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে এক্সপ্রেস, ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বাংলাদেশের এই বিমান বিধ্বস্তের খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর অভিমত
৭ শিশুর পরিচয় শনাক্তে লাগবে ডিএনএ পরীক্ষা
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, যে ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছেন, তারা সবাই শিশু। এর মধ্যে সাতজনের লাশ শনাক্ত করা যায়নি। তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা লাগবে।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। সায়েদুর রহমান বলেন, তাঁদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৮৮ জন হাসপাতালে ভর্তি আছে। প্রাথমিক মূল্যায়নে ২৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ সময় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেন, আজ তাদের রক্তের প্রয়োজন নেই। আগামীকাল (মঙ্গলবার) রক্তের প্রয়োজন হবে। তাই আজ আর কারো কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে না।
নাসির উদ্দীন বলেন, ইনফেকশন (সংক্রমণ) হলে মৃত্যুঝুঁকি বাড়তে পারে।

মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত
২০ জন শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়ে চিরবিদায় নিলেন শিক্ষিকা মেহরিন
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষিকা মেহরিন চৌধুরীর বীরত্ব ও আত্মত্যাগ এখন দেশের মানুষের হৃদয়ে গভীর রেখাপাত করছে। প্রাণপণ চেষ্টা করে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীকে মৃত্যুর মুখ থেকে রক্ষা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর নিজের। তাঁর ভাই মানাফ এম চৌধুরী কালের কণ্ঠকে টেলিফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গতকাল সোমবার দুপুরে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত এবং শতাধিক শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
৪৬ বছর বয়সী মেহরিন চৌধুরী শতভাগ দগ্ধ অবস্থায় ওই ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বার্ন ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি, তাঁর মৃত্যুর খবর সামাজিক মাধ্যমে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার পরপরই ক্লাসরুম থেকে শিক্ষার্থীদের দ্রুত সরিয়ে ফেলেন মেহরিন। তাদের নিরাপদে বের করে দিতে গিয়ে নিজে আর সময়মতো বের হতে পারেননি। উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া এক সেনা সদস্য বলেন, ‘ম্যাডাম ভেতরে ঢুকে গিয়ে বাচ্চাগুলারে বের করে দিছেন, তারপর উনিই বের হতে পারেননি।’ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষিকা মেহরিনের সাহসিকতায় অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীর প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।