ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭
বিচারকের বাড়িতে ডাকাতি

বিচার শুরু হয়নি তিন বছরেও

আশরাফ-উল-আলম
আশরাফ-উল-আলম
শেয়ার
বিচার শুরু হয়নি তিন বছরেও

বিচারকের বাড়িতে ডাকাতির মামলা ঝুলে আছে তিন বছরের বেশি সময় ধরে। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে ডাকাতির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল হয় ২০১৭ সালের এপ্রিলে। এরপর আড়াই বছর পার হলেও আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়নি।

ডাকাতি ও মারধরের ঘটনায় দণ্ডবিধির ৩৯৫/৩৯৭ ধারায় দায়ের করা মামলাটি কুমিল্লার প্রথম যুগ্ম দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, এই দীর্ঘদিনেও আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়নি। মামলা দায়েরকারী কুমিল্লার সদর দক্ষিণ থানার উত্তর রামপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. সালাউদ্দিন আহাম্মেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ঘটনাটি ২০১৬ সালের। ঘটনার দিন ডাকাতরা সবাইকে বেঁধে রেখে মারধর করে সোনা-গয়না, টাকা-পয়সা নিয়ে যায়। একজন এ সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে।
পরে আরো দুজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। মামলায় অনেক দিন আগেই চার্জশিট হয়েছে। কিন্তু আদালত থেকে এখনো সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য কাউকে ডাকা হয়নি। এজাহারকারী বলেন, ‘আমরা কোনো সমন পাইনি আদালত থেকে।
’ তিনি আরো বলেন, আরো দুজন ডাকাত ছিল। কিন্তু তাদের ধরতেই পারেনি পুলিশ।

জানা যায়, মামলা দায়েরকারী মো. সালাউদ্দিন আহাম্মেদের মেয়ে একজন বিচারক। ডাকাতির ঘটনার সময় ডাকাতরা ওই বিচারক মেহের নিগার সূচনাকে বেঁধে মারধর করে। বিচারকের গলার হার, হাতের চুড়ি, টাকা-পয়সা নিয়ে যায় ডাকাতরা।

ঘটনার সময় ওই বিচারক ঢাকা মহানগর হাকিম (মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে নরসিংদীতে কর্মরত আছেন তিনি। ঘটনার দিন তিনি ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলেন। মামলার এজাহারেও বিষয়টির উল্লেখ আছে। অথচ এই মামলার বিচার শুরু হতে তিন বছর পার হয়ে গেছে।

মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য তারিখের পর তারিখ ধার্য হচ্ছে। অথচ অভিযোগ গঠন করা হচ্ছে না।  কুমিল্লার আইনজীবীরা বলেন, বিচারকের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় যদি তিন বছরেও বিচার শুরু না হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচারের আশা করবে কিভাবে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহবুবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, এজাহারে যদি উল্লেখ থাকে যে একজন বিচারকের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় এই মামলা, তাহলে তো বিশেষ নজর রাষ্ট্রপক্ষের থাকা উচিত। আদালতেরও বিষয়টি দেখা উচিত। তিনি বলেন, হয়তো বিষয়টি খেয়াল করেননি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। আসলে কেউ-ই কোনো মামলা ভালোভাবে দেখেন না। এটি দুঃখজনক। তবে বিচারকের বলে নয়, যেকোনো মামলার দ্রুত বিচারই তো চায় সবাই। একটি মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের জন্য এত দীর্ঘ সময় কেন?

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১০ জুলাই রাত অনুমান ২টা ৩০ মিনিটের দিকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার উত্তর রামপুরের মো. সালাউদ্দিন আহাম্মদের বাড়িতে ডাকাত ঢোকে। দুজন মুখোশ পরা ও দুজন মুখোশ ছাড়া ডাকাতের হাতে চাপাতি, ছুরি, রড ছিল। তারা সালাউদ্দিনের জামাতা আনিছুর রহমানকে কোনো প্রকার আওয়াজ করতে নিষেধ করেই তাঁর হাতে কোপ মারে। জামাতা আহত হন। এরপর ঘরের সবাইকে পিঠমোড়া দিয়ে বেঁধে এবং সালাউদ্দিনের নাতিকে কোপানোর ভয় দেখিয়ে ডাকাতরা আলমারির চাবি নেয়। তারা সোনা-গয়না, টাকা-পয়সা, মোবাইল ফোনসেটসহ নগদ প্রায় ছয় লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এরই মধ্যে ঢাকার তৎকালীন মহানগর হাকিম মেহের নিগার সূচনা, তাঁর স্বামী আনিছুর রহমানকে মারধর করে। ডাকাতরা মালামাল নিয়ে বাইরে গেলে ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। রাস্তায়ও কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম করে একটি পিকআপে উঠে ডাকাতরা চলে যায়। তবে এ সময় একজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলে স্থানীয় লোকজন।

ধৃত ডাকাত তার নাম আবুল কাশেম বলে জানায়। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, তার সঙ্গে শামীম, লাল মিয়া, সাইফুল ও পিকআপের চালক সিরাজুল ছিলেন।

পরদিন মো. সালাউদ্দিন আহাম্মেদ কুমিল্লা সদর (দক্ষিণ) থানায় একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করেন। মামলায় কাশেমসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শাহজালালে প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে দুজন সঙ্গী প্রবেশের নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শাহজালালে প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে দুজন সঙ্গী প্রবেশের নির্দেশনা

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগমন ও বহির্গমন প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে সর্বোচ্চ দুজন সঙ্গী প্রবেশ করতে পারবেন—এমন নির্দেশনা জারি করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

এই নির্দেশনা আগামী রবিবার (২৭ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে। বিমানবন্দর এলাকার ডিপারচার ড্রাইভওয়ে ও অ্যারাইভাল ক্যানোপিতে যাত্রীপ্রতি সর্বোচ্চ দুজন ব্যক্তি ভেতরে প্রবেশের অনুমতি পাবেন।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক রাখা, যানজট নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় আরো বলা হয়, বিমানবন্দর এলাকায় আসা সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল ও কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

যানজট ও নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের পদক্ষেপকে জরুরি বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

বিমানবন্দর সূত্র বলছে, প্রয়োজনে এই নিয়ম আরো কড়াকড়ি করা হতে পারে। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণসহ পরিচয়পত্র রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য

শেখ হাসিনার মামাতো ভাই হিরা কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনার মামাতো ভাই হিরা কারাগারে

রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার আমির হোসেন হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামাতো ভাই শেখ ওয়ালিদুর রহমান হিরাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত এই আদেশ দেন।

এদিন হিরাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক মো. মাসুদ রানা তাঁকে কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। গত বুধবার ভাটারা এলাকা থেকে শেখ ওয়াহিদুর রহমান হিরাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মন্তব্য

দেড় দশকে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসে’ নিহতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দেড় দশকে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসে’ নিহতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

দেশে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের ‘সন্ত্রাসী’ হামলা এবং তৎকালীন ‘সরকারের নির্দেশে’ রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাবা মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ এবং মামা মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই নির্দেশ দেন।

সাক্ষাতে আবরার ফাহাদের পরিবার দাবি জানায়, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের তালিকা তৈরি করে প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। একই সঙ্গে আবরার হত্যা মামলার বিচার দ্রুত শেষ করতে সরকারের উদ্যোগ চান তাঁরা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা পুরো জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। এ ঘটনার বিচার অবশ্যই শেষ হবে। গণ-অভ্যুত্থানের আগের ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ও তাদের সংগঠনের হাতে যারা প্রাণ হারিয়েছে, তাদের প্রতিটি ঘটনার সঠিক তদন্ত হবে। তৎকালীন সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে যে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছে, সেগুলোও তদন্তের আওতায় রয়েছে।

সরকার এরই মধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।

সাক্ষাৎকালে মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ বলেন, ‘দেশের স্বার্থে কথা বলার কারণেই আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অসম পানিবণ্টনের বিরুদ্ধেও সে কথা বলেছিল। আজও তার মা ছেলের জন্য কান্না করে।

 

মন্তব্য

হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজউকের প্লট

    রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান!
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজউকের প্লট

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ১৫ চালককে প্লট দেওয়া হয়।

গত বুধবার কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে এই অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। গতকাল সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য জানান।

দুদক সূত্র জানায়, রাজউকের ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে নানা দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ঝিলমিল প্রকল্পের প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার ক্ষেত্রে চার শ্রেণিতে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বরাদ্দের ক্ষেত্রে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে চিঠি দিলে রাজউক তা বাস্তবায়ন করে। ওই প্রকল্পে ১৩/এ ধারার আওতায় বিভিন্ন সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২-এর গাড়িচালক, বিশেষ সহকারীর গাড়িচালক, সহকারী একান্ত সচিব-১-এর চালক, একান্ত সচিব-১ ও ২-এর চালক, প্রটোকল অফিসারের চালক, মুখ্য
সচিবের চালক, চিফ ফটোগ্রাফারের চালকসহ প্রায় ১৫ জন চালককে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়।

তবে এসআরও এবং রাজউক বিধিতে অসামান্য অবদানের কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া পাওয়া যায়নি। প্লট বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের কোন কোন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রয়েছে তার উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ