ঢাকা, মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০২৫
৬ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৬ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০২৫
৬ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৬ মহররম ১৪৪৭

ইলিশ নেই, চড়েছে অন্য মাছের দাম

  • আরেক দফা কমেছে পেঁয়াজের দর
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ইলিশ নেই, চড়েছে অন্য মাছের দাম

বেশ কিছুদিন ধরে রাজধানীর মাছের বাজারে রাজত্ব ছিল ইলিশের। দাম নাগালে থাকার কারণে শুধু বাজারেই নয়, ঢাকার বিভিন্ন অলিগলিতেও দেদার ইলিশ বিক্রি হয়েছে। এ কারণে অন্য মাছের চাহিদা ছিল কম। প্রজনন মৌসুমে ইলিশ মাছ ধরা, পরিবহন, বাজারজাত নিষিদ্ধ করার ফলে কদর বেড়েছে অন্য মাছের।

এ সময়ে বাজারগুলোতে একটু চড়া দামেই মাছ বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছের বাজার চড়া হলেও আরো এক ধাপ কমেছে পেঁয়াজের দাম।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে রুই, টেংরা, পাবদা, চিংড়ি, কই, সরপুঁটি, তেলাপিয়া, পোয়াসহ বিভিন্ন প্রকারের ছোট মাছ বিক্রি হতে দেখা গেছে। মাছের পর্যাপ্ত সরবরাহ চোখে পড়েছে।

রামপুরা কাঁচাবাজারে গতকাল সকালে ৫০০ টাকা দিয়ে এক কেজি পাবদা মাছ কেনেন আজিজুর রহমান, যদিও তাঁর কাছে প্রতি কেজির দাম চাওয়া হয়েছিল ৫৫০ টাকা। এই ক্রেতা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ইলিশ যখন ছিল তখন ৪০০ টাকায় পাবদা মাছ কিনেছি। ইলিশ ধরা বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ১০০ টাকা বাড়তি গুনতে হলো।’

রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচাবাজারে কই মাছ কেনার জন্য দরদাম করছিলেন এক ক্রেতা।

বিক্রেতা প্রতি কেজির দাম হাঁকেন ১৮০ টাকা। ক্রেতা ১৪০ টাকা হাঁকলেও বিক্রেতা জানিয়ে দেন ১৬০ টাকার কমে বিক্রি করলে তাঁর লোকসান গুনতে হবে।  আনোয়ার নামের এই ক্রেতা বলেন, ‘চাষের কই ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় কিনি। আজকে ১৬০ টাকা চাচ্ছে।’ একইভাবে বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি টেংরা মাছ মানভেদে প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, মাঝারি আকারের রুই মাছ ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি, বড় রুই মাছ ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি, সরপুঁটি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি, চিংড়ি ৫৫০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা কেজি, পোয়া মাছ ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
কয়েক দিন আগেও বিভিন্ন প্রকারের মলা মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। এখন এগুলো ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতে দেখা যায়।    

মাছের চড়া দামের কারণ জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা শফিকুল বলেন, ‘ইলিশ বিক্রি বন্ধ। এখন অন্য মাছের চাহিদা বাড়ছে। হঠাৎ চাহিদা বাড়ার কারণে বাজার একটু চড়া।’ উল্লেখ্য, প্রজনন মৌসুমের কারণে গত ৯ অক্টোবর থেকে সরকার ইলিশ ধরা, পরিবহন ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে। মোট ২২ দিন এই নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকবে।

এদিকে মাসের শুরুতে ভোক্তাদের কাছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা পেঁয়াজের দাম আরো এক ধাপ কমেছে। বর্তমানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা তিন-চার দিন আগেও ছিল ৯০ টাকায়। কমেছে আমদানি করা পেঁয়াজের দামও। মিয়ানমার থেকে আমদানি করে আনা পেঁয়াজ দেখতে অনেকটা দেশি পেঁয়াজের মতোই। এই পেঁয়াজগুলো প্রতি কেজি ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ভারতীয় ও তুরস্কের পেঁয়াজ ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে, যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মা বললেন ‘ও বাবা, আমার রায়েশা কই’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
মা বললেন ‘ও বাবা, আমার রায়েশা কই’

বিকেল ৩টা। চারদিকে হৈচৈ। একটির পর একটি অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকছে আর বের হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ছাড়া কাউকেই ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

ঠিক সে সময় সন্তানের খোঁজে এক মা দৌড়ে স্কুলের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। আর্মির ব্যারিকেডে তিনি আর সামনে আগাতে পারেননি। থেমে গিয়ে মা রাইমা হোসেন ওই সৈনিককে জিজ্ঞেস করেন, ও বাবা, আমার রায়েশা কই? গতকাল মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনার পর সরেজমিনে এই চিত্র দেখা যায়। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রায়েশা আলমকে খুঁজতে তার মা রাইমা হোসেন স্কুলের গেটের সামনে আসেন।
পরে শিক্ষার্থীরাই তাঁকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হয়।

 

মন্তব্য

দুর্ঘটনার খবর বিশ্ব গণমাধ্যমে

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
দুর্ঘটনার খবর বিশ্ব গণমাধ্যমে

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের এ খবর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বেশ গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের খবর জানিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এতে ফায়ার সার্ভিসের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছে। 

মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি ঢাকায় স্কুলে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১৬ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি স্কুল ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ১৯, আহত হয়েছে শতাধিক। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বহরে থাকা চীনের তৈরি একটি এফ-৭ যুদ্ধবিমান প্রশিক্ষণ মহড়া চলাকালে বিধ্বস্ত হয়েছে।

মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার বলেছে, বাংলাদেশে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। ঢাকার একটি কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইংরেজি দৈনিক গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উত্তরে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত ও আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

এ ছাড়া মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউজ উইক, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে এক্সপ্রেস, ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বাংলাদেশের এই বিমান বিধ্বস্তের খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

মন্তব্য
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর অভিমত

৭ শিশুর পরিচয় শনাক্তে লাগবে ডিএনএ পরীক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
৭ শিশুর পরিচয় শনাক্তে লাগবে ডিএনএ পরীক্ষা

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, যে ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছেন, তারা সবাই শিশু। এর মধ্যে সাতজনের লাশ শনাক্ত করা যায়নি। তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা লাগবে।

তবে সর্বশেষ তথ্যে জানানো হয়েছে মোট ২০ জন প্রাণ হারিয়েছে।

গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। সায়েদুর রহমান বলেন, তাঁদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৮৮ জন হাসপাতালে ভর্তি আছে। প্রাথমিক মূল্যায়নে ২৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এ সময় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেন, আজ তাদের রক্তের প্রয়োজন নেই। আগামীকাল (মঙ্গলবার) রক্তের প্রয়োজন হবে। তাই আজ আর কারো কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে না।

নাসির উদ্দীন বলেন, ইনফেকশন (সংক্রমণ) হলে মৃত্যুঝুঁকি বাড়তে পারে।

তাই হাসপাতালে বহিরাগতদের প্রবেশ না করার অনুরোধ জানান তিনি। সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টা এবং রাজনৈতিক দলের নেতারা এলেও রোগীদের কাছে যাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।

 

মন্তব্য
মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত

২০ জন শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়ে চিরবিদায় নিলেন শিক্ষিকা মেহরিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
২০ জন শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়ে চিরবিদায় নিলেন শিক্ষিকা মেহরিন
মেহরিন চৌধুরী

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষিকা মেহরিন চৌধুরীর বীরত্ব ও আত্মত্যাগ এখন দেশের মানুষের হৃদয়ে গভীর রেখাপাত করছে। প্রাণপণ চেষ্টা করে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীকে মৃত্যুর মুখ থেকে রক্ষা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর নিজের। তাঁর ভাই মানাফ এম চৌধুরী কালের কণ্ঠকে টেলিফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গতকাল সোমবার দুপুরে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত এবং শতাধিক শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

তাঁদের বেশির ভাগই ছুটে গেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।

৪৬ বছর বয়সী মেহরিন চৌধুরী শতভাগ দগ্ধ অবস্থায় ওই ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বার্ন ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি, তাঁর মৃত্যুর খবর সামাজিক মাধ্যমে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার পরপরই ক্লাসরুম থেকে শিক্ষার্থীদের দ্রুত সরিয়ে ফেলেন মেহরিন। তাদের নিরাপদে বের করে দিতে গিয়ে নিজে আর সময়মতো বের হতে পারেননি। উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া এক সেনা সদস্য বলেন, ম্যাডাম ভেতরে ঢুকে গিয়ে বাচ্চাগুলারে বের করে দিছেন, তারপর উনিই বের হতে পারেননি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষিকা মেহরিনের সাহসিকতায় অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীর প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।

মানবিকতা, সাহসিকতা ও দায়িত্বশীলতার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে রইলেন মেহরিন চৌধুরী। শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচিয়ে নিজে হারিয়ে গেলেন। একজন শিক্ষিকার এমন আত্মত্যাগ কোনোভাবেই ভোলার নয়।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ