ঢাকা, মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০২৫
৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৬ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০২৫
৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৬ মহররম ১৪৪৭

ওয়েট ব্লু রপ্তানির পক্ষে নাটোরের ব্যবসায়ীরা

  • চামড়া কারসাজির জন্য ট্যানারি মালিক ও আড়তদারদের দায়ী করছে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা
রেজাউল করিম রেজা, নাটোর
রেজাউল করিম রেজা, নাটোর
শেয়ার
ওয়েট ব্লু রপ্তানির পক্ষে নাটোরের ব্যবসায়ীরা

নাটোরের ব্যবসায়ীরা ট্যানারি মালিকদের উদাসীনতার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে পাওনা পরিশোধ না করার অভিযোগ করেছে। একই সঙ্গে ওয়েট ব্লু রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় চামড়ার দরপতন হচ্ছে বলেও দাবি করছে তারা। এই ব্যবসায়ীরা মনে করছে, ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির সুযোগ দিলে কাঁচা চামড়ার বাজার আবার চাঙ্গা হবে। 

অন্যদিকে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছে, ট্যানারি মালিক ও আড়তদাররা মিলে কারসাজি করে চামড়ার দাম কমিয়েছে।

এ চক্রের কাছে সবাই এখন জিম্মি।

নাটোর শহরের আড়ত ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা আড়তে কাঁচা চামড়া নিয়ে আসছে। তবে ঢাকা থেকে ট্যানারি মালিক অথবা তাদের কোনো প্রতিনিধি এখনো নাটোরে চামড়া কেনার জন্য আসেনি। স্থানীয়ভাবে অল্প কিছু চামড়া কেনাবেচা হচ্ছে।

লবণজাত গরুর কাঁচা চামড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা বর্গফুট এবং খাসির চামড়া ২০ থেকে ২৫ টাকা বর্গফুট দরেই কেনাবেচা হচ্ছে। 

নাটোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সহসভাপতি লুউৎক্ষের রহমান লাল্টু বলেন, সাধারণত ঈদের আগে ট্যানারি মালিকরা তাঁদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করে দেয়। ফলে তাঁদের পুঁজিসংকট থাকে না। এ বছর পাঁচ-ছয়টি ট্যানারি ছাড়া কেউ নাটোরের কোনো কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের পাওনা পরিশোধ করেনি।

শুধু কাঁচা চামড়া রপ্তানি সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ নয়। ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির সুযোগ দিতে হবে বলে মনে করেন এ ব্যবসায়ী।

আরেক ব্যবসায়ী মঞ্জুরুল আলম হিরু বলেন, ‘একসময় আমাদের দেশ থেকে ওয়েট ব্লু চামড়া বিদেশে রপ্তানি করা হতো। তখন চামড়া ব্যবসায়ীদের ছিল স্বর্ণযুগ। কিন্তু ৯০-এর দশকে ওয়েট ব্লু রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ঈদের পরে গত দুই দিন নাটোরের মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা প্রত্যেকেই চামড়া কিনে লোকসান দিচ্ছে। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে আড়তদাররা চামড়া কিনছে না। যে চামড়া তারা ৮০০ টাকায় কিনেছে সেটি বিক্রি করতে হচ্ছে ৪০০ টাকায়। নাটোরের আড়তগুলোতে গরুর চামড়া ৩০০-৪০০ টাকা এবং খাসির চামড়া ২০-৩০ টাকা বলছে।

তবে নাটোরের বড় বড় কাঁচা চামড়ার ব্যবসায়ীরা বলছে, নাটোরের বেশির ভাগ আড়তদার বর্তমানে মূলত কমিশন ভিত্তিতে চামড়া কেনাবেচা করে। সুতরাং লাভ-লোকসানের ব্যাপারটি নির্ভর করে যারা চামড়া নিয়ে আসছে অথবা যারা চামড়া কিনছে।

নাটোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা যে চামড়া কিনি, লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াকরণ করতে গরু ও মহিষের চামড়াপ্রতি আরো ২০০-৩০০ টাকা খরচ হয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘দাম না জেনে কোনো কোনো মৌসুমি ব্যবসায়ী চামড়া কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা তাদের চামড়া গুদামে প্রক্রিয়াকরণ করে দিচ্ছি যাতে তাদের লোকসান করতে না হয়।’

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও সালমা ট্যানারির মালিক সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ‘ট্যানারির মালিকরা পাওনা অর্থ পরিশোধ করছে না, এ কথা ঠিক নয়। ঢালাওভাবে অভিযোগ করাও ঠিক হচ্ছে না। কারণ বেশির ভাগ ট্যানারি আড়তদারদের টাকা দিয়েছে। তারা কম দামে চামড়া কিনছে। আমাদের কাছে বেশি দামেই চামড়া বিক্রি করবে। লবণযুক্ত চামড়া আমাদের এক হাজার টাকার ওপরে কিনতে হবে।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মা বললেন ‘ও বাবা, আমার রায়েশা কই’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
মা বললেন ‘ও বাবা, আমার রায়েশা কই’

বিকেল ৩টা। চারদিকে হৈচৈ। একটির পর একটি অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকছে আর বের হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ছাড়া কাউকেই ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

ঠিক সে সময় সন্তানের খোঁজে এক মা দৌড়ে স্কুলের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। আর্মির ব্যারিকেডে তিনি আর সামনে আগাতে পারেননি। থেমে গিয়ে মা রাইমা হোসেন ওই সৈনিককে জিজ্ঞেস করেন, ও বাবা, আমার রায়েশা কই? গতকাল মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনার পর সরেজমিনে এই চিত্র দেখা যায়। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রায়েশা আলমকে খুঁজতে তার মা রাইমা হোসেন স্কুলের গেটের সামনে আসেন।
পরে শিক্ষার্থীরাই তাঁকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হয়।

 

মন্তব্য

দুর্ঘটনার খবর বিশ্ব গণমাধ্যমে

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
দুর্ঘটনার খবর বিশ্ব গণমাধ্যমে

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের এ খবর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বেশ গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের খবর জানিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এতে ফায়ার সার্ভিসের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছে। 

মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি ঢাকায় স্কুলে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১৬ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি স্কুল ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ১৯, আহত হয়েছে শতাধিক। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বহরে থাকা চীনের তৈরি একটি এফ-৭ যুদ্ধবিমান প্রশিক্ষণ মহড়া চলাকালে বিধ্বস্ত হয়েছে।

মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার বলেছে, বাংলাদেশে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। ঢাকার একটি কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইংরেজি দৈনিক গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উত্তরে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত ও আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

এ ছাড়া মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউজ উইক, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে এক্সপ্রেস, ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বাংলাদেশের এই বিমান বিধ্বস্তের খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

মন্তব্য
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর অভিমত

৭ শিশুর পরিচয় শনাক্তে লাগবে ডিএনএ পরীক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
৭ শিশুর পরিচয় শনাক্তে লাগবে ডিএনএ পরীক্ষা

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, যে ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছেন, তারা সবাই শিশু। এর মধ্যে সাতজনের লাশ শনাক্ত করা যায়নি। তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা লাগবে।

তবে সর্বশেষ তথ্যে জানানো হয়েছে মোট ২০ জন প্রাণ হারিয়েছে।

গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। সায়েদুর রহমান বলেন, তাঁদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৮৮ জন হাসপাতালে ভর্তি আছে। প্রাথমিক মূল্যায়নে ২৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এ সময় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেন, আজ তাদের রক্তের প্রয়োজন নেই। আগামীকাল (মঙ্গলবার) রক্তের প্রয়োজন হবে। তাই আজ আর কারো কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে না।

নাসির উদ্দীন বলেন, ইনফেকশন (সংক্রমণ) হলে মৃত্যুঝুঁকি বাড়তে পারে।

তাই হাসপাতালে বহিরাগতদের প্রবেশ না করার অনুরোধ জানান তিনি। সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টা এবং রাজনৈতিক দলের নেতারা এলেও রোগীদের কাছে যাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।

 

মন্তব্য
মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত

২০ জন শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়ে চিরবিদায় নিলেন শিক্ষিকা মেহরিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
২০ জন শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়ে চিরবিদায় নিলেন শিক্ষিকা মেহরিন
মেহরিন চৌধুরী

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষিকা মেহরিন চৌধুরীর বীরত্ব ও আত্মত্যাগ এখন দেশের মানুষের হৃদয়ে গভীর রেখাপাত করছে। প্রাণপণ চেষ্টা করে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীকে মৃত্যুর মুখ থেকে রক্ষা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর নিজের। তাঁর ভাই মানাফ এম চৌধুরী কালের কণ্ঠকে টেলিফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গতকাল সোমবার দুপুরে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত এবং শতাধিক শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

তাঁদের বেশির ভাগই ছুটে গেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।

৪৬ বছর বয়সী মেহরিন চৌধুরী শতভাগ দগ্ধ অবস্থায় ওই ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বার্ন ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি, তাঁর মৃত্যুর খবর সামাজিক মাধ্যমে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার পরপরই ক্লাসরুম থেকে শিক্ষার্থীদের দ্রুত সরিয়ে ফেলেন মেহরিন। তাদের নিরাপদে বের করে দিতে গিয়ে নিজে আর সময়মতো বের হতে পারেননি। উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া এক সেনা সদস্য বলেন, ম্যাডাম ভেতরে ঢুকে গিয়ে বাচ্চাগুলারে বের করে দিছেন, তারপর উনিই বের হতে পারেননি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষিকা মেহরিনের সাহসিকতায় অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীর প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।

মানবিকতা, সাহসিকতা ও দায়িত্বশীলতার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে রইলেন মেহরিন চৌধুরী। শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচিয়ে নিজে হারিয়ে গেলেন। একজন শিক্ষিকার এমন আত্মত্যাগ কোনোভাবেই ভোলার নয়।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ