ঢাকা, মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০২৫
৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৬ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০২৫
৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৬ মহররম ১৪৪৭
প্রত্যাবাসন নিয়ে কূটনৈতিক ব্রিফিং

রোহিঙ্গা নেতাদের রাখাইন সফর করিয়ে আস্থা সৃষ্টির পরিকল্পনা

কূটনৈতিক প্রতিবেদক
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
শেয়ার
রোহিঙ্গা নেতাদের রাখাইন সফর করিয়ে আস্থা সৃষ্টির পরিকল্পনা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর উদ্যোগ ভেস্তে যাওয়ার পর এবার রোহিঙ্গা নেতাদের সাময়িকভাবে মিয়ানমারের রাখাইনে পাঠিয়ে আস্থা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে সরকার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় নির্বাচন ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে বিদেশি কূটনৈতিক মিশনগুলোর প্রধানদের ব্রিফ করার পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, জাপান এমন একটি প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশও এ নিয়ে পরিকল্পনা করছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) সুনির্দিষ্টভাবে বলেছে যে রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সেখানে পরিস্থিতি সরেজমিনে গিয়ে দেখার সুযোগ পাওয়া উচিত। সার্বিক দিক বিবেচনায়, আশ্রিত সব রোহিঙ্গার সেখানে পরিদর্শন করার সুযোগ পাওয়া কঠিন। এ ক্ষেত্রে রোহিঙ্গা নেতাদের (মাঝি) রাখাইনে পরিদর্শনে পাঠানো হলে তারা সেখানকার পরিস্থিতি দেখে এসে অন্য রোহিঙ্গাদের জানাতে পারবে।

বাংলাদেশ ও মিয়ানমার গত ৩০ অক্টোবর ঘোষণা করেছিল, ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে।

কিন্তু প্রত্যাবাসনের তালিকায় থাকা রোহিঙ্গারা এখনই ফিরতে আগ্রহী নয়। অন্যদিকে রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ফিরতে আগ্রহী এমন তথ্য যাচাইয়ের দায়িত্ব পালনকারী ইউএনএইচসিআর তাদের কাজ শেষ করতে পারেনি। প্রত্যাবাসনের নির্ধারিত তারিখের মাত্র এক দিন আগে গত বুধবার তারা কাজ শুরু করেছে। অথচ বাংলাদেশ সরকার তাদের প্রত্যাবাসনের তালিকা দিয়েছে গত ২৮ অক্টোবর।
তালিকা পাওয়ার পরও ইউএনএইচসিআর কেন দেরিতে কাজ শুরু করল, সেই বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ প্রশ্ন ইউএনএইচসিআরকে করুন।’

প্রত্যাবাসনপ্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করেনি—এমন প্রচারণা নাকচ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সব সময় জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা করছে ও যোগাযোগ রাখছে।

জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় গতকালের কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংলাপ ছাড়াও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে জটিলতা, মিয়ানমারে পরিবেশ সৃষ্টিসহ এ সংকটের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ের পর ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা সাংবাদিকদের বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী কূটনৈতিক কোরকে আগামী নির্বাচনের প্রাক্কালে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সামনে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে নেওয়া উদ্যোগ, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনপ্রক্রিয়া নিয়ে ব্রিফ করেছেন। তিনি বলেন, প্রত্যাবাসন একটি জটিল প্রক্রিয়া।

ভারত রাখাইনের বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের নিরাপদ, দ্রুত ও টেকসই প্রত্যাবর্তন চায়। যথাযথ প্রক্রিয়ায় এ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে। রোহিঙ্গাদের জন্য ভারত মিয়ানমারের রাখাইনে বাড়ি নির্মাণ করছে এবং এ দেশে আশ্রিতদের জন্য তিন দফায় মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছে। ভারতীয় হাইকমিশনার প্রত্যাবাসন পরিকল্পনাকে চলমান উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ভোটের নতুন তারিখ জানানোর পাশাপাশি তফসিল ঘোষণার আগে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন এবং কতক্ষণ আলোচনা করেছেন, তারও একটি তালিকা তিনি কূটনীতিকদের দিয়েছেন। বিশেষ করে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় আলোচনার কথাও তিনি জানিয়েছেন।

কূটনীতিকদের প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মনে হয়, সবাই খুব সন্তুষ্ট যে এটি (উদ্যোগ) এগিয়ে চলেছে। গতকাল (বুধবার) একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। সেটি সম্পর্কেও মোটামুটি সবাই জানে।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গাদের প্রথম দলের ফেরত যাওয়ার কথা ছিল। বাংলাদেশ কখনো জোর করে ফেরত পাঠানোর পক্ষে নয়, সব সময় শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানের পক্ষে ছিল। এখনো আছে। বাংলাদেশ সেটিই চেষ্টা করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভারত ও চীনকে রোহিঙ্গাদের এলাকাগুলোতে বাড়ি নির্মাণ করতে অনুরোধ করেছে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে না পারা সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা ফিরতে চাচ্ছে না। এখানে নানা বিষয় কাজ করছে। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ জোর করে ফেরত পাঠাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কেন জোর করে ফেরত পাঠাবে? আমরা চাইলে তো আগেই তাদের আটকে দিতে পারতাম (সীমান্তে)।’

অন্যদিকে গতকাল রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন উদ্যোগের মধ্যে এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা বিবৃতি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসনবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি রিচার্ড অলব্রাইটের গত ১০ থেকে ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বলেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থীর প্রত্যাবাসন শুরু করার বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের যৌথ পরিকল্পনার ওপর ঘনিষ্ঠভাবে নজর রাখছে। আমরা ইউএনএইচসিআরের মূল্যায়নের সঙ্গে একমত যে মিয়ানমারের পরিস্থিতি এখনো শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের জন্য পুরোপুরি অনুকূল নয়।’

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিষয়ক মন্ত্রী মার্ক ফিল্ড প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ জানান। কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রী ম্যারি ক্লদ বিবেও প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা উদ্বেগ জানিয়ে একে স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, টেকসই, সম্মানজনক ও মানবাধিকারের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হওয়ার ওপর জোর দেন। নিউ ইয়র্কভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচও গতকাল প্রত্যাবাসন উদ্যোগ স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দেয়।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মা বললেন ‘ও বাবা, আমার রায়েশা কই’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
মা বললেন ‘ও বাবা, আমার রায়েশা কই’

বিকেল ৩টা। চারদিকে হৈচৈ। একটির পর একটি অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকছে আর বের হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ছাড়া কাউকেই ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

ঠিক সে সময় সন্তানের খোঁজে এক মা দৌড়ে স্কুলের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। আর্মির ব্যারিকেডে তিনি আর সামনে আগাতে পারেননি। থেমে গিয়ে মা রাইমা হোসেন ওই সৈনিককে জিজ্ঞেস করেন, ও বাবা, আমার রায়েশা কই? গতকাল মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনার পর সরেজমিনে এই চিত্র দেখা যায়। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রায়েশা আলমকে খুঁজতে তার মা রাইমা হোসেন স্কুলের গেটের সামনে আসেন।
পরে শিক্ষার্থীরাই তাঁকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হয়।

 

মন্তব্য

দুর্ঘটনার খবর বিশ্ব গণমাধ্যমে

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
দুর্ঘটনার খবর বিশ্ব গণমাধ্যমে

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের এ খবর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বেশ গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের খবর জানিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এতে ফায়ার সার্ভিসের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছে। 

মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি ঢাকায় স্কুলে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১৬ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি স্কুল ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ১৯, আহত হয়েছে শতাধিক। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বহরে থাকা চীনের তৈরি একটি এফ-৭ যুদ্ধবিমান প্রশিক্ষণ মহড়া চলাকালে বিধ্বস্ত হয়েছে।

মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার বলেছে, বাংলাদেশে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। ঢাকার একটি কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইংরেজি দৈনিক গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উত্তরে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত ও আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

এ ছাড়া মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউজ উইক, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে এক্সপ্রেস, ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বাংলাদেশের এই বিমান বিধ্বস্তের খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

মন্তব্য
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর অভিমত

৭ শিশুর পরিচয় শনাক্তে লাগবে ডিএনএ পরীক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
৭ শিশুর পরিচয় শনাক্তে লাগবে ডিএনএ পরীক্ষা

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, যে ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছেন, তারা সবাই শিশু। এর মধ্যে সাতজনের লাশ শনাক্ত করা যায়নি। তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা লাগবে।

তবে সর্বশেষ তথ্যে জানানো হয়েছে মোট ২০ জন প্রাণ হারিয়েছে।

গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। সায়েদুর রহমান বলেন, তাঁদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৮৮ জন হাসপাতালে ভর্তি আছে। প্রাথমিক মূল্যায়নে ২৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এ সময় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেন, আজ তাদের রক্তের প্রয়োজন নেই। আগামীকাল (মঙ্গলবার) রক্তের প্রয়োজন হবে। তাই আজ আর কারো কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে না।

নাসির উদ্দীন বলেন, ইনফেকশন (সংক্রমণ) হলে মৃত্যুঝুঁকি বাড়তে পারে।

তাই হাসপাতালে বহিরাগতদের প্রবেশ না করার অনুরোধ জানান তিনি। সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টা এবং রাজনৈতিক দলের নেতারা এলেও রোগীদের কাছে যাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।

 

মন্তব্য
মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত

২০ জন শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়ে চিরবিদায় নিলেন শিক্ষিকা মেহরিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
২০ জন শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়ে চিরবিদায় নিলেন শিক্ষিকা মেহরিন
মেহরিন চৌধুরী

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষিকা মেহরিন চৌধুরীর বীরত্ব ও আত্মত্যাগ এখন দেশের মানুষের হৃদয়ে গভীর রেখাপাত করছে। প্রাণপণ চেষ্টা করে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীকে মৃত্যুর মুখ থেকে রক্ষা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর নিজের। তাঁর ভাই মানাফ এম চৌধুরী কালের কণ্ঠকে টেলিফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গতকাল সোমবার দুপুরে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত এবং শতাধিক শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

তাঁদের বেশির ভাগই ছুটে গেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।

৪৬ বছর বয়সী মেহরিন চৌধুরী শতভাগ দগ্ধ অবস্থায় ওই ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বার্ন ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি, তাঁর মৃত্যুর খবর সামাজিক মাধ্যমে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার পরপরই ক্লাসরুম থেকে শিক্ষার্থীদের দ্রুত সরিয়ে ফেলেন মেহরিন। তাদের নিরাপদে বের করে দিতে গিয়ে নিজে আর সময়মতো বের হতে পারেননি। উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া এক সেনা সদস্য বলেন, ম্যাডাম ভেতরে ঢুকে গিয়ে বাচ্চাগুলারে বের করে দিছেন, তারপর উনিই বের হতে পারেননি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষিকা মেহরিনের সাহসিকতায় অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীর প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।

মানবিকতা, সাহসিকতা ও দায়িত্বশীলতার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে রইলেন মেহরিন চৌধুরী। শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচিয়ে নিজে হারিয়ে গেলেন। একজন শিক্ষিকার এমন আত্মত্যাগ কোনোভাবেই ভোলার নয়।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ