জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের দুই শিক্ষক ও তিন শিক্ষার্থীর ওপর ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ শেষে ক্যাম্পাসে অছাত্রদের রাজনীতি নিষিদ্ধসহ তিন দফা দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন তাঁরা।
গতকাল রবিবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এরপর সংবাদ সম্মেলন করে দাবিগুলো জানান শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বাঁধন আহমেদ মারুফ বলেন, বিভাগে ছাত্রদল কর্তৃক হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিও কোনো বিবৃতি দেয়নি। শিক্ষকদের ওপর হামলা ও লাঞ্ছিত করার ঘটনা ছাত্রলীগের আমলেও হয়নি। তাহলে ৫ আগস্টের পর তারা এই সাহস কোথায় পায়?
শিক্ষার্থীদের দাবি তুলে ধরে বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইরফান হোসেন বলেন, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত বিভাগের সব ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে।
তাঁদের তিন দাবি হলো—১৩ জুলাই রবিবারের মধ্যেই তদন্তকাজ শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; যারা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় সরাসরি জড়িত তাদের অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে; একই সঙ্গে সাবেক শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।
তদন্ত কমিটি থেকে পদত্যাগ : এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের ওপর ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোশাররফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদদীন পদত্যাগ করেছেন।
শিক্ষক সমিতি ও ছাত্রদলের পাল্টাপাল্টি বিবৃতি : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কোনো শিক্ষকের গায়ে হাত তোলা হয়নি বলে দাবি করেছে জবি ছাত্রদল। শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল এবং সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন : এদিকে এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে। ওই কমিটি এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। কমিটি ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করবে।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটি দ্রুতই কার্যক্রম শেষ করে পদক্ষেপ নেবে।
এ ব্যাপারে এখন আর কিছু বলতে চাই না।’