পড়ার একটি চেয়ারও নেই সাধনার। দুটির বেশি তিনটি জামা নেই। বাবা নেই, ভাইও নেই। সাধনার মনের মধ্যে আছে কেবল সাধনা।
মেধাবী সাধনার পাশে আদ-দ্বীন
ফখরে আলম, যশোর

যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বাকড়ি গ্রামে বাড়ি সাধনা বিশ্বাসের। বাবা লক্ষণ বিশ্বাস ২০১৫ সালে মারা গেছেন। মা উল্লাসী বিশ্বাস ছাড়া সাধনার কেউ নেই। সম্পদ বলতে কেবল অভাব।
সরেজমিনে বাঘারপাড়া উপজেলা থেকে ১৮ কিলোমিটার দূর দুর্গম রাস্তা পেরিয়ে বাকড়ি বিলের পাশে সাধনাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সাধনা সবজি ক্ষেতে নিড়ানি দিচ্ছেন। তাঁর মা বিচলির গাদা দিচ্ছেন। সাধনা বললেন, ‘মায়ের সঙ্গে মাঠে কাজ করে হাঁস-মুরগি পুষে বই খাতা কিনেছি। রাত জেগে হারিকেনের আলোয় ভাঙা ঘরে বসে পড়েছি। আমার সাধনাই ছিল ডাক্তার হওয়ার। সুযোগ হলো। কিন্তু ডাক্তারি পড়ার খরচ কে দেবে? এই চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারিনি। আমার মা আদ-দ্বীন সমিতির সদস্য। সমিতির স্যারদের কাছে তিনি আমার কষ্টের কথা জানান। তাদের কথা মতো দরখাস্ত করি। আমাদের অবস্থা দেখে আমাকে আদ-দ্বীন আকিজ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ দিয়েছে। আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে ক্লাস শুরু হবে। পড়ার খরচ ১৩ লাখ ৯০ হাজার টাকার পাশাপাশি প্রতি মাসের খরচ আট হাজার টাকাও দিতে হবে না।’
সাধনা বলতে থাকেন, ‘এই সুযোগ পেয়ে আমি যারপরনাই খুশি হয়েছি। আমিও চিকিৎসক হয়ে অসহায় গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে এই দায় শোধ করব।’
সাধনার মা উল্লাসী বিশ্বাস বললেন, ‘মাঠে কাজ করে ১৫০ টাকা দিনে আয় করে তা দিয়ে সাধনার লেখাপড়ার খরচ চালিয়েছি। ওর খুব ইচ্ছা ডাক্তার হওয়ার। আদ-দ্বীন সেই আশা পূরণ করেছে। এ জন্য আদ-দ্বীনকে ধন্যবাদ জানাই। ভগবানকে স্মরণ করি।’
বাকড়ি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুকুমার সরকার বললেন, ‘সাধনা খুবই মেধাবী। ওর স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে, এ জন্য আমরা সবাই খুশি।’
স্থানীয় জামদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আশিষ কুমার বললেন, ‘মেয়েটি খুবই গরিব। ওর বাবা নেই। ওকে সব ধরনের সহযোগিতা করা উচিত।’
উল্লেখ্য, সাধনার পাশাপাশি খুলনার রুপসা এলাকার হতদরিদ্র পারভীন বেগমের মেয়ে শারমিন আক্তার ও সাতক্ষীরার তালা এলাকার রিকশাচালক মহিউদ্দিনের ছেলে সাব্বির হোসেন ছাড়াও আরো কয়েকজন গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীকে আদ-দ্বীন কর্তৃপক্ষ বিনা মূল্যে মেডিক্যালে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে আদ-দ্বীনের নির্বাহী পরিচালক ড. শেখ মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমরা কঠিন দরিদ্রতা অতিক্রম করে লেখাপড়া শিখেছি। আমার মা গৃহস্থ বাড়ি ঢেঁকি পাড় দিয়ে আমাদের মুখে খুদের ভাত তুলে দিয়েছেন। আমরা এই স্মৃতি মনে রেখেছি। এ জন্য অসহায় গরিব শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।’
সম্পর্কিত খবর

মানববন্ধন ও বিক্ষোভ


যাত্রাবাড়ী ও রমনায় দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আবাসিক হোটেল থেকে অজ্ঞাতপরিচয় ১২ বছরের শিশু এবং রমনায় একটি বাসা থেকে সুফিয়া আক্তার (১০) নামে অপর এক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর ২টা ও ভোর সাড়ে ৪টার দিকে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহগুলো ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ছেলেশিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে।

চাঁদা না পেয়ে হামলা আরো ৫ জন গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর পল্লবী থানা এলাকায় পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে এ কে বিল্ডার্স প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের মারধর ও গুলির ঘটনায় আরো পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তাঁরা হলেন মো. আব্বাস, মো. ইয়ামিন, মো. সোহেল, মো. মাজহারুল ও মো. চাঁদ মিয়া।
গতকাল সোমবার দুপুরে র্যাব-৪-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপস) কে এন রায় নিয়তি এ তথ্য দেন। তিনি বলেন, এর আগে গত রবিবার এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরো তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ঘটনায় মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগীর বিবরণে বলা হয়, গত ১১ জুলাই পল্লবীর আলব্দির টেক এলাকায় এ কে বিল্ডার্স নামের আবাসন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে না পেয়ে একদল লোক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসে হামলা চালায়। হামলাকারীরা এ সময় চারটি গুলি করে।

সংক্ষিপ্ত
ওয়ারীতে হামলার শিকার শিক্ষার্থী, গ্রেপ্তার ২
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর ওয়ারী থানায় হামলার শিকার হয়েছে সৈয়দ রেদোয়ান মাওলা (১৭) নামের এক শিক্ষার্থী। পরে এলাকাবাসী হামলাকারীদের মধ্যে আব্দুর রহিম মাহি (১৯) ও সাব্বির হোসেন রাতুল (১৯) নামের দুই কিশোরকে আটক করে পুলিশে দেয়।
রবিবার রাত ৯টার দিকে হাটখোলা রোডে ইলিশিয়াল ভবনের পেছনের গলিতে এ ঘটনা ঘটে। ওয়ারী থানার ওসি ফয়সাল আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, হামলাকারী ও ভুক্তভোগী সবাই শিক্ষার্থী।