ঢাকা, মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০২৫
৬ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৬ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০২৫
৬ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৬ মহররম ১৪৪৭
প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা নীতিমালা

জেলা-উপজেলা পর্যায়ে হচ্ছে বিশেষায়িত এমপিওভুক্ত স্কুল

আজিজুল পারভেজ
আজিজুল পারভেজ
শেয়ার
জেলা-উপজেলা পর্যায়ে হচ্ছে বিশেষায়িত এমপিওভুক্ত স্কুল

প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করছে সরকার। নীতিমালায় সারা দেশের উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে একটি করে বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন এবং তা সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো এমপিওভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রায় আড়াই লাখ প্রতিবন্ধী শিশুর জন্য বর্তমানে সারা দেশের জেলা পর্যায়ে মাত্র দেড় শতাধিক সরকারি এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রস্তাবিত নীতিমালা কার্যকর হলে দেশে ৬০৬টি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের সুযোগ তৈরি হবে।

‘প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা-২০১৬’-এর খসড়া প্রণয়ন করেছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গাজী মো. নুরুল কবির জানান, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সরকার, সুইড বাংলাদেশসহ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) পরিচালিত বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ২০০৯ সালে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছিল। এখন সারা দেশেই প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের সুযোগ তৈরি ও উৎসাহ দেওয়ার জন্য সামগ্রিকভাবে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আনোয়ার উল্লাহ বলেন, দেশে বিদ্যালয়ে যাওয়ার উপযোগী প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ প্রতিবন্ধী শিশু রয়েছে।

কিন্তু তাদের জন্য বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যাপ্ত নয়। তাদের জন্য মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিয়ে সারা দেশের জন্যই একটি সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। এ নীতিমালার বিশেষ দিক হচ্ছে—এর মাধ্যমে জাতীয় শিক্ষামানের সঙ্গে বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষামানের সমন্বয় করা হচ্ছে। ফলে বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে উত্তীর্ণ সার্টিফিকেটধারীরা সমমানের সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়ার সুযোগ পাবে।
বর্তমানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য এ সুযোগ নেই।

নীতিমালায় বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন, পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ, পাঠদান পদ্ধতি, পাঠ্যসূচি, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগসহ সামগ্রিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে প্রতিবন্ধী শিশুদের সহজভাবে শিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে সাধারণ স্কুলে যাওয়ার উপযোগী করে গড়ে তোলা এবং জীবনদক্ষতা উন্নয়নে বৃত্তিমূলক ও  কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে পুনর্বাসন করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে নীতিমালার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নেওয়া হয়েছে। অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এ বছরের মধ্যেই নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

নীতিমালা অনুযায়ী, প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য প্রতি উপজেলায় একটি, সিটি করপোরেশন এলাকায় তিনটি, পুরান জেলা সদরে দুটি, নতুন জেলা সদরে একটি বিশেষ স্কুল স্থাপনের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় পাঁচটি করে এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় দুটি স্কুলের প্রস্তাব রয়েছে। নতুন স্কুলের জন্য সিটি করপোরেশন এলাকায় পাঁচ শতক বা দুই হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট, জেলা সদরের জন্য ১০ শতক এবং উপজেলা পর্যায়ে ১৫ শতক জমি থাকতে হবে। ব্যক্তির নামে স্কুল করার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের নামে পাঁচ লাখ টাকা এককালীন দিতে হবে। দাতা সদস্যের জন্য এককালীন এক লাখ টাকা দিতে হবে।

নীতিমালা অনুসারে, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে ৫০ জন শিক্ষার্থী থাকতে হবে। তবে হাওর, চরাঞ্চল, পশ্চাত্পদ এলাকা ও পার্বত্য জেলাগুলোর ক্ষেত্রে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী থাকতে হবে। প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুসারে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। ৫০ জন শিক্ষার্থীর স্কুলে জনবল কাঠামো হবে ১৬ জনের।

স্কুলগুলোর শিক্ষাক্রম, পাঠসূচি, পরিদর্শন, তদারকি, প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন করবে মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন সেল ফর স্পেশাল স্কুল (এমইসিএসএস)। এটি জাতীয় প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হবে।

স্কুল স্থাপনের জন্য স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাগুলো নির্ধারিত ফরমে সমাজসেবা অধিদপ্তরে আবেদন করতে হবে। সরেজমিন পরিদর্শন প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় স্বীকৃতি দেবে। এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মতো এসব স্কুলের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় দেবে। প্রতিটি স্কুলে তিন বছরমেয়াদি ম্যানেজিং কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটিতে সরকারের প্রতিনিধি, অভিভাবক, দাতা, এনজিও ও শিক্ষকদের প্রতিনিধি থাকবে। প্রতিবছর স্কুলের আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে হবে।

নীতিমালায় স্কুল প্রতিষ্ঠার ছয় বছরের মধ্যে সরকার নির্ধারিত যোগ্যতা অর্জনের মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে, মৃদুমাত্রার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ প্রাথমিক এবং ১৫ শতাংশ মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করতে হবে। শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ৭০ শতাংশ প্রাথমিক শিক্ষা শেষে মাধ্যমিক শ্রেণিতে ভর্তির যোগ্য করতে হবে এবং ৬০ শতাংশকে এসএসসি পাস করাতে হবে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের ৮০ শতাংশকে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণের যোগ্য করতে হবে। ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এবং ৬৫ শতাংশকে এসএসসি পাস করাতে হবে।

বর্তমানে সরকারিভাবে ৬৪ জেলায় একটি করে সমন্বিত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী স্কুল, শ্রবণপ্রতিবন্ধীদের জন্য সাতটি স্কুল, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য পাঁচটি স্কুল ও অটিস্টিক শিশুদের জন্য ১০টি স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। এ ছাড়া সরকারি অর্থায়নে বেসরকারিভাবে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের জন্য ৬২টি স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। এর মধ্যে সুইড বাংলাদেশ পরিচালিত ৪৮টি, বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন পরিচালিত সাতটি ইনক্লুসিভ স্কুল এবং প্রয়াস পরিচালিত একটি অটিস্টিক স্কুল রয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীর  মিরপুরে ‘জাতীয় বিশেষ শিক্ষাকেন্দ্র’ রয়েছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মা বললেন ‘ও বাবা, আমার রায়েশা কই’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
মা বললেন ‘ও বাবা, আমার রায়েশা কই’

বিকেল ৩টা। চারদিকে হৈচৈ। একটির পর একটি অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকছে আর বের হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ছাড়া কাউকেই ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

ঠিক সে সময় সন্তানের খোঁজে এক মা দৌড়ে স্কুলের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। আর্মির ব্যারিকেডে তিনি আর সামনে আগাতে পারেননি। থেমে গিয়ে মা রাইমা হোসেন ওই সৈনিককে জিজ্ঞেস করেন, ও বাবা, আমার রায়েশা কই? গতকাল মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনার পর সরেজমিনে এই চিত্র দেখা যায়। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রায়েশা আলমকে খুঁজতে তার মা রাইমা হোসেন স্কুলের গেটের সামনে আসেন।
পরে শিক্ষার্থীরাই তাঁকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হয়।

 

মন্তব্য

দুর্ঘটনার খবর বিশ্ব গণমাধ্যমে

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
দুর্ঘটনার খবর বিশ্ব গণমাধ্যমে

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের এ খবর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বেশ গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের খবর জানিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এতে ফায়ার সার্ভিসের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছে। 

মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি ঢাকায় স্কুলে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১৬ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি স্কুল ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ১৯, আহত হয়েছে শতাধিক। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বহরে থাকা চীনের তৈরি একটি এফ-৭ যুদ্ধবিমান প্রশিক্ষণ মহড়া চলাকালে বিধ্বস্ত হয়েছে।

মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার বলেছে, বাংলাদেশে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। ঢাকার একটি কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইংরেজি দৈনিক গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উত্তরে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত ও আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

এ ছাড়া মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউজ উইক, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে এক্সপ্রেস, ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বাংলাদেশের এই বিমান বিধ্বস্তের খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

মন্তব্য
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর অভিমত

৭ শিশুর পরিচয় শনাক্তে লাগবে ডিএনএ পরীক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
৭ শিশুর পরিচয় শনাক্তে লাগবে ডিএনএ পরীক্ষা

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, যে ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছেন, তারা সবাই শিশু। এর মধ্যে সাতজনের লাশ শনাক্ত করা যায়নি। তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা লাগবে।

তবে সর্বশেষ তথ্যে জানানো হয়েছে মোট ২০ জন প্রাণ হারিয়েছে।

গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। সায়েদুর রহমান বলেন, তাঁদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৮৮ জন হাসপাতালে ভর্তি আছে। প্রাথমিক মূল্যায়নে ২৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এ সময় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেন, আজ তাদের রক্তের প্রয়োজন নেই। আগামীকাল (মঙ্গলবার) রক্তের প্রয়োজন হবে। তাই আজ আর কারো কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে না।

নাসির উদ্দীন বলেন, ইনফেকশন (সংক্রমণ) হলে মৃত্যুঝুঁকি বাড়তে পারে।

তাই হাসপাতালে বহিরাগতদের প্রবেশ না করার অনুরোধ জানান তিনি। সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টা এবং রাজনৈতিক দলের নেতারা এলেও রোগীদের কাছে যাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।

 

মন্তব্য
মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত

২০ জন শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়ে চিরবিদায় নিলেন শিক্ষিকা মেহরিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
২০ জন শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়ে চিরবিদায় নিলেন শিক্ষিকা মেহরিন
মেহরিন চৌধুরী

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষিকা মেহরিন চৌধুরীর বীরত্ব ও আত্মত্যাগ এখন দেশের মানুষের হৃদয়ে গভীর রেখাপাত করছে। প্রাণপণ চেষ্টা করে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীকে মৃত্যুর মুখ থেকে রক্ষা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর নিজের। তাঁর ভাই মানাফ এম চৌধুরী কালের কণ্ঠকে টেলিফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গতকাল সোমবার দুপুরে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত এবং শতাধিক শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

তাঁদের বেশির ভাগই ছুটে গেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।

৪৬ বছর বয়সী মেহরিন চৌধুরী শতভাগ দগ্ধ অবস্থায় ওই ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বার্ন ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি, তাঁর মৃত্যুর খবর সামাজিক মাধ্যমে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার পরপরই ক্লাসরুম থেকে শিক্ষার্থীদের দ্রুত সরিয়ে ফেলেন মেহরিন। তাদের নিরাপদে বের করে দিতে গিয়ে নিজে আর সময়মতো বের হতে পারেননি। উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া এক সেনা সদস্য বলেন, ম্যাডাম ভেতরে ঢুকে গিয়ে বাচ্চাগুলারে বের করে দিছেন, তারপর উনিই বের হতে পারেননি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষিকা মেহরিনের সাহসিকতায় অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীর প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।

মানবিকতা, সাহসিকতা ও দায়িত্বশীলতার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে রইলেন মেহরিন চৌধুরী। শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচিয়ে নিজে হারিয়ে গেলেন। একজন শিক্ষিকার এমন আত্মত্যাগ কোনোভাবেই ভোলার নয়।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ