ঢাকা, মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৯ মহররম ১৪৪৭

ঢুকছে চোরাই ভারতীয় মোবাইল ফোন

রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
শেয়ার
ঢুকছে চোরাই ভারতীয় মোবাইল ফোন

শোরুমগুলোতে স্যামসাং নোট-৩ মোবাইল ফোনসেট বিক্রি হচ্ছে ৫৩ হাজার টাকায়। নোট-২-এর দাম ৫১ হাজার টাকা। কিন্তু চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা খাসেরহাট থেকে শুরু করে রাজশাহী জেলা সদরের বিভিন্ন শোরুমে এগুলো পাওয়া যাচ্ছে যথাক্রমে ৩৫ ও সাড়ে ২২ হাজার টাকায়।

কিভাবে এত কম দামে বিক্রি করা সম্ভব? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেল, নামি ব্র্যান্ডের এসব ফোনসেট ভারত থেকে চোরাই পথে ঢুকছে ওই অঞ্চলে।

চোরাচালানের এসব সেট বিক্রির জন্য আলাদা দোকানও গড়ে উঠেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নাকের ডগায়। ডিলার ছাড়া অন্য শোরুমগুলোতে অন্তত ৪০ ভাগ ফোনসেটই চোরাই পথে আসা।

খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, চোরাই পথে আসা এসব সেটের বাইরের আবরণ বা কেসিং পরিবর্তন করে অথবা কিছু সংযোজন-বিয়োজন করে একেবারে নতুন আকার দেওয়া হচ্ছে। এসব ফোনসেটের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহও বেশি।

কয়েক দিন ধরে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ক্রেতা সেজে সরেজমিন অনুসন্ধানে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

চোরাই পথে আসা মোবাইল ফোনসেটের রমরমা ব্যবসার কারণে সরকার একদিকে যেমন হারাচ্ছে শুল্ক, তেমনি বৈধ ডিলাররাও ক্ষতির মুখে পড়ছেন।

শিবগঞ্জের খাসেরহাট ঘুরে দেখা গেছে, এই উপজেলার সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত বিনোদপুর ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর, কালু, ফটিক, কবির হোসেন ও ফনুসহ অন্তত ১০ ব্যক্তি ভারত থেকে পুরনো অথবা চুরি, ডাকাতি বা ছিনতাই হওয়া নতুন ফোনসেট চোরাই পথে আনছে।

তারা নিজেরাই এগুলো খুচরা বিক্রি করে। কখনো শিবগঞ্জের পাইকারি তিন ব্যবসায়ী অথবা রাজশাহী থেকে যাওয়া ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারি দরে বিক্রি করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন, শিবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে যেসব ফোনসেট আসে সেগুলো হয়তো কিছুদিনের পুরনো, নয়তো ছিনতাই, চুরি বা ডাকাতি করা। শিবগঞ্জে আসার পর তারা বিক্রি করে থাকে ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা বেশি দামে। এতে করে যত দামি সেটই হোক না কেন নতুনের চেয়ে প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি করা যায়।

এগুলোর চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে।

ওই ব্যবসায়ীরা আরো জানান, ৪৪ হাজার টাকা দামের স্যামসাং গ্যালাক্সি-এস ৪ বিক্রি হচ্ছে ২০ হাজার টাকায়, ৫৫ হাজার টাকা দামের নকিয়া লুমিয়া-১৫২০ বিক্রি হচ্ছে ২২ হাজার টাকা, ৪৪ হাজার টাকা দামের লুমিয়া-১০২০ বিক্রি হচ্ছে ২০ হাজার টাকায়, এইচটিসি-১ ডুয়েলের দাম মাত্র ২৫ হাজার টাকা।

শিবগঞ্জের এক চোরাকারবারি জানায়, সে গড়ে প্রতিদিন অন্তত ২০টি সেট ভারত থেকে আনে। সীমান্তের কাঁটাতারের কাছে গেলে ওপারের কারবারিরা পলিথিন প্যাকেট বা বস্তায় বেঁধে এপারে ফেলে দেয়। তারাও এপার থেকে টাকার বান্ডেল ওপারে ছুড়ে দেয়।

এসব ফোনসেট বিক্রি হচ্ছে শিবগঞ্জ উপজেলা বাজারের রাস্তার ধার ঘেঁষে গড়ে ওঠা তিনটি দোকানে। এর মধ্যে মা টেলিকম হলো সবচেয়ে বড় দোকান। অন্য দুটি দোকান হলো সোনালি টেলিকম ও খাজা বাবা টেলিকম।

ক্রেতা সেজে গত রবিবার দুপুর ১টার সময় মা টেলিকমে গিয়ে দেখা যায়, কমপক্ষে ১৫ জন ক্রেতা রয়েছে সেখানে। এ দোকানে বাংলাদেশি কভার, হেড ফোন, ব্যাটারিসহ কিছু আনুষঙ্গিক জিনিস রয়েছে। আর শ তিনেক ফোনসেটের মধ্যে সবগুলোই ভারতীয়। কোনোটি কিছুটা পুরনো, কোনোটি প্রায় নতুন। আবার কোনোটি একেবারে নতুন। শুধু প্যাকেট ছাড়া বিক্রি হচ্ছে মোবাইল ফোনসেটগুলো।

জানা গেছে, সম্প্রতি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) একটি দল মা টেলিকমসহ অন্য তিনটি দোকানে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় ৯৫টি সেট জব্দ করেছিল। এর মধ্যে মা টেলিকমেই পাওয়া গিয়েছিল ৬৫টি।

সোনালি টেলিকমের মালিক সনি হোসেন বলেন, 'ওপার থেকে সেট নিয়ে এসে আমাদের কাছে দিয়ে যায়। আমরা এখানে বসে ব্যবসা করি।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, এ অবৈধ ব্যবসার জন্য শিবগঞ্জ থানাসহ প্রশাসনের একাধিক দপ্তরে বখরা দিতে হয়। শিবগঞ্জ থানার আগের ওসিকে প্রতিদিন দিতে হতো পাঁচ হাজার টাকা। এখনো থানায় মাসিক হারে টাকা দিতে হয়।

জানতে চাইলে শিবগঞ্জ থানার ওসি আশিকুর রহমান বলেন, 'থানা পুলিশ কোনো বখরা নেয় না। তবে এই ব্যবসাটি অবৈধ। এর আগে টাস্কফোর্স গঠন করে বেশ কিছু সেট জব্দ করা হলেও এ ব্যবসা থেমে নেই।'

 

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা

অছাত্রদের রাজনীতি নিষিদ্ধসহ ৩ দফা দাবি

    শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম তদন্ত কমিটি থেকে জবিশিসের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ
জবি প্রতিনিধি
জবি প্রতিনিধি
শেয়ার
অছাত্রদের রাজনীতি নিষিদ্ধসহ ৩ দফা দাবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের দুই শিক্ষক ও তিন শিক্ষার্থীর ওপর ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ শেষে ক্যাম্পাসে অছাত্রদের রাজনীতি নিষিদ্ধসহ তিন দফা দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন তাঁরা।

গতকাল রবিবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এরপর সংবাদ সম্মেলন করে দাবিগুলো জানান শিক্ষার্থীরা।

সংবাদ সম্মেলনে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বাঁধন আহমেদ মারুফ বলেন, বিভাগে ছাত্রদল কর্তৃক হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিও কোনো বিবৃতি দেয়নি। শিক্ষকদের ওপর হামলা ও লাঞ্ছিত করার ঘটনা ছাত্রলীগের আমলেও হয়নি। তাহলে ৫ আগস্টের পর তারা এই সাহস কোথায় পায়?

শিক্ষার্থীদের দাবি তুলে ধরে বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইরফান হোসেন বলেন, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত বিভাগের সব ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে।

তাঁদের তিন দাবি হলো১৩ জুলাই রবিবারের মধ্যেই তদন্তকাজ শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; যারা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় সরাসরি জড়িত তাদের অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে; একই সঙ্গে সাবেক শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।

তদন্ত কমিটি থেকে পদত্যাগ : এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের ওপর ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোশাররফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদদীন পদত্যাগ করেছেন।

শিক্ষক সমিতি ও ছাত্রদলের পাল্টাপাল্টি বিবৃতি : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কোনো শিক্ষকের গায়ে হাত তোলা হয়নি বলে দাবি করেছে জবি ছাত্রদল। শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল এবং সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।

তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন : এদিকে এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে। ওই কমিটি এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। কমিটি ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করবে।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, আমরা একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটি দ্রুতই কার্যক্রম শেষ করে পদক্ষেপ নেবে।

এ ব্যাপারে এখন আর কিছু বলতে চাই না।

মন্তব্য

যশোরে দুই কোটি টাকার ১১ সোনার বারসহ তিনজনকে আটক

যশোর প্রতিনিধি
যশোর প্রতিনিধি
শেয়ার
যশোরে দুই কোটি টাকার ১১ সোনার বারসহ তিনজনকে আটক

যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় প্রায় দুই কোটি টাকা মূল্যের ১১টি সোনার বারসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে, যাঁদের পাচারকারী বলছে বিজিবি। গতকাল রবিবার ভোরে উপজেলার ধলগাঁ বাসস্ট্যান্ড থেকে তাঁদের আটক করা হয় বলে জানিয়েছে বিজিবি। আটক ব্যক্তিরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার চর চারতলা গ্রামের জিলু মিয়ার ছেলে আতা এলাহি জীবন (৩৫), গাজীপুরের কাশিমপুর থানার পূর্ব বাগবাড়ি গ্রামের মোহাম্মদ আলী ছেলে আবুল কালাম আজাদ (৪৬) এবং বগুড়ার শেরপুর উপজেলার রানিহাট গ্রামের সুচিত্র লাল মণ্ডলের ছেলে রাম প্রসাদ মণ্ডল (২৮)। তাঁদের প্যান্টের পকেট ও মানিব্যাগ থেকে এক কেজি ৩১৫ গ্রাম ওজনের ১১টি সোনার বার পাওয়া যায়, যার আনুমানিক বাজারমূল্য এক কোটি ৯২ লাখ ২৭ হাজার ৯৩০ টাকা বলে বিজিবি সূত্র জানিয়েছে।

ছাড়া তাঁদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন ও একটি পাওয়ার ব্যাংক জব্দ করেছে বিজিবি। ঢাকার তাঁতীবাজারের চোরাকারবারিদের কাছ থেকে সোনার বারগুলো সংগ্রহ করে পাচারের উদ্দেশ্যে ভারতে যাচ্ছিলেন এই তিন ব্যক্তি। আটককৃতদের বাঘারপাড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

মন্তব্য

২৯ বন্দিকে মুক্তি দিল কারা কর্তৃপক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
২৯ বন্দিকে মুক্তি দিল কারা কর্তৃপক্ষ

সাজা মওকুফ করে এক আদেশে ২৯ জন কারাবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। গতকাল রবিবার কারা অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, কারাগারে আটক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের মধ্যে যাঁদের সাজা রেয়াতসহ ২০ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আরো ২৯ জন বন্দিকে সরকারের কারা বিধি ৫৬৯ মোতাবেক ফৌজদারি কার্যবিধি ৪০১(১) এর প্রদত্ত ক্ষমতা বলে অবশিষ্ট সাজা মওকুফ করে মুক্তি দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, দেশের বিভিন্ন কারাগারে থাকা এ নিয়ে এ বছর মোট মুক্তির সংখ্যা দাঁড়াল ১০৭ জনে।

মন্তব্য
মাহফুজ আলম

বড় শয়তান এখনো কাঁধে শ্বাস ফেলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বড় শয়তান এখনো কাঁধে শ্বাস ফেলছে
মাহফুজ আলম

বড় শয়তান এখনো কাঁধে শ্বাস ফেলছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।

মাহফুজ আলম তাঁর পোস্টে বলেন, এখনো ঐক্যই দরকার। হঠকারীদের স্পেস দিলে বরং দেশের ক্ষতি হবে।

বিরোধিতা আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা কোনোভাবেই বিদ্বেষ এবং শত্রুতায় নিয়ে ঠেকানো যাবে না। তিনি আরো বলেন, বড় শয়তান এখনো আমাদের কাঁধে শ্বাস ফেলছে। তবে সবারই রেকনিং দরকার আছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ