ঢাকা, শুক্রবার ১১ জুলাই ২০২৫
২৭ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ১১ জুলাই ২০২৫
২৭ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ মহররম ১৪৪৭
হেল্‌থ কর্নার

পোস্ট-পার্টাম ডিপ্রেশন

সন্তান জন্ম দেওয়ার পর প্রথম কয়েক মাস অনেক মা-ই দুঃখ ও হতাশায় ভোগেন। এমনকি বাচ্চার প্রতিও তাঁদের কোনো উৎসাহ থাকে না। বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন ইনফার্টিলিটি কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের মেডিক্যাল অফিসার <br><b>ডা. ফারহানা শারমিন চৈতী</b>
সন্তান জন্ম দেওয়ার পর প্রথম কয়েক মাস অনেক মা-ই দুঃখ ও হতাশায় ভোগেন। এমনকি বাচ্চার প্রতিও তাঁদের কোনো উৎসাহ থাকে না। বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন ইনফার্টিলিটি কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের মেডিক্যাল অফিসার <br><b>ডা. ফারহানা শারমিন চৈতী</b>
শেয়ার
পোস্ট-পার্টাম ডিপ্রেশন

রোগের ধরন

পোস্ট-পার্টাম মানে হচ্ছে বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পরবর্তী সময়। এই সময়ে একজন নারীর ডিপ্রেশনের উপসর্গ দেখা দিলে তাকে বলা হয় পোস্ট-পার্টাম ডিপ্রেশন। সাধারণত ১৫ শতাংশ মা এই রোগে ভুগে থাকেন। সন্তান জন্ম দেওয়ার প্রথম দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে যেকোনো সময় এ রোগ শুরু হতে পারে।

মা দুঃখ ও হতাশায় ভোগেন। কখনো কখনো নিজেকে দোষী ভাবতে থাকেন। কোনো কিছুতে মনোযোগ দিতে পারেন না এবং কোনো কিছুতে উৎসাহ পান না। এমনকি বাচ্চার প্রতিও কোনো উৎসাহ থাকে না।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাচ্চার যত্ন-আত্তির ব্যাপারে চিন্তা করতে করতে চরম আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন, যা একসময় অবশেসনের পর্যায়ে চলে যায়।

কাদের বেশি হয়

১. পূর্বে যদি ডিপ্রেশনে ভোগার ইতিহাস থাকে, বিশেষ করে সন্তান জন্মদানের সময়

২. দাম্পত্য কলহ থাকলে

৩. পরিবার বা বন্ধুবান্ধব সহানুভূতিশীল না হলে

৪. সামপ্রতিক কোনো চাপে থাকলে

৫. বাচ্চার লালন-পালন কষ্টকর হলে

কেন হয়

সন্তান জন্মের এক সপ্তাহ পর সেক্স হরমোন এবং স্ট্রেস হরমোনের লেভেল ওঠানামা করে, যার ফলে মস্তিষ্কের যে অংশ আমাদের অনুভূতি ও সামাজিক যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ করে, সেই অংশে বেশ পরিবর্তন হয় এবং উপসর্গগুলো প্রকাশ পায়।

লক্ষণ

১. বিষণ্ন অনুভূতি ও অশ্রু সংবরণ করতে না পারা

২. বাচ্চার ভালোমন্দ ও দায়দায়িত্ব চিন্তা করে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়া

৩. হতাশ হয়ে যাওয়া এবং নিজেকে অসমর্থ ও দোষী ভাবা

৪. খিটখিটে মেজাজ

৫. সব কিছুতে আগ্রহ ও উৎসাহ হারিয়ে ফেলা, এমনকি নিজের মা হওয়ার ব্যাপারেও

৬. ক্ষুধামান্দ্য

৭. ঘুমের সমস্যা- দেরিতে ঘুম হওয়া আবার ঘুম থেকে উঠতে না পারা

৮. চরম ক্লান্তি

৯. ঘন ঘন মৃত্যুচিন্তা, কখনো কখনো আত্মহত্যার চিন্তা

১০. বাচ্চার যত্ন নিতে কষ্ট

এই উপসর্গগুলো সন্তান জন্মদানের দিন থেকে শুরু করে এমনকি তিন মাস পরও হতে পারে।

রোগ নির্ণয়

রোগ নির্ণয়ের জন্য এ রোগের ইতিহাসই যথেষ্ট।

এ ছাড়া এ রোগ নির্ণয়ের জন্য এডিনবার্গ পোস্ট-ন্যাটাল ডিপ্রেশন স্কেল ব্যবহার করা হয়। তবে অন্যান্য রোগ থেকে আলাদা করার জন্য রুটিন ল্যাবরেটরি টেস্টগুলো করা জরুরি।

চিকিৎসা

এ রোগের চিকিৎসা একজন গাইনোকলজিস্টের তত্ত্বাবধানে ও সাইকিয়াট্রিস্টের পরামর্শে সমন্বিতভাবে হওয়া উচিত। এভাবে সমন্বিত চিকিৎসা নিলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে রোগী ভালো হয়ে যাবেন। চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে-

১. অ্যান্টি-ডিপ্রেশেন্ট ওষুধ : এসএসআরআই যেমন- ফ্লুক্সিটেন এবং এসএনআরআই যেমন- ভেনলাফেক্সিন ইত্যাদি দেওয়া হয় বিষণ্নতা দূর করার জন্য।

২. কগনেটিভ বিহ্যাভিউরাল থেরাপি- নিজেকে দোষী ভাবার প্রবণতা ঠিক করার জন্য।

৩. সাইকোডায়নামিক, ইনসাইট ওরিয়েন্টেড এবং ইন্টার-পারসোনাল সাইকোথেরাপি- এটা রোগীকে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কগুলোর মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব দূর করতে এবং পূর্বের এমন কোনো ঘটনা উন্মোচন করতে ও বুঝতে সাহায্য করবে, যা তাঁর উপসর্গগুলোর জন্য দায়ী।

৪. কাপল থেরাপি- এটা মা-বাবাকে সাহায্য করবে নিজেদের অসম্মতির জায়গাগুলো বুঝতে এবং বাচ্চার যত্ন ও দায়দায়িত্ব কত ভালোভাবে পালন করা যায়, সে বিষয়ে একটা ঐকমত্যে পৌঁছতে।

৫. ব্রেস্ট ফিডিং- মা ও সন্তানের মধ্যে বন্ধন দৃঢ় করবে।

প্রতিরোধ

গর্ভবতী মায়েরা পোস্ট-পার্টাম ডিপ্রেশনের ঝুঁকি কমাতে পারেন ভবিষ্যৎ মাতৃত্ব জীবনে যে পরিবর্তনগুলো নিয়ে আসবে তার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে। অন্য মায়েদের সঙ্গে কথা বলতে হবে এবং ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে একটা শিশুর বাস্তবিক দৈনন্দিন প্রয়োজন ও যত্ন সম্পর্কে জানতে। সদ্যোজাত সন্তানকে প্রচুর সময় দেওয়ার ব্যাপারকে কখনোই অবহেলা করা যাবে না। জীবনসঙ্গী এবং অন্য যাঁরা সহানুভূতিশীল আত্মীয়স্বজন আছেন, তাঁদের কাছ থেকে সাহায্য নেওয়ার ব্যাপারেও কোনো সংকোচ করা যাবে না।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মানববন্ধন

শেয়ার
মানববন্ধন
শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দাবিতে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন করে তামাকবিরোধী সংগঠন। ছবি : কালের কণ্ঠ
মন্তব্য

ডেঙ্গু রোগী

শেয়ার
ডেঙ্গু রোগী
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগী বেড়েই চলেছে। গতকাল রাজধানীর মহাখালীতে ডিএনসিসি হাসপাতালে। ছবি : কালের কণ্ঠ
মন্তব্য

চট্টগ্রামে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিদর্শন করলেন নৌবাহিনী প্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
চট্টগ্রামে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিদর্শন করলেন নৌবাহিনী প্রধান

জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি দেশের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নৌ সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণ অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের কার্যক্রম সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করেছেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।

আইএসপিআর জানায়, পরিদর্শনকালে নৌবাহিনী প্রধান এনসিটি-২ জেটি এলাকায় কনটেইনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রম, এপ্রেইস পয়েন্টে কনটেইনার এক্সামিন কার্যক্রম এবং সিটিএমএস ভবনে টার্মিনাল অপারেশন সিস্টেম কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

এ ছাড়া তিনি এনসিটিতে কর্মরত চট্টগ্রাম ড্রাই ডক লিমিটেডের কর্মকর্তা ও সদস্যদের এবং বন্দরের কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন। এ সময় চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম ড্রাই ডক লিমিটেডের এমডিসহ সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আইএসপিআর আরো জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ গত সোমবার চট্টগ্রাম ড্রাই ডক লিমিটেডের কাছে চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব দেয়। চট্টগ্রাম ড্রাই ডক লিমিটেড এনসিটির দায়িত্ব নেওয়ার ফলে বন্দরের কর্মকাণ্ডে শৃঙ্খলা, সময়ানুবর্তিতা ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বন্দরের কার্যক্রমকে আরো বেগবান করবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন নৌবাহিনী প্রধান ।

সঠিকভাবে বন্দর পরিচালনার মাধ্যমে দ্রুত পণ্য ওঠানামা ও পরিবহন নিশ্চিত করা হলে দেশের আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া গতিশীল হবে, যা দেশের অর্থনীতিতে সরাসরি ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া দক্ষ ব্যবস্থাপনায় বন্দরের সামগ্রিক কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে তা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করবে, যা জাতীয় অর্থনীতির অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে সবাই আশা ব্যক্ত করেন।

মন্তব্য

ঢাবি ক্লাবে ‘ফ্যাসিবাদী’ আওয়ামী শিক্ষকদের পুনর্বাসনের প্রতিবাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
শেয়ার
ঢাবি ক্লাবে ‘ফ্যাসিবাদী’ আওয়ামী শিক্ষকদের পুনর্বাসনের প্রতিবাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্লাবে আওয়ামী লীগপন্থী নীল দলের শিক্ষকদের পুনর্বাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাবি ক্লাব প্রাঙ্গণে এই বিক্ষোভ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা স্বৈরাচারের গদিতে আগুন জ্বালাও একসাথে, সাদা-নীল ভাগাভাগি, এই ক্যাম্পাসে হবে না, ফ্যাসিবাদের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান, আওয়ামী লীগের চামচারা, হুঁশিয়ার সাবধান, গণহত্যার মদদদাতারা, হুঁশিয়ার সাবধান, ঢাবি ক্লাবে হবে না, দালালদের ঠিকানা ইত্যাদি স্লোগান দেন।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী দোসর নীল দলের শিক্ষকদের পুনর্বাসন করা হয়েছে।

এর সঙ্গে সাদা দলের শিক্ষকরাও জড়িত। তাঁরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে ঢাবি ক্লাব কমিটি বাতিল করে ক্লাব থেকে ফ্যাসিবাদী দোসরদের উত্খাতের দাবি জানান।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর না পেরোতেই ঢাবি ক্লাবে খুনি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। ঢাবি ক্লাবের ১৫ সদস্যের কমিটির সাতজনই নীল দলের সদস্য, যা সাদা দলের শিক্ষকদের জন্য লজ্জাজনক।

যারা খুনি হাসিনাকে বিভিন্ন ন্যারেটিভ তৈরি করে ফ্যাসিবাদী হতে সাহায্য করেছে, তাদের সাদা দল পুনর্বাসন করে জুলাইয়ের আহত ও শহীদদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এর পেছনে কী স্বার্থ জড়িত, তা খতিয়ে দেখার দাবি জানাই আমরা।

অন্য শিক্ষার্থী আশিক খান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্রলীগের দ্বারা সাধারণ শিক্ষার্থী নির্যাতনের বৈধতা দিয়েছিলেন নীল দলের শিক্ষকরা। গত বছরের ৫ আগস্টের পরও নীল দলের শিক্ষকরা ঢাবি ক্লাবে বিপ্লব বেহাত করতে ষড়যন্ত্র করেছিলেন।

এখন সাদা দলের মদদে এসব ফ্যাসিবাদী শিক্ষককে ঢাবি ক্লাবের কমিটিতে পুনর্বাসন করা হচ্ছে।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ