<p> ঘুম থেকে ওঠার পর হঠাৎ করে দেখা গেল মাটিতে পা ফেলা যাচ্ছে না। পায়ের তালুতে তীব্র ব্যথা। এটা হতে পারে চলাফেরা বা জীবনযাপন-সংক্রান্ত কোনো কারণে। আবার কোনো কোনো রোগের উপসর্গ হিসেবেও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ নিয়ে লিখেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চিকিৎসক (রেসিডেন্ট-ফেইজ-বি) মোহাম্মদ ইসরাত হাসান</p> <p> রোগের কারণ ও লক্ষণ</p> <p> আমাদের পায়ের তালুতে ব্যথার অনেক কারণের মধ্যে প্লান্টার ফ্যাসাইটিস অন্যতম। এটা খুবই বিরক্তিকর ও বেদনাদায়ক একটি অবস্থা, যা আমাদের দৈনন্দিন চলাফেরায় বিঘ্ন সৃষ্টি করে। হঠাৎ করে খেলাধুলার পরিমাণ বাড়িয়ে দিলে, পায়ের জুতা বিশেষ করে শক্ত সোলের ভারী জুতা পরলে, উঁচুনিচু জায়গায় হাঁটলে বা দৌড়ালে; এ ছাড়া কিছু রোগ যেমন- গাউট, এনকাইলোসিং স্পনডিলাইটিস, রেইটার্স ডিজিজ ইত্যাদি কারণে এ রোগ হতে পারে। এ রোগে সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথম কয়েক কদম দিতে বেশ কষ্ট হয় এবং পায়ের তালুতে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। তবে দিন শেষে ব্যথার তীব্রটা আস্তে আস্তে কমে আসে। এমনকি দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার পর হাঁটতে গেলে একই রকম তীব্র ব্যথা অনুভূত হতে পারে।</p> <p> রোগ নির্ণয়</p> <p> রোগ নির্ণয়ের জন্য এর ইতিহাসই যথেষ্ট। তেমন কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার দরকার হয় না। তবে এ-সংক্রান্ত অন্যান্য রোগ থেকে আলাদা করার জন্য এক্স-রে করা হয়।</p> <p> চিকিৎসা ও করণীয়</p> <p> এ রোগের চিকিৎসার জন্য একজন ফিজিয়াট্রিস্ট বা ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে সমন্বিত চিকিৎসা নেওয়া একান্ত প্রয়োজন। চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে জীবনযাত্রার পরিবর্তন, ওষুধ, ব্যায়াম ও ফিজিক্যাল থেরাপি।</p> <p> ১. জীবনযাত্রার পরিবর্তন : ওজন বেশি থাকলে কমানো, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে না থাকা, নরম সোলের ফিট জুতা পরা, খালি পায়ে না হাঁটা, বিছানা থেকে নামার সময় নরম সোলের জুতা বা স্যান্ডেল পরে এরপর নামা, পায়ের তালুর ওপর অত্যধিক ভর না দেওয়া ইত্যাদি।</p> <p> ২. ওষুধ : ব্যথানাশক ওষুধ এবং ব্যথা তীব্র হলে ইনজেকশন দেওয়া যেতে পারে।</p> <p> ৩. ব্যায়াম : প্লান্টার ফ্যাসা স্ট্রেস, ফুট সার্কল, টো কার্ল, টো টাওয়েল কার্ল ইত্যাদি ব্যায়াম। এর সঙ্গে পায়ের তালুতে কিছু ম্যাসাজ করা। ব্যায়ামের আগে ব্যথার জায়গায় বরফ ব্যবহার করা যেতে পারে।</p> <p> ৪. ফিজিক্যাল থেরাপি : ফিজিওথেরাপির মধ্যে আলট্রাসাউন্ড থেরাপি দেওয়া দরকার হয়।</p> <p> এ ছাড়া রাতের বেলা পায়ের তালুর অবস্থান ঠিক রাখার জন্য রেস্টিং প্যাডেড স্পিন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ধরনের সমন্বিত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলো অথবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগে পাওয়া যাবে।</p> <p>  </p> <p>  </p>