যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ বা প্রতিনিধি পরিষদে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিশংসিত হয়েছেন। নিম্নকক্ষের এই সিদ্ধান্ত কি উচ্চকক্ষ সিনেটেও অনুমোদিত হবে? উভয় কক্ষ যদি ট্রাম্পকে অভিশংসিত করে, একমাত্র তখনই তাঁকে তাঁর পদ থেকে অপসারণ করা যায়। কিন্তু তা আদৌ সম্ভব হবে কি না, সেটি বড় প্রশ্ন এখন। প্রতিনিধি পরিষদে তাঁকে দুই অভিযোগে অভিযুক্ত করে অভিশংসিত করা হয়েছে।
এই সময়
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কি অপসারিত হবেন?
- তারেক শামসুর রেহমান
অন্যান্য

সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্পের অনেক কর্মকাণ্ড ট্রাম্পকে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে। তাঁর বিরুদ্ধে যখন নানা অভিযোগ আসতে থাকে এবং কংগ্রেস যখন এর অনুসন্ধান করতে শুরু করে তখন ট্রাম্প তদন্তপ্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানান। সাক্ষ্য দিতে তাঁর স্টাফদের বাধা দেন। তথ্য-প্রমাণ ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করেন বা দেন। এটি তাঁর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ, যে অভিযোগে প্রতিনিধিসভা তাঁকে অভিশংসিত করেছে। দ্বিতীয় আরেকটি অভিযোগ, তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং ২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দলীয় প্রার্থী জো বাইডেন ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের একটি গ্যাস কম্পানির দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে ফোন করে চাপ দেওয়া। এই অভিযোগেও তিনি অভিশংসিত হয়েছেন প্রতিনিধিসভায়। মার্কিন মিডিয়ায় কয়েক মাস ধরে যেসব সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তাতে এই দুটি অভিযোগের পেছনে সত্যতা পাওয়া গেছে। ইউক্রেনে যিনি যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তিনিও স্বীকার করেছেন ট্রাম্প ‘বাইডেন ইস্যুতে’ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের ওপর প্রভাব খাটাতে চেষ্টা করেছিলেন। প্রাপ্ত তথ্য মতে, জো বাইডেন যখন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন (২০০৯-২০১৭) তখন তাঁর ছেলে হান্টার বাইডেন ইউক্রেনের একটি গ্যাস কম্পানি বুরিসমা হোল্ডিংয়ে মাসিক ৫০ হাজার ডলারে কর্মরত ছিলেন। এই কম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন মিকোলা জ্লোচেভিস্ক (Mykola Zlochevsky) ২০০২ সালে। জ্লোচেভিস্ক ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানোকোভিচের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি মন্ত্রীও ছিলেন। কিন্তু ইয়ানোকোভিচের পতনের পর তাঁর সঙ্গে জ্লোচেভিস্কও দেশত্যাগ করেন। অর্থপাচারসহ নানা অভিযোগে এখন জ্লোচেভিস্কর বিরুদ্ধে ইউক্রেনে তদন্ত চলছে। হান্টার বাইডেন ওই প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন, যখন রাশিয়া ইউক্রেনের ক্রিমিয়া দখল করে নেয় (২০১৪)। অভিযোগ উঠেছে, হান্টার বাইডেনকে বুরিসমা রিক্রুট করেছিল, যাতে ওই সময়ের মার্কিন প্রশাসনের ওপর প্রভাব খাটানো যায়। ট্রাম্প নিজে স্বীকার করেছেন, তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনিস্ককে ফোন করে হান্টার বাইডেন ও তাঁর বাবা জো বাইডেনের ব্যাপারে তদন্ত করার অনুরোধ করেছিলেন। ফলে বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেছে। একজন প্রতিযোগী, যিনি ২০২০ সালের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, তাঁর বিরুদ্ধে অন্য একটি রাষ্ট্রের প্রধানকে তদন্ত করতে অনুরোধ করা শুধু অনাকাঙ্ক্ষিতই নয়, বরং অনৈতিকও বটে।
সম্পর্কিত খবর