ঢাকা, রবিবার ০৩ আগস্ট ২০২৫
১৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৮ সফর ১৪৪৭

ঢাকা, রবিবার ০৩ আগস্ট ২০২৫
১৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৮ সফর ১৪৪৭
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নান্দাইলের শহীদ জুয়েল মিয়া

‘মোড়ল বাড়ি’ থেকে ‘বীরের বাড়ি’

আলম ফরাজী, ময়মনসিংহ
আলম ফরাজী, ময়মনসিংহ
শেয়ার
‘মোড়ল বাড়ি’ থেকে ‘বীরের বাড়ি’
সময় পেলেই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ময়মনসিংহের নান্দাইলের জুয়েল মিয়ার ছবির দিকে তাকিয়ে থাকেন মা-বাবা। ছবি : কালের কণ্ঠ

প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে আর পড়ালেখা হয়ে ওঠেনি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার জুয়েল মিয়ার (২৮)। এর মধ্যে মা-বাবা দুজনের শরীরেই বাসা বেঁধেছে বিভিন্ন রোগ। বাবা আয়-রোজগার করতে না পারায় বাধ্য হয়ে সংসারের হাল ধরতে হয় জুয়েলকে। প্রায় এক যুগ আগে গাজীপুরে গিয়ে এক গার্মেন্টস কারখানায় কাজ নেন তিনি।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু হলে তাতে যুক্ত হন পোশাককর্মী জুয়েল মিয়া। মিছিলে থাকতেন সামনের দিকেই। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগ করার খবরে দেশে যখন বিজয় মিছিল শুরু হয়, তখন জুয়েল গাজীপুরের মাওনা এলাকায় বিজয় মিছিলে অংশ নেন। হঠাৎ পুলিশের গুলি।

মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর। পরদিন লাশ বাড়িতে এনে দাফন করা হয়।

এর পর থেকেই নিজ ঘরের সামনে ও ঘরের দরজায় ঝুলতে দেখা যায় জুয়েলের ছবিসংবলিত একটি বড় সাইনবোর্ড।

তাতে লেখা রয়েছে বীরের বাড়ি। সেই বাড়িতে উড়ছে জাতীয় পতাকা। এলাকায় দীর্ঘদিনের পরিচিত মোড়ল বাড়ি এখন বীরের বাড়ি হিসেবেই পরিচিত।

নান্দাইলের আচারগাঁও ইউনিয়নের সিংদই খাকদারা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে জুয়েল মিয়া। মা-বাবার দুই ছেলের মধ্যে তিনিই বড়।

প্রায় ১০ বছর ধরে গাজীপুরের মাওনা এলাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি করছিলেন তিনি। প্রায় ছয় বছর আগে বিয়ে করে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন মাওনাতেই। চার বছর বয়সের একটি ছেলেও রয়েছে তাঁর। বেতনের একটি অংশ গ্রামে অসুস্থ মা-বাবাকে পাঠাতেন তিনি।

গত বুধবার সকালে বীরের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, বাড়ির সামনে উড়ছে জাতীয় পতাকা। সামনের একটি বোর্ডে জুয়েলের গুলিবিদ্ধ ছবি ছাড়া আরো একটি ছবি। ঘরের দরজায় লাগানো আছে আরেকটি ছবি। মা-বাবা দুজনই প্রতিদিন ছবিটির কাছে বসে কান্নাকাটি করেন।

মা জিনুয়ারা বেগম নিজের আঁচল দিয়ে ছেলের ছবি মুছতে মুছতে বলেন, এই তো আর কয়েকটা দিন পরই জুয়েলকে হারানোর বছর পার অইবো। এইভাবেই তো চইল্যা যাইবো কত বছর। আমার বাজান তো আর ফিইর‌্যা আইতো না।

জুয়েলের স্ত্রী জুবায়দা বেগম জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে প্রায় প্রতিদিন পুলিশের গুলিতে অনেকেই নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যেত। এসব শুনে তাঁর স্বামীর মন খুবই খারাপ হতো। শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করে চলে যাওয়ার দিন আনন্দ মিছিলেও যোগ দেন জুয়েল। পরে বিকেল ৩টার দিকে খবর আসে তাঁর স্বামী মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বের হয়ে জানতে পারেন, হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা গেছেন তাঁর স্বামী।

বাবা আব্দুল হাই জানান, বড় ছেলে মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরাও একরকম  মরে গেছেন। সব সময় শুধু ছেলের স্মৃতিই চোখে ভাসে।

এলাকার শাহাব উদ্দিন, হযরত আলী, আল-আমীন ও রফিকুল ইসলাম জানান, জুয়েল ছিলেন এলাকার জন্য গর্বের বিষয়। যে কারো বিপদে সব সময় যথাসাধ্য সহযোগিতা করতেন তিনি।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের প্রকোপ বেড়েছে

শেয়ার
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের প্রকোপ বেড়েছে
রাজধানীসহ সারা দেশে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের প্রকোপ বেড়েছে। এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু নিয়ে বেশ কয়েক দিন আগে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে শিশুটি। চিকিৎসা নেওয়ার পর এখন তার অবস্থা উন্নতির দিকে। গতকাল তোলা। ছবি : কালের কণ্ঠ
মন্তব্য
সবিশেষ

কেন সিডনি সুইনির জিন্স নিয়ে বিতর্ক?

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
কেন সিডনি সুইনির জিন্স নিয়ে বিতর্ক?

নতুন আমেরিকান ইগলের বিজ্ঞাপন প্রচারণায় মার্কিন অভিনেত্রী সিডনি সুইনির দুর্দান্ত জিন্স বেশ নজর কেড়েছে। অথচ ট্রাম্পের আমেরিকায় এটি নাকি একটি সমস্যা। সুইনি জবাবে বলেছেন, জিন্সগুলো মা-বাবা থেকে সন্তানদের কাছে চলে আসে, প্রায়ই চুলের রং, ব্যক্তিত্ব এমনকি চোখের রঙের মতো বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে। আমার জিন্স নীল।

আমেরিকান ইগলের বিপণন দলের মতে, প্রচারণা, যার শিরোনাম সিডনি সুইনির দুর্দান্ত জিন্স আছেকেবল ডেনিম এবং আত্মবিশ্বাসের উদযাপন। তাঁর জিন্স। তাঁর গল্প।

কিন্তু সুইনির জিন্স নিয়ে বিতর্ক মোটেও কম নয়।

সমালোচকরা বলছেন, নীল চোখ, স্বর্ণকেশী চুল এবং সাদা আমেরিকান পরিপূর্ণতার নান্দনিকতার জন্য সুইনির এমন জিন্সের অধিকারী, যা নাকি ঐতিহাসিকভাবে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার কথা বলা বন্ধ করতে পারেনি এবং ঠিক সেখানেই ইন্টারনেটে বিতর্ক শুরু হয়। অবশ্যই বিজ্ঞাপনটি ইউজেনিকসের ইশতেহারের মতো শোনালেও কোনো লাভ হয়নি।

অনেকে অনলাইন প্রচারণাকে জাতিগত বিশুদ্ধতা এবং আদর্শ জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের প্রতি নাৎসি যুগের আবেশকে উসকে দেওয়ার অভিযোগ করেছে। নিউইয়র্ক পোস্টের মতে, কেউ কেউ এটিকে নাৎসি প্রচারণা বলে সমালোচনা করেছে, আবার কেউ কেউ এটিকে ডানপন্থীদের কাছে কুকুরের হুইসল বলে অভিহিত করেছে।

অবশ্যই সুইনিকে এরই মধ্যে একজন অতিডানপন্থী প্রণয়ী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁর অতীতের বিতর্কের মধ্যে রয়েছে মাগা (মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন)-সংলগ্ন একটি পারিবারিক পার্টি, ব্লু লাইভস ম্যাটার ভক্তদের সঙ্গে ছবি তোলা এবং জুন মাসে সাবানের একটি ভিডিও।

ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসের যোগাযোগপ্রধান স্টিভেন চিউং এই বিতর্ককে ঘনমৌলিক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি এক্স পোস্টে লিখেছেন, সংস্কৃতির উগ্রতা বাতিল করুন। এই বিকৃত, মৌলিক ও ঘন উদারপন্থী চিন্তা-ভাবনাই আমেরিকানরা ২০২৪ সালে যেভাবে ভোট দিয়েছিল, তার একটি বড় কারণ।

এই বাজে কথা শুনে তারা ক্লান্ত। তবে বিজ্ঞাপনটির সমর্থকরা বিশেষ করে অনলাইনে বিতর্কটিকে অতি সংবেদনশীল উদারপন্থী অতি প্রতিক্রিয়া বলে দ্রুত উড়িয়ে দিয়েছে। সূত্র : দ্য ডন

 

মন্তব্য

হঠাৎ বন্ধ ফ্লাইট এক্সপার্ট বিপুল ক্ষতির শঙ্কায় গ্রাহক-এজেন্সি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
হঠাৎ বন্ধ ফ্লাইট এক্সপার্ট বিপুল ক্ষতির শঙ্কায় গ্রাহক-এজেন্সি

দেশের অন্যতম টিকিট বুকিং প্ল্যাটফর্ম ফ্লাইট এক্সপার্ট-এর ওয়েবসাইট হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে হাজারো গ্রাহক ও টিকিট বিক্রেতা এজেন্সি। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিলে ফ্লাইট এক্সপার্টের অফিসে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্তরা সেখানে ভিড় করেছেন।

এজেন্সিগুলোর দাবি, অগ্রিম টিকিট বাবদ কোটি কোটি টাকা পরিশোধ করা হলেও এখন টিকিট বা অর্থ কিছুই পাচ্ছেন না তাঁরা। ফ্লাইট এক্সপার্টের হেড অব কমার্শিয়াল সাঈদ আহমেদ অভিযোগ করেছেন, প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে কাউকে না জানিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালমান বিন রশিদ দেশ ছেড়েছেন।

এতে গ্রাহক ও সরবরাহকারীদের কোটি কোটি টাকা ফেরত পাওয়া অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এ নিয়ে মতিঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়েছে।

অন্যদিকে সালমান বিন রশিদ হোয়াটসঅ্যাপে দাবি করেন, দুটি মধ্যস্থতাকারী এজেন্সির সঙ্গে জটিলতা ও প্রতিষ্ঠানের দুই কর্মকর্তার বিশ্বাসঘাতকতার কারণে তিনি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন।

জানা গেছে, ফ্লাইট এক্সপার্ট সরাসরি এয়ারলাইনস থেকে টিকিট না নিয়ে মধ্যস্থতাকারী এজেন্সির মাধ্যমে কাজ করত।

এ সুযোগে রিফান্ড জটিলতা বেড়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। এখনো পরিষ্কার নয় গ্রাহক ও সরবরাহকারীদের আর্থিক ক্ষতির দায় কে নেবে।

মন্তব্য

চট্টগ্রামে বাসায় ঢুকে ব্যবসায়ীকে গুলি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
চট্টগ্রামে বাসায় ঢুকে ব্যবসায়ীকে গুলি

চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানার উত্তর মোহরা এলাকায় বাসায় ঢুকে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। ওই ব্যবসায়ীর নাম মো. ইউনুস। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ব্যবসায়ী ইউনুস নদী থেকে বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত ড্রেজারের (খননযন্ত্র) ব্যবসা করেন।

চান্দগাঁও থানার ওসি মো. আফতাব উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, শুক্রবার রাতে ব্যবসায়ী ইউনুস নিজের বাসায়ই ছিলেন। হঠাৎ কয়েকজন দুর্বৃত্ত বাসায় ঢুকে তাঁকে চার থেকে পাঁচটি গুলি করে।

মুখ, কোমর ও পায়ে তিনি বুলেটবিদ্ধ হয়েছেন। রাতে আমরা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এখন তাঁর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে তিনি কথা বলতে পারছেন।

ওসি আফতাব আরো জানান, এ ঘটনায় ব্যবসায়ী ইউনুসের পরিবার মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর থেকে কর্ণফুলী নদীর বালু ব্যবসার দ্বন্দ্ব নিয়ে কারাবন্দি সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের অনুসারীদের হাতে গত ২৯ মার্চ রাতে নগরীর বাকলিয়ায় জোড়া খুনসহ চট্টগ্রামে একাধিক হত্যাকাণ্ড ও সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ