ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭

এবার খুলনার জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

খুলনা অফিস
খুলনা অফিস
শেয়ার
এবার খুলনার জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

পুলিশ কমিশনারের অপসারণ দাবির পর এবার খুলনার জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। মাসব্যাপী জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদযাপনের অনুমতিকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধের পর এই দাবি জানানো হয়। এ ব্যাপারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে মো. ওয়াহিদুজ্জামান।

লিখিত অভিযোগে তিনি জানান, জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে খুলনার শিববাড়ী মোড়ে মাসব্যাপী অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে অনুমতি চাওয়া হলে ওই অনুষ্ঠানমালাকে মেলা হিসেবে উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

গতকাল রবিবার দুপুরে এ নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি ও আগুয়ান-৭১-এর নেতাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুজ্জামানের মোবাইল কেড়ে নেন। এ ঘটনার পর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বের হয়ে ওয়াহিদুজ্জামান বিকেল ৩টার দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

খবর পেয়ে পরে সেখানে যান বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক মো. হুসাইন শওকত। ছাত্রনেতারা তাঁর কাছেও সার্বিক বিষয় বর্ণনা করে ডিসি অফিসের সিসি ফুটেজ দাবি করেন।

কিন্তু ডিসি অফিস থেকে সিসি ফুটেজ দেওয়া হয়নি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান উদযাপনে জাতীয়ভাবে যে আয়োজন আছে, তার বাইরে মেলা করতে গেলে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির অনুমোদন লাগবে। এ জন্য ২ জুলাই খুলনার আইন-শৃঙ্খলা কমিটির যে মিটিং রয়েছে, সেখানে আলোচনার পরই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।

অন্য একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি মেলা রাসেল খ্যাত খুলনার একসময়ের আলোচিত যুবলীগ নেতা রাসেল তাঁর নিজের ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে মেলার বিষয়টি জানান দেন।

পরে ওই পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। জনশ্রুতি রয়েছে, রাসেল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম ব্যবহার করে মেলার প্রস্তুতি নিয়েছেন।

তবে মাসব্যাপী কর্মসূচির নামে কোনো মেলা করার অনুমতি না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে খুলনা জেলা ইমাম পরিষদও।

উল্লেখ্য, এর আগে গত মঙ্গলবার এসআই সুকান্তকে ধরে পুলিশের কাছে দেওয়ার পর রাতে তাঁকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এ নিয়ে বুধ ও বৃহস্পতিবার কেএমপি ঘেরাও করে ছাত্র-জনতা।

পরদিন চুয়াডাঙ্গা থেকে এসআই সুকান্তকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হলেও শনিবার দুপুর থেকে আবারও ব্লকেড কর্মসূচি শুরু করে ছাত্র-জনতা। পরে সন্ধ্যায় তারা খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করে। সেখানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের কাছে কেএমপি কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারের অপসারণ দাবি করে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এর এক দিন পরই জুলাই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে পাট চাষ

শেয়ার
তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে  পাট চাষ

তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে করা হয়েছে পাট চাষ। সেই পাট কেটে মহিষের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পানিতে জাগ দেওয়ার জন্য। গতকাল রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্নেয়া ইউনিয়নের চর বাঘমারা থেকে তোলা। ছবি : মো. আসাদুজ্জামান

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী মুগদা হাসপাতালে

শেয়ার
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী মুগদা হাসপাতালে

খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগ এলাকার আড়াই বছর বয়সী নূরজাহান ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মুগদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গতকাল তোলা। ছবি : মঞ্জুরুল করিম

মন্তব্য

২২৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
২২৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২৩টি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দলটির আমির মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দলটি আগামী জাতীয় সংসদে নিম্নকক্ষে আংশিক আনুপাতিক ও উচ্চকক্ষে পূর্ণ আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক দ্বিকক্ষীয় সাংবিধানিক কাঠামোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। দলের নেতারা বলেন, একদলীয় শাসনব্যবস্থা জনগণের প্রকৃত মতামতের প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ।

আনুপাতিক পদ্ধতির মাধ্যমেই সব শ্রেণি ও মতধারার সঠিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়া আত্মঘাতী। এতে ফ্যাসিবাদের দোসররা আরো উৎসাহী হচ্ছে। আমরা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, তবে ফ্যাসিবাদ ফের মাথা চাড়া দেবে।

গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী শৈথিল্য দেখালেও পরে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে দুষ্কৃতকারীরা দ্রুত প্রতিহত হয়েছে, যা প্রশংসনীয়। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেনদলের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন ও মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজি, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মূসা, মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা ফয়সাল আহমদ। এ ছাড়া ছিলেন মাওলানা ফজলুর রহমান, মাওলানা হারুনুর রশীদ, মাওলানা রুহুল আমীন খান, মাওলানা হাসান জুনাইদ, মাওলানা আব্দুস সোবহান, মাওলানা ছানাউল্লাহ আমিনী, মাওলানা জয়নুল আবেদীন ও মাওলানা মুহসিন বেলালী।

মন্তব্য

রামেকে ইন্টার্ননির্ভর চিকিৎসায় ঝুঁকিতে মুমূর্ষু রোগীরা

রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
শেয়ার
রামেকে ইন্টার্ননির্ভর চিকিৎসায় ঝুঁকিতে মুমূর্ষু রোগীরা

পাবনার ঈশ্বরদী এলাকার ওয়াহেদুজ্জামান (৭১) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে পরিবারের সদস্যরা গত ১৩ জুলাই সন্ধ্যার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। রোগীকে জরুরি বিভাগ থেকে পাঠানো হয় ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে (মেডিসিন ওয়ার্ড)। ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার পরে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাঁকে ভর্তি করে নেন।

সেখানে বারান্দায় একটি শয্যায় রেখে চলতে থাকে রোগীর চিকিৎসা। পরের দিন ১৪ জুলাই সকালে ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বরত স্থায়ী অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা গিয়ে রোগীর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন।

পরের দিন ১৫ জুলাই সকালের দিকে রোগী কিছুটা সুস্থ বোধ করলে তাঁকে ছুটি দেওয়ার কথা জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু দুপুর গড়াতে না গড়াতেই রোগী আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন।

তখন কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা রোগীকে প্রথমে অক্সিজেন এবং পরবর্তীতে স্যালাইন দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু রোগীর অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত রোগীর অবস্থা বেগতিক দেখে দ্রুত একটা অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় নগরীর বাকির মোড়ে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে।
সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরে দ্রুত তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ধরা পড়ে তাঁর শরীরে ডেঙ্গুসহ নানা জটিলতা। তবে তাৎক্ষণিক সঠিক চিকিৎসা পাওয়ায় রোগী ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকেন।

এটি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রতিদিনের চিত্র। চিকিৎসকসংকটে দিনের প্রায় ১৮ ঘণ্টাই ইন্টার্ন চিকিৎসকনির্ভরতার মাধ্যমে চলছে এই হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা।

খুব জরুরি প্রয়োজনে ফোনে পরামর্শ নেওয়া হয় অভিজ্ঞ ডাক্তারদের। এর বাইরে এফসিপিএস ডিগ্রিধারী বা এফসিপিএস করছেন এমন মধ্যম মানের চিকিৎসকরা থাকেন ভর্তির দিন ধার্য থাকা ওয়ার্ডগুলোতে। এ ছাড়া দিনের ২৪ ঘণ্টা প্রতিটি ওয়ার্ডেই চার থেকে ছয়জন করে পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করতে হয় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের। এ নিয়ে মাঝেমধ্যেই ইন্টার্নদের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। 

পাবনার ঈশ্বদীর রোগী ওয়াহেদুজ্জামানের ছেলে হামিম আবেদীন বলেন, রামেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক দিনে একবার করে আসার কারণে আমার বাবার সমস্যাগুলো জটিল হয়ে গিয়েছিল, যা ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বুঝে উঠতে পারেননি।

ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করি রোগীর সেবা দেওয়ার। কিন্তু যে পরিমাণ রোগীকে চিকিৎসা দিতে হয়, সে পরিমাণ ইন্টার্ন চিকিৎসকও নেই।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত আনসার সদস্যও নেই। অন্যদিকে যেসংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছে, সেসংখ্যক অভিজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসাসামগ্রী ও ওষুধপথ্যও আমরা দিতে পারছি না। কারণ সব কিছু বরাদ্দ হচ্ছে ৫০০ শয্যার বিপরীতে। কিন্তু এখানে শয্যাই আছে এক হাজার ২০০টি। এর বাইরেও অতিরিক্ত আরো দুই থেকে আড়াই হাজার রোগীকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে আমাদের নানাভাবে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।    

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ