সরকারি হাসপাতালগুলোর যন্ত্রপাতি বিকল রেখে রোগীদের পাঠানো হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসক-কর্মচারীদের যোগসাজশে গড়ে উঠেছে দালালচক্র। খুলনা, কক্সবাজার, ময়মনসিংহ, নাটোর, চুয়াডাঙ্গা, ভোলা, মাদারীপুর ও জামালপুরের সরকারি হাসপাতালগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে কালের কণ্ঠের প্রতিনিধিরা এই তথ্য জানতে পেরেছেন। বেশির ভাগ হাসপাতালে দ্বিগুণের বেশি রোগী হওয়ায় দালালচক্র সেখানে সকাল থেকেই অবস্থান নেয়।
সরকারি হাসপাতাল
দালালের দৌরাত্ম্যে ভোগান্তি রোগীর
- পরীক্ষার যন্ত্রপাতি বিকল রাখা হয়
- দ্বিগুণের বেশি ভিড় হলেই দালালদের তৎপরতা বাড়ে
- কক্সবাজারে আছে নারী দালাল নেত্রী
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

কক্সবাজার থেকে বিশেষ প্রতিনিধি জানান, কক্সবাজারের একটি সরকারিসহ সাতটি হাসপাতাল ও ছয়টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ঘিরে অন্তত দুই শতাধিক দালালের রমরমা বাণিজ্য চলছে। দালালদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই নারী। শহরের হাসপাতাল সড়ক দিয়ে চলাচলের সময় সাধারণ লোকজনকে প্রতিনিয়ত দালালদের জিজ্ঞাসার মুখে পড়তে হয়।
খুলনা অফিস জানায়, খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, খুলনা বিশেষায়িত হাসপাতাল ও খুলনা জেনারেল হাসপাতাল থেকে দালালচক্র রোগীদের বাগিয়ে নেয় মহানগরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে সরকারি হাসপাতালগুলো রোগী ধরার হাবে পরিণত হয়েছে। ৫০০ শয্যা খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ত ভিড় করছে প্রায় তিনগুণ বেশি রোগী। গতকাল বৃহস্পতিবার সেখানে রোগী ছিল এক হাজার ৪৯২ জন। রোগী বেশি হওয়ায় দালালরা সকাল থেকেই অবস্থান নেয়। কৌশলে হাসপাতাল থেকে রোগী বাইরে নিচ্ছিল অনায়াসে। ভুক্তভোগীরা জানায়, হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের দুপুরের পর অধিকাংশ পরীক্ষা দেওয়া হয়। স্লিপে পরীক্ষার নাম লিখে অন্য পৃষ্ঠায় লিখে দেওয়া হয় মোবাইল নম্বর। বলা হয়, ‘একে ফোন দিলে পরীক্ষা করিয়ে দেবে।’ রোগীর সঙ্গে থাকা লোকজন মনে করেন, যেহেতু ডাক্তার লিখে দিয়েছেন, সেহেতু এটি সরকারি হাসপাতালেরই পরীক্ষা। ফোন দিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ডাকার পর তিনি যথারীতি রোগীর কাছ থেকে স্যাম্পল (রক্ত-প্রস্রাব) সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট হারে ফি নিয়ে পরে পরীক্ষার প্রতিবেদন দিয়ে যান বেডেই। তখনই ধরা পড়ে এটি সরকারি হাসপাতালের না, বাইরের কোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরীক্ষা। এভাবেই হাসপাতালের ওয়ার্ডে ব্যাগ, সিরিঞ্জ, তুলাসহ অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে ঘুরে বেড়ায় বহিরাগত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালরা। প্রতিদিনের হিসাব শেষে ডাক্তারদের কাছে চলে যায় নির্দিষ্ট হারের কমিশন।
খুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহসীন আলী ফরাজী বলেন, বাইরের কেউ হাসপাতালে প্রবেশ করতে পারে না। তার ব্যত্যয় ঘটলে আমরা ব্যবস্থা নিই।
নাটোর প্রতিনিধি জানান, দালালদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল। গতকাল হাসপাতালে গেলে দেখা যায়, চিকিৎসকদের কক্ষের সামনে রোগীদের দীর্ঘ লাইন। রোগীরা জানান, সকাল ৮টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। অথচ চিকিৎসকরা রোগী দেখা শুরু করেছেন সকাল ১০টা থেকে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনেকে চিকিৎসককে দেখাতে পারেননি। দালালরা এসে রোগীদের অন্য হাসপাতালে নিতে টানাটানি শুরু করেছে। দেখা গেল চিকিৎসকরা পরীক্ষা দিয়েছেন কি না তা জানতে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানাটানি করে দালালরা। দেখা যায় হিরা, আশিক, গোপাল, শিপনসহ কয়েকজন দালাল রোগীদের প্যাথলজিক্যাল এক্স-রেসহ নানা পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে পরামর্শ দিচ্ছেন। তারা কারণ হিসেবে পরীক্ষা ভালো ও কম টাকা লাগবে বলে প্রচার করছিল। নাটোরের সিভিল সার্জন ও নাটোর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মুক্তাদির আরেফিন জানান, হাসপাতাল দালালমুক্ত রাখার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
ভোলা প্রতিনিধি জানান, ভোলা জেলার ২২ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা ভোলা ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্যে পদে পদে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে রোগীদের। বেসরকারি ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রতিনিধি ও হাসপাতালের কর্মচারীরা দালালচক্রের সঙ্গে মিলে রোগীদের হয়রানি করছে। গতকাল দুপুর ১২টায় হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নতুন ভবনের নিচতলায় জরুরি বিভাগ ও লিফটের সামনে বেঞ্চে পাঁচ-সাতজন দালাল বসেছিল। জানা গেল, শহরের ২০টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লোকজনই হাসপাতালের ভেতরে অবস্থান করে। হাসপাতালের চিকিৎসক পরীক্ষা করানোর পরামর্শ না দিলেও এসব দালাল রোগীকে ভুল বুঝিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শাহিনা বেগম জানান, সকালে ১০ বছর বয়সী বোনের মেয়েকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করেছেন। সকালে ডাক্তার দুটি পরীক্ষা দিয়েছেন। একটি ২০ টাকা দিয়ে হাসপাতালে করিয়েছেন। অপরটি হাসপাতালে হয় না বলে তাদের এক লোক শহরের রয়েল ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে করিয়ে দিয়েছে। নিয়েছে ১১০০ টাকা। হাসপাতালে আসা একজন রোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, বুকে ব্যথা নিয়ে রাত আড়াইটার দিকে এক আত্মীয় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন কয়েক দিন আগে। জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক রোগীর ইসিজি করতে বলেন। পরে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত একজন কর্মচারী হাসপাতালের বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ইসিজির জন্য নিয়ে যান। রোগী সুস্থ হওয়ার পর জানতে পারেন হাসপাতালে ইসিজি মেশিন আছে ও নিয়মিত ইসিজিও করা হয়। ভোলা ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু সুফিয়ান রুস্তম অবশ্য বলেছেন, হাসপাতালে দালাল বন্ধে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য বলা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, ২৫০ শয্যার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চার মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে অপারেশন থিয়েটার। অ্যানেস্থেসিয়া কনসালটেন্টের বদলি হওয়ায় এ অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। হাসপাতালে এসে অপারেশন করতে না পেরে অতিরিক্ত খরচে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ছুটছে রোগীরা। গত ১১ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেস্থেসিয়া) ডা. নুরুন্নাহার খানম নদী বদলি হয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চলে যান। এরপর থেকে পদটি শূন্য হয়ে পড়ে। হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সিনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেস্থেসিয়া) পদটিও শূন্য রয়েছে। হাসপাতালে বহির্বিভাগে দিনে গড়ে এক হাজার ২০০ রোগী, আন্তবিভাগে ৩০০ রোগী ও জরুরি বিভাগে ২০০ রোগী চিকিৎসা নেন। চিকিৎসক, নার্সসহ দায়িত্বরতদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয় প্রতিদিন। চুয়াডাঙ্গা সদরের তিতুদহ গ্রামের শরীফুল ইসলাম জানান, তাঁর নিজের একটি অপারেশনের জন্য তিন দিন ধরে ঘুরছেন। কিন্তু অপারেশন হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক দিয়েই বাইরের ক্লিনিকে অপারেশন করাতে হয়েছে। তাঁকে ক্লিনিকে নিতে দালালরাও তৎপর ছিল।
ময়মনসিংহ থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী বেশি হওয়ায় প্রতিদিন দালালরা সেখানে গিয়ে রোগী বাগানোর চেষ্টা করে। হাসপাতালে ময়মনসিংহ ছাড়াও রোগীরা বৃহত্তর মযমনসিংহের বিভিন্ন জেলা, কুড়িগ্রামের রৌমারী, সুনামগঞ্জ ও গাজীপুর জেলারও একাংশ থেকে হাজার শয্যার হাসপাতালে দিনে গড়ে রোগী ভর্তি থাকে পৌন চার হাজার। আর আউটডোরে রোগী আসে চার থেকে পাঁচ হাজার। এদের সঙ্গে থাকে গড়ে কমপক্ষে দুজন করে স্বজন। সব মিলিয়ে পরিবেশ খুবই জটিল। গতকাল হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, জরুরি বিভাগ, সার্জারি, শিশু, হৃদরোগ, মেডিসিনসহ প্রায় সব বিভাগের ওয়ার্ডগুলোতেই রোগী ঠাসাঠাসি করে আছে। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মাঈন উদ্দিন বলেন, গতকালও (বৃহস্পতিবার) এক হাজার শয্যার এ হাসপাতালের ইনডোরে রোগী ভর্তি ছিল তিন হাজার ৭০০-এর মতো। আউটডোরে চিকিৎসা নিয়েছে আরো চার-পাঁচ হাজার।
জামালপুর প্রতিনিধি জানান, জামালপুরের মেলান্দহে ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রবেশপথেই চিকিৎসকের মতো দালালরা রোগীদের এক্স-রে ফিল্ম দেখে, জরুরি বিভাগে গিয়ে রোগীর রক্তচাপ পরিমাপ করে। তারা মূলত রোগীদের বিভ্রান্ত করে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ২৫ জন দালাল আছে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন ফরিদুল ইসলাম বলেন, সকাল ১০টায় ডাক্তার দেখাতে গিয়ে দুপুর ১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। দালালদের কারণে ডাক্তারের দেখাও পাইনি। তাই ফিরে এসেছি। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, কোনো দালালের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।
মাদারীপুর থেকে আঞ্চলিক প্রতিনিধি জানান, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দরিদ্র রোগীরা সেবা নিতে এসে দালালদের খপ্পরে পড়ছে। ফলে তারা পাশের ক্লিনিকগুলোয় অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছে। দুর্গাবর্দী থেকে আসা এক বৃদ্ধ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হাসপাতালের ডাক্তার আমার নাতনিকে বলেছিলেন ক্লিনিক থেকে ভাঙা পায়ের এক্স-রে করে আনতে। তাহলে তিনি রোগী দেখবেন। বাইরে থেকে এক্স-রে করে হাসপাতালে এসে দেখি ডাক্তার নেই। রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. শামীম আক্তার বলেন, শুক্রবার ও শনিবার আমি ঢাকায় থাকি, পরিবারকে সময় দিতে হয়। তার পরও দেখভাল করছি। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।
সম্পর্কিত খবর

রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা


কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত
- চার জেলায় ৪ লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। এ ছাড়া বাগেরহাটে যুবদল নেতাকে হত্যার অভিযোগসহ পাঁচ জেলায় পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ভূন্দুর চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন আনোয়ার হোসেনের ছেলে নুরুল আমিন (৪০), গোলাম শহিদের ছেলে বলু মিয়া (৫৫) ও ফুলবাবু (৫০)। তাঁরা সবাই জমি নিয়ে বিরোধে থাকা শাহাজাহান মিয়ার পক্ষের লোক বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহুদিন ধরে ওই এলাকার শাহাজাহান মিয়া ও রাজু মিয়ার মধ্যে ৫০ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।
রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের অন্য কয়েকটি জেলায়ও পৃথক ঘটনায় আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
বাগেরহাটে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধরে সোহাগ সরদার (২৭) নামের যুবদলের এক নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিয়ের মাত্র ছয় দিনের মাথায় এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রূপা (১৮) তাঁর স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামী দাবি করেছেন, রূপা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে।
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানকিদাহ এলাকায় নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে টাঙ্গন নদী থেকে। মৃত ব্যক্তি হলেন দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম।

বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উড্ডয়নের পরপরই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইট বিজি ১৪৮ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করেছিল। এটি ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বিমানটি বিমানবন্দরের বে নম্বর-৮-এ অবস্থান করছে। ফ্লাইটের সব যাত্রীর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অন্য একটি ফ্লাইট বিজি ১২২-এ অনবোর্ড সম্পন্ন হয়। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
বিমান কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুবাই থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, বিমানের ত্রুটি সারানোর কাজ চলছে। যাত্রীরা নিরাপদে আছেন।

রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাশিয়ায় ৫০ আরোহী নিয়ে একটি অ্যান-২৪ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রাথমিক খবরে জানানো হয়েছে, কেউই বেঁচে নেই। সিভিল ডিফেন্স, জরুরি ও দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছে, অ্যান-২৪ বিমানটি পরিচালনা করছিল সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারা। প্রথমে বিমানটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।
ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি বলেছে, চীনের কাছাকাছি আমুর অঞ্চলে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।
বার্তা সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, আশপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মতো দৃষ্টিসীমা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসে। এ কারণে বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করে থাকতে পারেন ক্রু।
স্থানীয় জরুরিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানটি গন্তব্যের কাছাকাছি থাকাকালে হঠাৎ করে রাডারের বাইরে চলে যায়। গভর্নর অরলোভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে বিমানে ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন।
উড়োজাহাজটিতে পাঁচ শিশুসহ ৪৩ যাত্রী ও ছয় ক্রু ছিলেন বলে আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলভ আগেই জানিয়েছিলেন। যেখানে উড়োজাহাজটি ‘রাডার থেকে হারিয়ে যায়’, সেটি রাশিয়ার তাইগা বনভূমি অঞ্চলে পড়েছে।
১৯৫০-এর দশকে নির্মিত আন্তোনভ আন-২৪ উড়োজাহাজ সাধারণত যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। এখন পর্যন্ত এই মডেলের হাজারের বেশি উড়োজাহাজ তৈরি হয়েছে। রাশিয়ায় এখন সীমিত পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে এ ধরনের উড়োজাহাজ ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছে আরটি।
সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অবতরণের সময় পাইলটের ভুল এবং খারাপ দৃশ্যমানতা এই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। সূত্র : রয়টার্স