সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে কয়েক দশক আগেও জমজমাট থাকত বেইলি রোড। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। কবেই সরে গেছে সাংস্কৃতিক ব্যস্ততা। এর পরিবর্তে বেইলি রোড হয়ে উঠেছে নানা ফ্যাশন হাউসের জমজমাট বিকিকিনির স্থান।
ইফতার
রসনার টানে বেইলি রোডে
নওশাদ জামিল

রমজান মাসজুড়ে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাহারি ইফতারসামগ্রীর খোঁজে ঢাকার মানুষ ছুটে আসে বেইলি রোডে। দোকানিরাও ক্রেতার পছন্দের খাবারটির জোগান দিতে কার্পণ্য করেন না।
রমজানের প্রথম জুমা ছিল গতকাল শুক্রবার। একই সঙ্গে ছিল সাপ্তাহিক ছুটির দিন।
দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেইলি রোডের ইফতারির বাজারের প্রধান আকর্ষণ নতুন নতুন খাবারের আইটেম। চকে যেমন ঐতিহ্যবাহী খাবার বেশি, এখানেও তাই। তবে এখানকার বিশেষত্ব হলো, ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবারের পাশে এখানে আধুনিক ও নিত্যনতুন আইটেমও থাকে। তাঁরা জানান, এখানের খাবারে ঝাল কম থাকে। মসলাও কম থাকে। প্রাচ্যের খাবারের সঙ্গে পশ্চিমা খাবারও সুলভ। ফলে অভিজাতপাড়ার মানুষই এখানে আসে বেশি।
গতকাল বিকেলে ইফতারি কিনতে আসা মৌচাকের গৃহিণী শামসুন নাহার বেলি বলেন, 'এখানে দোকানপাটের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। খাবারের মানও স্বাস্থ্যসম্মত। পাশাপাশি নানা আইটেম পাওয়া যায়।' বেইলি রোডে ইফতারির সবচেয়ে বড় পসরা সাজায় ক্যাপিটাল কনফেকশনারি। শতাধিক পদ থাকে তাদের ইফতারির তালিকায়।
ক্যাপিটালের মাংসের পদের মধ্যে আছে গরুর চপ, খাসির চপ, মগজ, খাসির আস্ত রানের রোস্ট, মুরগির রোস্ট, ফ্রাই, দোপেঁয়াজা, সুতি কাবাব, শিক কাবাব, টিক্কা, জালি কাবাব, রেশমি কাবাব ইত্যাদি। হালিম ২০০ থেকে ৭০০ টাকা বাটি, জিলাপি ২০০ টাকা কেজি, টানা পরোটা ২০ টাকা, পনির পরোটা ৬০ টাকা, তেহারি ১০০ টাকা, খাসির কাচ্চি ১৫০ টাকা এবং মাছের কাচ্চি ২০০ টাকা প্রতি প্লেট।
ফখরুদ্দিনের দোকানে এবারও ভিড় বেশি। এখানে খাসির হালিম থেকে বাসমতির জর্দা পর্যন্ত ৩৮টি পদ পাওয়া যাচ্ছে। এসবের মধ্যে কদর রয়েছে কাচ্চি বিরিয়ানি, তেহারি, খাসির চপ ও হালিম।
এখানে দেশি খাবার ছাড়াও পশ্চিমা ঘরানার খাবারের সম্ভার রয়েছে সুইস, স্কাইলার্ক, সসেজ, হ্যালভেশিয়া, গোল্ডেন ফুড ইত্যাদি দোকানে। তাদের ইফতারির তালিকায় রয়েছে বার্গার, পিৎজা, স্যান্ডউইচ, চিকেন ফ্রাই, চিকেন ললি, ফালুদা, ফিরনি, কাস্টার্ড ইত্যাদি।
বেইলি রোডে ইফতারির অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে রয়েছে- নিমকি, সমুচা, দই বুন্দিয়া, সবজি রোল, ব্যানানা রোল, চিকেন কাটলেট, চিকেন স্টিক, নিমকপাড়া, কচুরি, পিটি, দইবড়া, ছোলা ভুনা, ঘুগনি ভুনা, পিঁয়াজি, আলুর চপ, ফুলুরি, তেহারি, মুরগি টিক্কা, বড় মাছের কোপতা, গরুর চপ, মালাইকাপ, ফিরনি, মিষ্টি শিঙাড়া, বুন্দিয়া, মোগলাই পরোটা, কিমা পরোটা, টানা পরোটা, প্লেইন পরোটা, ঘোল, মাঠা, বোরহানি, বাখরখানি, লাবাং, চাটনি, খাজা, মালপোয়া, শাহি কাবাব, শিক কাবাব, বটি কাবাব, মুঠি কাবাব, তন্দুর, নান, বেগুনি ইত্যাদি।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমল
অনলাইন ডেস্ক

দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গতকাল বৃহস্পতিবার দিন শেষে ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
এর আগে গত ৩০ জুন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত ৮ জুলাই এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নকে (আকু) মে ও জুন মাসের আমদানি বাবদ বকেয়া বিল ২০১ কোটি ডলার পরিশোধ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রবাসীরা বৈধ পথে আয় পাঠানো বাড়িয়েছেন। বিদায়ি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে ৩০ বিলিয়ন ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে, যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ২৬ শতাংশ বেশি।
বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান দুই উৎস—প্রবাসী আয় ও পণ্য রপ্তানিতে ইতিবাচক ধারা বজায় থাকার কারণে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে স্বস্তি ফিরেছে। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ সরে এসেছে। ১০ মাস ধরেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে না। এর মধ্যে দেশের ব্যাংক ও রাজস্ব খাত সংস্কার, বাজেট সহায়তা ও ঋণ হিসেবে কয়েক বিলিয়ন ডলারের ঋণ দেশে আসছে।
এদিকে দেশে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি এবং তার বিপরীতে আমদানি কম থাকায় ডলারের চাহিদা কমেছে। সে কারণে টাকার তুলনায় মার্কিন ডলারের দাম কমতে শুরু করেছিল। এই পরিস্থিতিতে চলতি মাসে ডলারের দাম ধরে রাখতে নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কারাগারের ভিআইপি ওয়ার্ড পরিদর্শন নিয়ে ধর্ম উপদেষ্টার বিবৃতি
অনলাইন ডেস্ক

সম্প্রতি চট্টগ্রাম কারাগার পরিদর্শনের একটি ছবি নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, সফরটি ছিল পুরোপুরি সরকারি এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশে আয়োজিত। এখানে কোনো ধরনের গোপনীয়তা বা লুকোচুরি ছিল না।
আজ শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক অ্যাকাউন্টের এক পোস্টে এসব কথা বলেন তিনি।
ধর্ম উপদেষ্টা লেখেন, ‘সম্প্রতি আমি চট্টগ্রাম কারাগার পরিদর্শন করি, যেখানে আমার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ডিআইজি প্রিজন ও ডেপুটি জেলার। এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ, ধর্মীয় বই পুস্তক এবং নামাজের স্থান নির্ধারণের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ধর্মীয় শিক্ষার প্রচার এবং নৈতিকতা ও মূল্যবোধের শিক্ষাদান করা হতো, যা বন্দি সমাজের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ।’
ফেসবুক পোস্টে তিনি আরো লেখেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে দেশের ৭০ হাজার বন্দিকে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার আওতায় আনার, যা একটি বৃহৎ মানবিক পদক্ষেপ হিসেবে সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ছবি তোলা প্রসঙ্গে তিনি জানান, পরিদর্শনকালে আমার সঙ্গে কোনো ক্যামেরা ছিল না। তবে কারা কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা কিছু ছবি তুলেছিলেন, যা পরবর্তীতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাইরে পাচার করা হয়েছে।
সফরের উদ্যোগ নিয়ে তিনি আরো জানান, এই সফরটি ছিল সম্পূর্ণ সরকারি এবং মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশে আয়োজিত। পরিদর্শন বিষয়টি সংশ্লিষ্ট আইজি প্রিজন, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের অফিসিয়ালি জানানো হয়েছিল। এখানে কোনো ধরনের গোপনীয়তা বা লুকোচুরি ছিল না।
তিনি লেখেন, ‘সফরের সময় আমি ভিআইপি ওয়ার্ডে মাত্র দুই বা তিন মিনিট ছিলাম এবং সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তারা আমার সঙ্গী ছিলেন। তবুও এই সংক্ষিপ্ত সময়ে উপস্থিতি থেকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিকৃত তথ্য রটানো হচ্ছে, যা মূলত একটি কায়েমি সিন্ডিকেটের ষড়যন্ত্রের অংশ।’
তিনি জানান, এই প্রচারণা মূলত পরাজিত শক্তির অব্যাহত ষড়যন্ত্রের ফলস্বরূপ। যারা রাজনৈতিকভাবে পরাজিত, তাদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ আসছে, যা সরকারের শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং সমৃদ্ধি অর্জনের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য নিয়ে করা হচ্ছে। তাদের এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সরকার এবং জনগণের ঐক্যবদ্ধতাকে ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে, কিন্তু তারা এতে সফল হবে না। আমাদের প্রচেষ্টা, সবসময় দেশের কল্যাণ, ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা এবং সত্যের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তিনি লেখেন, ‘আমি বিনম্রভাবে বলতে চাই, এসব অপপ্রচার অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অগ্রহণযোগ্য। এর পেছনে থাকা পরাজিত শক্তির উদ্দেশ্য হলো, সরকার এবং জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা। কিন্তু আমরা জানি, সত্যের বিজয় অনিবার্য। আমরা আমাদের গঠনমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাব এবং কোনো ভুল-বোঝাবুঝির সুযোগ দেব না।’

মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত : দগ্ধ মাকিনের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর দিয়াবাড়ীতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন মাকিনের (১৪) মৃত্যু হয়েছে। সে মাইলস্টোনের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুর ১টা ৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এখন পর্যন্ত ১৫ জন মারা গেল।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান।
নিহত মাকিন ৭০ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিল।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন জানান, চিকিৎসাধীন ৪২ জনের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

গাজা পরিস্থিতি নিয়ে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার ফোনালাপ
অনলাইন ডেস্ক

গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় ও ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রসঙ্গে ফোনালাপ করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। আলোচনায় দুই পক্ষই গাজায় গণহত্যা বন্ধে জরুরি আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ইরানি সংবাদ সংস্থা মেহেরের বরাত দিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার এই ফোনালাপে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা ইস্যু ছাড়াও বাংলাদেশ-ইরান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়। গাজা পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে ইসলামী দেশগুলোর একজোট হয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন উভয় নেতা।
আলোচনার সময় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলা ও ফিলিস্তিনিদের খাদ্য ও পানির মতো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ‘পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা দখলদার সরকারের ফিলিস্তিনকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্রের অংশ।’
তিনি গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানো এবং ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)সহ আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মগুলোকে সক্রিয় করার আহ্বান জানান। তার মতে, এই সংকটে ইসলামী বিশ্বের আরও সুসমন্বিত ও সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনও ইসরাইলি হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে ওআইসি’র মাধ্যমে জরুরি ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যাবশ্যক।’
ফোনালাপে বাংলাদেশ ও ইরানের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করার দিকেও গুরুত্বারোপ করা হয়। উভয় দেশ ভবিষ্যতেও পরামর্শ ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেছে।