ঢাকা, বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫
৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৭ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫
৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৭ মহররম ১৪৪৭

বাজেটে গরিবের বরাদ্দ কমেছে

এম আর মাসফি
এম আর মাসফি
শেয়ার
বাজেটে গরিবের বরাদ্দ কমেছে

দেশে যখন জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে, কর্মসংস্থানের সুযোগ কমছে, তখন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে গরিবদের জন্য বরাদ্দ কমানো হয়েছে। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়ন বিশ্লেষকরা।

বাজেটে দারিদ্র্য বিমোচন সংক্রান্ত খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে চার লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ১২ হাজার ৯৯৪ কোটি টাকা কম। আগের অর্থবছরে এই খাতে বরাদ্দ ছিল চার লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা।

গত বছর বাজেটের ৫৭.৯ শতাংশ ব্যয় দারিদ্র্য হ্রাস করার কথা ছিল। এবার তা নেমে এসেছে ৫৬.৭৭ শতাংশে। অর্থাৎ দুই বছরের ব্যবধানে বাজেটের দারিদ্র্য নিরসন সংক্রান্ত বরাদ্দ প্রায় ৩.৯ শতাংশ কমেছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, মূল্যস্ফীতি, কর্মসংস্থানের ঘাটতি ও বিনিয়োগহীনতার এই সময়ে গরিবদের জন্য বরাদ্দ কমানো অযৌক্তিক

বরং সরাসরি সহায়তা বাড়ানো দরকার ছিল।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মোস্তফা কে মুজেরি বলেন, এই বাজেট হতাশাজনক। বরাদ্দ কমানোর সিদ্ধান্ত দরিদ্র মানুষের জীবনে আরো চাপ তৈরি করবে। তিনি নগদ সহায়তা এবং কম দামে খাদ্য সরবরাহ বাড়ানোর তাগিদ দেন।

প্রস্তাবিত বাজেটে তিন লাখ এক হাজার কোটি টাকা (৩৮.১০ শতাংশ) ব্যয় করা হবে সরাসরি দারিদ্র্য হ্রাসে। আর এক লাখ ৪৭ হাজার কোটি টাকা (১৮.৬৬ শতাংশ) খরচ হবে সেসব খাতে, যেগুলো পরোক্ষভাবে গরিবদের উপকারে আসবে।

অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, পাঁচ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকার পরিচালন ব্যয়ের মধ্যে ৫৩.০৬ শতাংশ দারিদ্র্য হ্রাসে ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। উন্নয়ন বাজেটের ৬৬.৪৬ শতাংশও ব্যয় হবে দরিদ্রবান্ধব খাতে।

বরাদ্দের তথ্য বাস্তবতার সঙ্গে মিলছে না

প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ৯৮ শতাংশ বরাদ্দ দারিদ্র্য নিরসনে ব্যয় করা হবে।

এরপর রয়েছে সেতু বিভাগ (৯৪%), পরিসংখ্যান বিভাগ (৯০%), দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা (৮৮%), রেলপথ (৮৭%) ও প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় (৮৭%)।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, মহাহিসাব নিরীক্ষক কার্যালয় বা জাতীয় সংসদের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে দারিদ্র্য নিরসনে কোনো বরাদ্দ নেই বা একেবারেই নগণ্য। সংসদের জন্য এই খাতে বরাদ্দ মাত্র ০.২৫ শতাংশ।

বিতর্ক রয়েছে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের বরাদ্দ নিয়েও। এ বিভাগে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪৬৭ কোটি টাকা। বাজেটে দাবি করা হয়েছে, এর ৯০.৪৪ শতাংশ দারিদ্র্য হ্রাসে ব্যয় হবে। কিন্তু বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, এর বড় অংশই খরচ হচ্ছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, প্রশাসনিক খরচ, প্রশিক্ষণ ও যন্ত্রপাতি কেনায়। কেবল বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ ১৬২ কোটি টাকা, যা পুরো বাজেটের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি।

এই বিভাগের কার্যপরিধিতে সরাসরি দারিদ্র্য হ্রাস নেই। বরং তারা সরকারের জন্য তথ্য সরবরাহ করে, যাতে কৌশল নির্ধারণে সহায়তা করা যায়। কিন্তু ২০২২ সালের পর থেকে বিবিএস নতুন করে দারিদ্র্য হারের তথ্য প্রকাশ করেনি। এতে দারিদ্র্য পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমেই ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

অবকাঠামো উন্নয়নকে দারিদ্র্য নিরসনের খাতে দেখানোর প্রশ্ন

বাজেটে সেতু বিভাগের ছয় হাজার ২২ কোটি টাকার মধ্যে ৯৪ শতাংশ অর্থ দারিদ্র্য হ্রাসে ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে, সেতু নির্মাণে কর্মসংস্থান তৈরি হয়, যা দরিদ্রদের জন্য সুফল বয়ে আনে। উদাহরণ হিসেবে পদ্মা সেতুর মাধ্যমে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১.২৩ শতাংশ বাড়বে এবং দারিদ্র্য ০.৮৪ শতাংশ হারে কমবেএমন দাবি করা হয়েছে।

তবে বাস্তবতা ভিন্ন। বিশ্লেষকদের মতে, পদ্মা সেতু বা কর্ণফুলী টানেলের সুবিধা মূলত উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ভোগে এসেছে। গরিব মানুষের এ ধরনের অবকাঠামো থেকে প্রত্যক্ষ সুবিধা সীমিত।

এমনই আরেক প্রশ্ন উঠেছে রেল, সড়ক ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের শ্রেণিবিন্যাস নিয়ে। রেল মন্ত্রণালয় যেখানে বরাদ্দের ৮৭.৬৬ শতাংশ দারিদ্র্য হ্রাসে দেখাচ্ছে, সেখানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে এ হার মাত্র ৪৩.৬ শতাংশ। বিশ্লেষকদের মতে, এতে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে।

সব মিলিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দারিদ্র্য বিমোচনের নামে বরাদ্দের যেসব হিসাব বাজেট ডকুমেন্টে দেওয়া হয়েছে, তার বাস্তব প্রতিফলন কম। ফলে সরকারের দারিদ্র্য হ্রাসের অঙ্গীকার প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান বলেন, যেসব খাতে দারিদ্র্য নিরসনের বরাদ্দ দেখানো হয়েছে, সেগুলোর অনেকটাই খাপছাড়া। বাজেটে বরাদ্দের চেয়ে বরং দরকার সঠিক বাস্তবায়ন এবং গরিবদের হাতে সরাসরি সহায়তা পৌঁছানো।

ড. সেলিম রায়হানের মতে, অর্থনীতি বড় হয়েছে ঠিকই, কিন্তু গরিব মানুষের আয় বাড়েনি। বাজেটের টাকা সঠিকভাবে খরচ না হলে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি মিলবে না।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বান্দরবানে সারজিস অবাঞ্ছিত ও এনসিপির কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান ও রাঙামাটি প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান ও রাঙামাটি প্রতিনিধি
শেয়ার
বান্দরবানে সারজিস অবাঞ্ছিত ও এনসিপির কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা

পার্বত্য বান্দরবানের প্রতি অবমাননাকর মন্তব্য করায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে জেলার ছাত্রসমাজ। একই সঙ্গে বান্দরবানে এনসিপির সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা এসেছে ছাত্রনেতাদের পক্ষ থেকে।

গতকাল রবিবার দুপুরে বান্দরবান প্রেস ক্লাবে ছাত্রসমাজের ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় ছাত্রনেতারা বলেন, গত ৩ জুলাই পঞ্চগড়ে এনসিপির জুলাই পদযাত্রার এক সমাবেশে বান্দরবানকে শাস্তিস্বরূপ চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বদলির জায়গা বলে মন্তব্য করেন সারজিস আলম।

এই বক্তব্যকে তাঁরা চরম অবমাননাকর ও জাতিগত বৈষম্যপূর্ণ বলে আখ্যা দেন।

ছাত্রনেতারা জানান, ওই মন্তব্যের পর তাঁরা এনসিপির স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সারজিস আলমকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার অনুরোধ করেন। তাঁরা আশ্বাসও পান, ১৯ জুলাই বান্দরবানের পদযাত্রা কর্মসূচিতে সারজিস আলম ক্ষমা চাইবেন। কিন্তু ওই কর্মসূচিতে তিনি উপস্থিত ছিলেন না এবং এনসিপির কেন্দ্রীয় কোনো নেতা বিষয়টি নিয়ে মুখও খোলেননি।

বান্দরবান ছাত্রসমাজের নেতা আসিফ ইসলাম বলেন, সারজিস আলম ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত বান্দরবানে তাঁর উপস্থিতি এবং এনসিপির সব কার্যক্রম অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি। পার্বত্যাঞ্চলকে শাস্তির জায়গা বলা মানে আমাদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের সভাপতি আসিফ ইকবাল, সহসভাপতি মাহির ইফতেখার, আমিনুল ইসলাম, খালিদ বিন নজরুল, হাবিব আল মাহমুদ প্রমুখ।

রাঙামাটিতে এনসিপির পদযাত্রায় পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগ

এদিকে গতকাল শনিবার রাঙামাটি শহরে এনসিপির পদযাত্রা ও সমাবেশ ঘিরে নেওয়া নিরাপত্তাব্যবস্থায় শহরের একমাত্র গণপরিবহন অটোরিকশা চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এতে উচ্চ মাধ্যমিক, অনার্স ও পাস কোর্সের শত শত পরীক্ষার্থী চরম দুর্ভোগে পড়েন। পরীক্ষার কেন্দ্রে পৌঁছতে অনেককেই রোদে হেঁটে যেতে দেখা যায়।

রাঙামাটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবু সাইয়েদ আহমেদ বলেন, গাড়ি বন্ধ থাকায় সকালে প্রশ্নপত্র আনতেও সমস্যায় পড়ি। ৮৩৪ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা ছিল, অনেকে কেন্দ্রে পৌঁছতে দেরি করে।

এনসিপির পদযাত্রা দুপুরে শিল্পকলা একাডেমি থেকে শুরু হয়ে বনরূপা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

পদযাত্রার পর অনুষ্ঠিত সমাবেশে এনসিপির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে গঠিত ১৯৭২ সালের সংবিধান বিভেদের সৃষ্টি করেছে। আমরা চাই সব জাতিগোষ্ঠীর অধিকার সমুন্নত রেখে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান রচনা করতে।

সমাবেশে এনসিপি নেতা সারজিস আলম বলেন, আমরা যদি ভুল করি, সেটা সংশোধন করব। তবে কথার প্রতিবাদে সহিংসতা কিংবা ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ হতে পারে না।

তবে সমাবেশের কারণে পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগের ঘটনায় ছাত্রদল ও সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে। ছাত্রদলের জেলা সভাপতি ফারুক আহমেদ সাব্বির বলেন, একটা রাজনৈতিক দল কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন হলে পরীক্ষার দিন রাস্তায় সমাবেশ করে।

ফেসবুক পোস্টে দুঃখ প্রকাশ সারজিসের

সমালোচনার মুখে গতকাল দুপুরে নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন সারজিস আলম। তিনি লেখেন, সংগ্রাম, সৌন্দর্য ও সৌহার্দ্যের রাঙামাটি থেকে...

আমরা লড়াই করব সকল জাতিগোষ্ঠীর অধিকার ও মানবিক মর্যাদা নিয়ে; জুলাই পদযাত্রা থেকে এটাই আমাদের অঙ্গীকার।

বান্দরবান নিয়ে কিছুদিন আগে একটি বক্তব্যে যে অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দচয়ন হয়েছে, সেটার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

মন্তব্য
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস

এ বছর তিনটি যৌথ সামরিক মহড়া চালাবে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র

কূটনৈতিক প্রতিবেদক
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
শেয়ার
এ বছর তিনটি যৌথ সামরিক মহড়া চালাবে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র এ বছর বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে তিনটি সামরিক মহড়া চালাবে এবং নতুন দক্ষতা সংযোজনের মাধ্যমে তাদের দীর্ঘদিনের অংশীদারি বজায় রাখবে। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস গতকাল রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায়।

যৌথ সামরিক মহড়া ও নতুন দক্ষতা সংযোজন প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বলেছে, এগুলো আমাদের অভিন্ন নিরাপত্তা লক্ষ্যকে আরো দৃঢ় করবে। এই প্রচেষ্টাগুলো যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ এবং এই অঞ্চলকে আরো শক্তিশালী ও নিরাপদ করে তোলে।

টাইগার লাইটনিং মহড়া : টানা চতুর্থ বছরের মতো বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী প্যাসিফিক টাইগার লাইটনিং মহড়া পরিচালনা করবে। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, বাস্তবধর্মী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমাদের সৈনিকরা সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান, শান্তিরক্ষা, জঙ্গলে অভিযান, আহতদের চিকিৎসার জন্য দ্রুত সরিয়ে নেওয়া এবং তাৎক্ষণিক বিস্ফোরক ডিভাইস (আইইডি) প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুতি অর্জন করবে।

টাইগার শার্ক ২০২৫ মহড়া : যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, টাইগার শার্ক (ফ্লাশ বেঙ্গল সিরিজের অংশ) একটি যৌথ প্রশিক্ষণ মহড়া যেখানে আমাদের দুই দেশের বিশেষ বাহিনী যুদ্ধকৌশল অনুশীলন করে। ২০০৯ সাল থেকে চলমান এই মহড়ায় প্যাট্রল বোট পরিচালনা এবং স্বল্পপাল্লার অস্ত্রের লক্ষ্যভেদে দক্ষতা অর্জনের অনুশীলন অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা বাংলাদেশ স্পেশাল ওয়ারফেয়ার ডাইভিং অ্যান্ড স্যালভেজ এবং প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডকে সংকট মোকাবেলায় আরো দক্ষ করে তুলবে।

এই যৌথ মহড়ার বিশেষ আকর্ষণ হলো উভয় দেশের ব্যবহৃত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সরঞ্জাম।

প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল মহড়া : যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশে চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল। এই মহড়ায় আমাদের প্রতিরক্ষা সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, আমাদের সি-১৩০ বহরকে তুলে ধরা হবে। এটি দুর্যোগকালে আকাশপথে সরঞ্জাম সরবরাহ ও চলাচল সংক্রান্ত অভিযানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই মহড়াটি অনুসন্ধান ও উদ্ধার (এসএআর) এবং অ্যারোমেডিক্যাল কার্যক্রমের ওপরও গুরুত্ব দেয়, যা মানবিক বিপর্যয় মোকাবেলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়াবে।

আরকিউ-২১ কর্মসূচি চালু : যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সঙ্গে একত্রে বাংলাদেশের জন্য একটি মানববিহীন আকাশযান ব্যবস্থা (ইউএএস) সক্ষমতা গড়ে তুলছে। বাংলাদেশ সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত একটি রেজিমেন্ট নতুন আরকিউ-২১ ব্ল্যাকজ্যাক সিস্টেম পরিচালনা করবে। এই সম্মিলিত উদ্যোগ বাংলাদেশকে সমুদ্রসীমা পর্যবেক্ষণ, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং শান্তিরক্ষা মিশন পরিচালনায় সক্ষম করে তুলবে।

মন্তব্য
ডাকসু নির্বাচন ২০২৫

তফসিল ২৯ জুলাই ভোট সেপ্টেম্বরে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
শেয়ার
তফসিল ২৯ জুলাই   ভোট সেপ্টেম্বরে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর তফসিল ঘোষণা করা হবে আগামী ২৯ জুলাই। এরপর নির্বাচন সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে। গতকাল রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অংশীজনদের নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় এসব তথ্য জানান ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী, অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা, অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. এস এম শামীম রেজা, সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর, প্রোক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, অনুষদের ডিন, শিক্ষকদের প্রতিনিধি, হল প্রভোস্ট, বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা।

স্বাগত বক্তব্য দেন ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী অংশীজনদের আগের পরামর্শের বাস্তবায়ন সংক্রান্ত একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। সভায় জানানো হয়, নির্বাচনের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে ছয়টি নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে।

কেন্দ্রগুলো হলো১. কার্জন হল কেন্দ্র (পরীক্ষার হল) : ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল, অমর একুশে হল ও ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা এখানে ভোট দেবেন; ২. শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র : জগন্নাথ হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা এখানে ভোট দেবেন; ৩. ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) : রোকেয়া হল, শামসুন নাহার হল ও কবি সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা এখানে ভোট দেবেন; ৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব কেন্দ্র : বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থীরা এখানে ভোট দেবেন; ৫. সিনেট ভবন কেন্দ্র (অ্যালামনাই ফ্লোর, সেমিনারকক্ষ, ডাইনিংরুম) : স্যার এ এফ রহমান হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থীরা এখানে ভোট দেবেন; ৬. উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র : সূর্য সেন হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, কবি জসীমউদ্দীন হল ও শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থীরা এখানে ভোট দেবেন।

সভায় আরো জানানো হয়, ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গত ৬ জুন থেকে এ পর্যন্ত ক্যাম্পাসে আরো ৫০টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত লাইট স্থাপন করা হয়েছে।

প্রোক্টরিয়াল মোবাইল টিমের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা গেটগুলোতে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ক্যাম্পাসের প্রবেশপথে সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।

মন্তব্য

আবারও মালিকদের ধর্মঘটের হুমকি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আবারও মালিকদের  ধর্মঘটের হুমকি

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি পাঁচটি দাবি বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮-এর সংশোধন, বাণিজ্যিক মোটরযানের ইকোনমিক লাইফ ২০ ও ২৫ বছর থেকে বাড়ানোসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে সমিতি। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই দাবিগুলো না মানা হলে পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণাও দিয়েছে তারা। গতকাল দুপুরে সমিতির কার্যালয়ে মালিক ও শ্রমিকদের যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এতে সারা দেশ থেকে পরিবহনের মালিক-শ্রমিক নেতারা যোগদান করে তাঁদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো তুলে ধরে সরকারের প্রতি দাবিগুলো প্রস্তাব করেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মো. কফিল উদ্দিন। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাড. শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনটি একটি প্রতিশোধপরায়ণ, নিপীড়নমূলক এবং ক্ষতিকর।

বিগত সরকারের আইনে বাণিজ্যিক মোটরযানের মধ্যে বাসের ইকোনমিক লাইফ ২০ এবং ট্রাকের লাইফ ২৫ বছর করা হয়েছে। এ আইনটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে পরিবহন সেক্টরে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে। এতে ৭০ ভাগ গাড়ি বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা বর্তমান সরকারের কাছে মৌখিকভাবে দাবি করেছি, কোনে অস্থিরতা তৈরি না করে পরিবহন সেক্টরের মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে বসে এই উদ্ভূত পরিস্থিতির নিরসন না করা হলে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই সেক্টরে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ